সোহানের খুনিদের রক্ষা করছে সিএ শামসুদ্দিন

প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি

sylhet suhanসিলেটের মদনমোহন কলেজের মেধাবী ছাত্র সোহান ইসলামের খুনীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবিতে এবার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিহতের পরিবার ও এলাকার লোকজন। গতকাল দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেওয়া এক স্মারকলিপিতে তারা এ হস্তক্ষেপ চান। একই সঙ্গে তারা ঘটনার নেপথ্যেকারী হিসেবে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সিএ শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন। বলেছেন, সিএ শেল্টারে খুনিরা আলোচিত এ ঘটনা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে আপ্রান চেষ্টা চালাচ্ছে। অপর এক স্মারকলিপি নিহতের মা সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর শাহানা বেগম সানু এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। নিহত সোহান ইসলাম সিলেট নগরীর খুলিয়াটুলার ৫২/৪ আবাসিক এলাকার শেখ মো. তাজুল ইসলামের ছেলে। সে মদন মোহন কলেজের প্রথম বর্ষের মেধাবী ছাত্র ছিলো। গত ২৬ শে জানুয়ারি এলাকার কামাল, পিচ্ছি শাকিল, টিপু, টাইগার জামাল, আমির, রিপন, গুলজার, রিয়াজ, কসাই কামরুল, তোফায়েল, টিটু সহ কয়েকজন তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করে। এ ঘটনায় মামলা হলে টিপু ও আমির গ্রেপ্তার হয়নি। অন্যরা আদালতে জামিন নিতে আটক হয়। কেউ কেউ জামিন পায়। তবে, এখন দেওয়া হয়নি আলোচিত এ মামলা চার্জশিট। এ নিয়ে নিহত সোহানের পরিবার এলাকাবাসী মামলার ভবিস্যত নিয়ে সন্ধিহান হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় গতকাল তারা প্রধানমন্ত্রী ও সিলেটের প্রশাসক বরাবর দুটি স্মারকলিপি পেশ করেছেন। স্মারকলিপি সাবেক কাউন্সিলর সাহানারা বেগম সানু জানিয়েছেন, কাউন্সিলর থাকার কারনে এলাকায় তার সুনাম রয়েছে। কিন্তু এতে ক্ষেপে যায় গুলজার ও তার বাহিনী। তার পরিবারের ক্ষতি করতে গুলজার বিভিন্ন সময় তার বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়। আর এই লেলিয়ে দেওয়ার কারনে ২৬ শে জানুয়ারি তার ছেলে সোহান ইসলামকে কামাল, পিচ্ছি শাকিল, টিপু, টাইগার জামাল, আমির, রিপন, গুলজার, রিয়াজ, কসাই কামরুল, তোফায়েল, টিটু সহ কয়েকজন তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করে। লামাবাজার ফাড়ির সামনে খুনের ঘটনাটি ঘটলে এবং পুলিশ সেটি পর্যবেক্ষণ করলেও পুলিশ সোহানকে বাচাতে এগিয়ে আসেনি। ঘটনাকালীন সময়ে পাশে থাকা তার স্কুল পড়–য়া মেয়ে স্বর্ণা হাতে পায়ে ধরলেও এগিয়ে আসেনি পুলিশ। সানু জানান, ঘটনার পর সিলেটের কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু একই সঙ্গে প্রতিপক্ষ খুনিচক্র তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা-হামলা ও সাধারন ডায়েরী করে। এর আগে সোহানের পিতা শেখ মো. তাজুল ইসলামকে খুন করার চেষ্টা চালানো হয়। আর খুনের ঘটনার আগে ২৪ জানুয়ারি ওই খুনিচক্র জুম্মার নামাজ থেকে আসার পথে সোহানকে চড় থাপ্পর মারে। এ সময় তার স্বামীর উপরও হামলা চালানো হয়। এ ব্যাপারে থানায় এজাহার নিয়ে গেলে কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান মামলা নেয়নি। উপরন্তু পুলিশ গুলজার চক্রের সাজানো মামলা রেকর্ড করে। আর ২৬ জানুয়ারি সকালে ১৪৩, ৩২৪, ৩২৫, ৩২৬,, ৩০৭, ৩৭৯ ধারায় মামলা রেকর্ড করিয়েই তার ছেলে সোহানকে খুন করে স্মারকলিপিতে দাবি করেন সানু। স্মারকলিপিতে সানু জানান, এ ঘটনার পুর্বে ২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর সোহান হত্যার আসামিরা তার স্বামী তাজুল ইসলামের উপর হামলা করে। এ সময় তাজুলের একটি হাত ভেঙ্গে দেওয়া ছাড়াও পায়ের রগ কেটে দেয়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ ওই আসামিদের নাম উল্লেখ করে চার্জশিট প্রদান করে। ২০১৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১ টার দিকে সন্ত্রাসীরা সানু ও তার পরিবারের লোকজনকে প্রাণে মারা হুমকি দিয়ে বাসার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করে। এ ঘটনায় সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে। ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল ওই সন্ত্রাসীরা তার উপর হামলা চালায় বলে দাবি করেন সানু। এ ঘটনায়ও থানায় মামলা হয়েছে। স্মারকলিপিতে সানু দাবি করেন, এসব ঘটনার পরও আসামিরা পার পেয়ে যায় শুধু মাত্র সিলেট জেলা প্রশাসকের সিএ শামসুদ্দিনের কারনে। শামসুদ্দিন নিজেই খুনিদের শেল্টার দিচ্ছেন বলে দাবি করেন সানু। স্মারকলিপি প্রধানকালে উপস্থিত ছিলেন, নাসির খান, সওদাগর মিয়া, হাজী হিরন মিয়া, নুরুল ইসলাম, সিরাজ আহমদ, শাকিল আহমদ, সাদেক আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম, তাজুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, অজয় ভট্রাচার্য, রফিকুল ইসলাম, মকসুদ আলম, লুবাব আহমদ, রায়হার ইসলাম, সুজন মিয়া, রিপন আহমদ, এমরান ইসলাম প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি