রিমান্ড শেষে কারাগারে নিলা : আবারও রিমান্ডে নেয়া হতে পারে

nilaসুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সাত খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি কাউন্সিলর নূর হোসেনের বান্ধবী জান্নাতুল ফেরদৌস নীলাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ৩ দিনের রিমান্ড শেষে আজ সকালে তাকে নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে আদালত এ আদেশ দেন। নীলা নারায়ণগঞ্জ সিটিকর্পোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর। এর আগে জুয়েল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৪ জনের ৩ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুঁড়ি এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মস্তকবিহীন দেহ ও পরে মাথা উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরদিন ২৭ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই জিন্নাহ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খবর পেয়ে নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলার উত্তর মাসুদপুর গ্রামের ফিরোজ খান সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এসে লাশটি তার ছেলে জুয়েলের বলে শনাক্ত করেন।জবানবন্দিতে ২ জন জুয়েল হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে নীলার উল্লেখ করেন। কিন্তু নীলা কাউন্সিলর নূর হোসেনের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ আছে। গত ২৬শে মে জুয়েল নামে এক যুবকে খুনের ঘটনায় নীলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মিজমিজির বাড়ি থেকে গত সোমবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জানা গেছে জিজ্ঞাসাবাদে নীলার মাদকের অন্ধকার জগতের নানা কাহিনী বেড়িয়ে এসেছে।এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য যাচাই বাছাই করে দেখছে। প্রয়োজনে তাকে আবার রিমান্ডে নেয়া হবে জানা গেছে। রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয় এবং আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়।
জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর। তার বাবা হাজি আবদুল মোতালেব আওয়ামী লীগের একটি ওয়ার্ড কমিটির নেতা। নীলাকে নগরবাসী সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে জানলেও তিনি মূলত একজন মাদক সম্রাজ্ঞী। নূর হোসেন ছাড়াও সিদ্ধিরগঞ্জের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রক ছিলেন এই নীলা। মাদক ব্যবসার টাকা লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে নীলার পরিকল্পনায় খুন হয় তারই মাদক ব্যবসার অন্যতম অংশীদার জুয়েল। আর জুয়েল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৪ যুবকের ৩ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
তাদের ২ জন আদালতে জুয়েল হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে কাউন্সিলর নীলার নাম বলে। কিন্তু নীলা নূর হোসেনের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সে সময় জুয়েল হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিতে নীলার নাম উঠে এলেও তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। জানা গেছে, আসামিদের দিয়ে নীলাকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করায় মামলার ওই সময়ের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলামকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ সুপার বদলি করে দেন।