আমরা নিজেরাই নিরাপদ নই : শামীম ওসমান
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ নারায়ণগঞ্জ জায়গাটি এখন সবার কাছে আতঙ্কের নাম। সম্প্রতি ওই এলাকায় যে পরিমাণে অপহরণের ঘটনা ঘটছে তা সবধরণের মানুষকে চমকে দিয়েছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণের ঘটনায় দেশবাসী আরো উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে।
এদিকে নজরুল ইসলামের শ্বশুর দাবি করছে তার জামাইকে মারার পেছনে র্যাব দায়ী এবং এজন্যে তারা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছে। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী দাবি করেছে, এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংদ শামীম ওসমানের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
আসলে এসব তথ্যের মধ্যে কোনটি সঠিক। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে বা যারা অভিযোগ করছে তারা এবিষয়ে তাদের মতামতই বা কি। এসব বিষয় নিয়ে বুধবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের কথা বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান ও নিহত নজরুল ইসলামের শ্বশুর সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান বলেন, সম্প্রতি একটি সিডি প্রকাশ হয়েছে। ওই সিডিতে সুফিয়ান নামের একটি ছেলে আছে। সুফিয়ান একজন স্ট্রিট বয় ছিলো। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের মত একটি শিল্পোন্নত জায়গায় সে গত দুইবছর ধরে কি করে সর্বোচ্চ করদাতা হয়েছে। এর সাথে নারায়ণগঞ্জের সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভির সম্পৃক্ততা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমি একজন অসহায় রাজনীতিবিদ। নজরুল মারা যাবার আগে ৫০ বার আমার কাছে এসেছিলো। আমি তাকে বলেছি আমি তোমাকে নিরাপত্তা দিতে পারবোনা। আমি নিজেই নিরাপদে নেই। কারণ ওই সময় রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছিলো সেলিনা হায়াৎ আইভিরা। এর সাথে কয়েকজন দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা ছিলো। শামীম ওসমান মনে করেন, আমার নিজের দলেরও বিশজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আমি তাঁর বিচার পাইনি। আমি মনে করছি, এ অবস্থায় আমি নিজেও নিরাপদ নই।
হত্যাকান্ড রোধ করতে না পারার ব্যাপারে তিনি বলেন, এমপি হিসাবে আমি কিছু করতে পারিনি এটা ঠিক, তবে আমি নিজেই নিরাপদ নই, টাকার কাছে সবকিছুই অসহায়।
নজরুল অপহরণের পর তাঁর শ্বশুর যখন আমার কাছে আসলো তখন আমি র্যাবের এক শীর্ষ কর্মকর্তাকে ফোন করেছি, নারায়ণগঞ্জের এসপিকে জানিয়েছি। আমি আর কি করতে পারি। বাস্তবতা হচ্ছে, এসব করে আমি নজরুলকে বাঁচাতে পারিনি।
অনুষ্ঠানে শহীদুল ইসলাম বলেন, আমার জামাইয়ের খুনের সব আসামিকে কেন ধরা হচ্ছেনা। আমি তো র্যাবকে অপসারণ করতে বলিনি। আমি তাদের বদলির কথাও বলিনি। আগে আসামিদের ধরে আইনের আওতায় আনা হোক।
তাহলেই বেরিয়ে আসবে আসল অপরাধী কে। তারা ৬ কোটি টাকা নিয়েছে নাকি আরো কম বেশি নিয়েছে তা বেড়িয়ে আসবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই। তাছাড়া যেসব ব্যাংক হিসাবে এই টাকা লেনদেন হয়েছে সেখানে খোঁজ খবর নিলেই তা বেড়িয়ে আসবে। সাংবাদিকরা শুধু বার বার আমাকে প্রশ্ন করছে। আমাকে মারার বুদ্ধি করেছে। আমার ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ে বিধবা হয়েছে, আমার নাতি নাতনি এতিম হয়েছে। কিন্তু দেশের কোটি কোটি মানুষ বেঁচে গিয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই যে, তিনি নতুন আইন করেছেন যে, সাদা পোশাকে কেউ আসামি ধরতে যেতে পারবেনা। গাড়িতে কালো গ্লাস থাকবেনা। আমি প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ূ কামনা করি।