খাজাঞ্চিবাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের বিরুদ্ধে আদালতের যুগান্তকারী রায়
৫ শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে অমানবিকভাবে বিতাড়িত
করার অপচেষ্টাকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছে আদালত
খাজাঞ্চি বাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের ৫ শিক্ষার্থীকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দিয়ে স্কুল থেকে বিতাড়িত করার অপচেষ্টাকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন সিলেটের জন নিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ জেলা জজ আদালত। একই সাথে শিক্ষার্থীদের পুনরায় বিদ্যলয়ে অধ্যয়ন সুযোগ না দেয়াকে অমানবিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত সোমবার বিচারক মো. মঈদুল ইসলাম স্কুল কর্তৃপক্ষের আপীল খারিজ করে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষের ঐ শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও পরীক্ষাদানের সুযোগ দানে কোন বাধা রইলনা। আদালত সূত্র জানায়, গত ১৬ এপ্রিল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাভিদ তাইহান গং এর দায়ের করা মামলায় সিলেটের সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত স্কুল কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত সম্পুর্ণ অবৈধ এবং অমানবিক বলে উল্লেখ করা হয়। একই সাথে অভিভাবকদের অশুভন আচরণের কারণে শিক্ষার্থীদের ট্রান্সফার সার্টিফিকেট ধরিয়ে দেয়া ন্যায় বিচারের পরিপন্থি বলে রায় দেন। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ আদালতের এ নির্দেশনা না মানায় তারা সিলেটের জন নিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ জেলা জজ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেন। ফলে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট ধরিয়ে দেয়া থেকে প্রায় আড়াই মাস ধরে বিদ্যালয়ে ৫ শিক্ষার্থী স্কুল যাওয়া আসা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এ অবস্থায় তাদের শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। অভিভাবকরাও অভিযোগ করেছেন, আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্বেও কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে অংশ নেয়ার সুযোগ দিচ্ছেনা।
গত সোমবার জন নিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ জেলা জজ আদালত নিম্ন আদালতে রায় বহাল রাখায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন এবং ন্যায় বিচার পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেন অভিভাবকরা। বিশেষ জেলা জজ আদালত আপীলের রায়ে উল্লেখ করেন, অভিভাবকদের কথিত অশুভন আচরণের জন্য ছাত্রদের ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেয়ার ক্ষমতা ও এখতিয়ার আছে এর পক্ষে কোন প্রমাণ স্কুল কতৃপক্ষ দেখাতে সক্ষম হননি। অভিভাবকদের প্রতি আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে শিক্ষার্থীদের ট্রান্সফার সার্টিফিকেট ধরিয়ে দেয়া স্কুল কর্তৃপক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে, যা ন্যায় বিচারের পরিপন্থি। এতে এসব ছাত্রদের ছাত্রত্বের অবসান ঘটিয়েছেন বলে প্রতীয়মান হয়। ফলে আদালত নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে স্কুল কর্তৃপক্ষের আপীল খারিজ করে দেন আদালত। একই সাথে নিম্ন আদালতের রায়ের মতে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেয়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, খাজাঞ্চি বাড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কিছু সংখ্যক অভিভাবকদের কথাকাটাকটি হয়। এর জের ধরে ৭ জন শিক্ষার্থীকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের সরনাপন্ন হন অভিভাবকরা। তবে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ফিরে যেতে পারেনি। বর্তমান রায়ের ফলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে অধ্যয়নে কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবীরা।