র্যাব কর্মকর্তার বক্তব্যে হাইকোর্টের উষ্মা
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ নারায়ণগঞ্জ সেভেন মার্ডার ঘটনার তদন্তে গঠিত সরকারি কমিটিসহ বিভিন্ন পক্ষের প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। বিচারপতি মো. রেজাউল হক এবং বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। আগামী ৪ঠা জুন পরবর্তী অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের সময় নির্ধারণ করেছে আদালত। শুনানি চলাকালে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্ণেল জিয়াউল আহসানের একটি বক্তব্যের প্রতি এটর্নি জেনারেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আদালত। আদালত বলেন, র্যাবের এ কর্মকর্তা পত্রিকায় সাক্ষাতকার দিয়ে বলেছেন, নূর হোসেন কলকাতায়, শহীদ চেয়ারম্যান জড়িত কি না দেখছি। হাইকোর্ট বলেন, আমরা বলেছিলাম এ মামলার তদন্তের সঙ্গে যেন কোনভাবে র্যাব জড়িত না হয়। র্যাব কর্মকর্তার বক্তব্য মামলার সাক্ষীর জন্য হুমকীস্বরূপ এবং আদালত অবমাননাকর। এরআগে বুধবার সরকারি তদন্ত কমিটি ছাড়াও জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের পক্ষ থেকে এটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত সরকারি তদন্ত কমিটির সদস্য আইন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মিজানুর রহমান খান এটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের আদেশে আমাদের কমিটি গঠিত হয়েছিল। আমরা অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এখন পর্যন্ত যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তদন্ত পূর্ণাঙ্গ করতে আরো চার সপ্তাহ সময় প্রয়োজন, আমরা তা চেয়েছি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাত জনকে গত ২৭শে এপ্রিল অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে। এরপর র্যাব-১১ এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ছয় কোটি টাকার বিনিময়ে কিলিং মিশনে অংশ নেয়ার অভিযোগ করেন নজরুল ইসলামের শশ্বুর শহীদুল ইসলাম। ৫ই মে বিচারপতি মো. রেজাউল হক এবং বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চে স্বপ্রণোদিত হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে পুরো ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়। হাইকোর্টের নির্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহান আলী মোল্লাকে চেয়ারম্যান করে সাত সদস্যের কমিটি হয়। অন্যদিকে, সেভেন মার্ডারে র্যাবের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠার পর র্যাব-১১ এর সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্ণেল তারিক সাইদ মাহমুদ, মেজর আরিফ ও লে. কমান্ডার রানাকে অবসরে পাঠানো হয়। রোববার তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয় হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ। বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার এবং বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেয়। যদিও এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।