সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে এনডিএ, মোদিই প্রধানমন্ত্রী : জরিপ
সুরমা টাইমস ইন্টারন্যাশনালঃ ভারতে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে বলে একটি বুথ ফেরত জরিপে বলা হয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া পরিচালিত বুথ ফেরত জরিপে দেখা যায়, বিজেপি’র নেতৃত্বে এনডিএ ২৪৯টি এবং কংগ্রেসের নেতৃত্বে সংযুক্ত প্রগগিশীল জোট ১৪৮টি এবং অ্ন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলো ১৪৬টি আসন পাবে।তবে এবার ৬৬ দশমিক ৩৮ ভাগ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এবং ভোট প্রদানের এই হার রেকর্ড বলে জানা গেছে।ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপ পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে যে, নরেন্দ্র মোদির বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ১৬১ থেকে ২৮৩ টি আসন পাবে।এর ফলে সরকার গঠন করার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭২টি আসনের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদিকে আঞ্চলিক দলের উপর নির্ভর করতে হলেও এই সংখ্যা ম্যানেজ করা মোদির জন্য কঠিন হবে বলে মনে হয় না। বুথ ফেরত জরিপের এ ফল বাস্তবে রূপ নিলে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা উস্কে দেয়ার অভিযোগ থাকা নরেন্দ্র মোদিই হচ্ছেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রী। সোমবার শেষ হয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ভারতের জাতীয় নির্বাচন। যার মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হবে আগামী পাঁচ বছর দক্ষিণ এশিয়ার প্রভাবশালী এ দেশ শাসন করবে কারা।
ক্ষমতাসীন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট কি তৃতীয় মেয়াদে, নাকি বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট আবার ফিরবে ভারতের ক্ষমতায়। এ প্রশ্নের উত্তর মিলবে ১৬ মে, ওই দিন নয়া দিল্লি থেকে একযোগে ২৮টি প্রদেশের ৫৪৩টি আসনের ভোটের ফল প্রকাশ হবে। তাতে ঘটবে এতোদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান। তবে এর আগেই শুরু হয়ে যাবে ক্ষমতার পালাবদলে রাজনৈতিক সমীকরণে ফল মেলানোর পর্ব। দেশটির রাজনীতির ‘কিং মেকাররা’কর্মকৌশল নির্ধারণে বসবেন নয়া দিল্লিতে। এবার নির্বাচনে ভোট পড়ার হার বেশি হওয়ার আভাস দিয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম। শুরুর দিকে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদির ‘জনজোয়ার’নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে অনেকের কাছে।
গত ৭ এপ্রিল শুরু হওয়া লোকসভা নির্বাচনে মাসজুড়ে ছিল কংগ্রেস ও বিজেপির শীর্ষ নেতাদের দৌড়ঝাঁপ। শুরুর দিকে মোদি ঢেউ থাকলেও পরবর্তীতে পাল্টাতে থাকে ভোটের চিত্র। এতে ১৬তম এ লোকসভা নির্বাচনে কোনো দলের পক্ষে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ২৭২ আসন পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। সেক্ষেত্রে কোয়ালিশন সরকার গঠনের দিকে এগোতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে। তাতে আঞ্চলিক দলগুলোই হয়ে উঠবে প্রধান দলগুলোর ভরসা। আগামী পাঁচ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা ঠিক করতে শনিবার থেকেই কংগ্রেস-বিজেপি-বহুজন সমাজ পার্টি-বামফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা রাজধানীমুখী হবেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।
সোমবার লোকসভা নির্বাচনের নবম ও শেষ পর্বে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ ও বিহারের ৪১টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। তবে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল উত্তর প্রদেশের বারাণসী, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেসের অজয় রাই ও আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কিজরিওয়াল। বিজেপি নেতা পাওয়ান শর্মা বলেন, ‘বারাণসীতে মোদিজীর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে লোকসভা নির্বাচন শেষে হচ্ছে। আমরা আশাবাদী ভারতের জনগণ আমাদের পক্ষেই রায় দেবে।’
‘ভোট পর্ব শেষ হলেই দলের শীর্ষ নেতারা দিল্লিতে ফিরে আসবেন। দলের শীর্ষ ফোরামের বৈঠকে হবে। সময়সূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে আগামী সাপ্তাহে নেতাদের নয়া দিল্লিতে থাকতে বলা হয়েছে।’
কংগ্রেস মুখপাত্র সঞ্চয় ঝাঁ জানান, ভোটের ফল ঘোষণার পরপরই দলের চেয়ারপারসন ও ভাইস চেয়ারম্যান রাহুল গান্ধী বৈঠকের পর্ব শুরু করবেন। সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য রানাদাশ গুপ্ত বলেন, ‘ভোটের ফলাফল ঘোষণা হলে পলিটব্যুরোর বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে কর্মকৌশল ঠিক করা হবে।’
গত দুটি লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস জিতে পরপর দুই মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা-ইউপিএ। ২০০৯ সালে ১৫তম লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এককভাবে পেয়েছিল ২০১টি আসন। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি পায় ১১২টি আসন। পরে কয়েকটি আঞ্চলিক দলকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন করে সোনিয়া গান্ধীর কংগ্রেস।