‘চোরের হাতে সিলেট চেম্বারের সভাপতির দায়িত্ব’

‘ইনভেস্টমেন্ট অপারচুনিটি ইন সিলেট রিজিওন’ শীর্ষক সেমিনারে অর্থমন্ত্রী

Invesment Opportunities in Sylhetসুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেটে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ এ বছরেই শুরু হবে জানালেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। সিলেটকে বিনিয়োগবান্ধব করে তুলতে একই সাথে উন্নয়ন হবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় নগরীর একটি অভিজাত হোটেল নির্ভানা ইনএ ‘ইনভেস্টমেন্ট অপারচুনিটি ইন সিলেট রিজিওন’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রস্তাবনার জবাবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আব্দুল মুহিত একথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, রেল ও হাইওয়ের উন্নয়ন আবশ্যক। তবে বিমানবন্দরে কার্গো ইয়ার্ড স্থাপন অবস্থা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষ করে ঢাকা-সিলেট সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন করা উচিত। শেরপুর পর্যন্ত ডাবল লেন আবার কোথাও ৬ লেন করা যেতে পারে। তাছাড়া ১৯২২-৮৩ সাল পর্যন্ত রেলের বাজেট আলাদা হতো। কিন্তু এর পরবর্তী সময়ে রেলের বাজেট ছিল জিরো। এ সরকার রেলের উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সিলেটে বিনিয়োগের অবাদ সুযোগ সুবিধা রয়েছে। ৩৩ শতাংশ জমি খালি পড়ে আছে। ইচ্ছে করলে যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারেন। এতে সরকারের তরফ থেকে সুযোগ সুবিধাও পাবেন। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে মহিলাদের জন্যও বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হবে। এছাড়া সায়েস্তাগঞ্জে কন্টেইনার পাম্প করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী।
সিলেট চেম্বার নিয়ে নিয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী বলেন, চেম্বারের সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন একটি চোরের হাতে। এই চোরের কারণে দুই বার প্রশাসক নিয়োগ করতে হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
এফবিসিআইসি’র সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. ফরাসউদ্দিন।
সেমিনারে বৃহত্তর সিলেটে উন্নয়ন ও বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের কাছে বেশি কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন ব্যবসায়ীরা।
এসব প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে- সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো ইয়ার্ড স্থাপন, রিফ্যুয়েলিং স্টেশনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করণ, চট্রগ্রামের সাথে সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, ব্রডগেজ ট্রেন লাইন স্থাপন, পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন, শুল্কস্টেশনগুলোর সুবিধা বৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শ্রীমঙ্গলে চা নিলাম কেন্দ্র স্থপন, সম্ভাবনাময় আগরশিল্প এবং বেত শিল্পের উন্নয়নে সরকারী উদ্যোগ গ্রহন করা। এছাড়া বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া, এই স্থানে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ইন্ড্রাষ্ট্রি করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
মুল প্রবন্ধে ড. ফরাস উদ্দিন আহমদ সিলেটে বিভিন্ন উন্নয়ন ও সম্ভাবনার প্রধান অন্তরায়গুলো মধ্যে চা নিলাম কেন্দ্র স্থাপন না করা, প্রকল্পবাজদের কবলে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, হাকালুকি, টাঙ্গুয়ারহাওরসহ সিলেটের বিভিন্ন পর্যটন ও উদ্যানগুলো পর্যটন আকর্ষনের দিক থেকে পূণরুজ্জীবিত করা, সিলেটে ক্যাটারিং ইন্সটিটিউট স্থাপন, মৎস শিল্পায়ন, সিরামিক শিল্প, সিলেটের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, রিসোর্টগুলোতে স্বাস্থ্য সেবা, মাধবপুরের সোনালী দানার বালু দিয়ে রফতানিযোগ্য গ্লাস নির্মাণ, রাবার শিল্প, শেরপুর বিশেষ অর্থনৈতক অঞ্চল করা এবং ব্যক্তিখাতে উন্নয়নে প্রনোদনা দেওয়ার দ্রত উদ্যোগ নেওয়া বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
সেমিনারে আলোচকবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, এফবিসিআইসি’র সহ সভাপতি মিসেস মনোয়ারা হাকিম আলী।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পূবালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমদ মজুমদার, রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির, এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী। এছাড়া সিলেটের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।