আবুল কাশেম হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন : ঘাতক স্বামী-স্ত্রী গ্রেফতার

‘হত্যার পর লাশ ফেলে দেয়া হয় পানির ট্যাংকে’

zahirul-islam-and-rujina-khদক্ষিণ সুরমা প্রতিনিধিঃ ‘পাওনা টাকা চাওয়ার অপরাধে কাঠ ব্যবসায়ী আবুল কাশেমকে হত্যা করে লাশ পানির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়া হয়।’ র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানায় হত্যা মিশনে অংশ নেয়া দম্পতি জহিরুল ইসলাম ও রুজিনা বেগম। সিরাজগঞ্জের কাঠ ব্যাবসায়ী আবুল কাসেম হত্যার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে ছাতক থেকে এই দম্পতিকে আটক করে র‌্যাব-৯। -তাদের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালীতে।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার বৈশাকান্দি গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী-স্ত্রী হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে। শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক মুফতি মাহমুদ খান। র‌্যাব অধিনায়ক জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী থানার চরসলিয়াবাদ গ্রামের মৃত মো. সেকান্দর আলীর ছেলে কাঠ ব্যবসায়ী মো. আবুল কাশেমের সাথে লেনদেন ছিল জহিরুলের। ৬ মাস পূর্বে কাশেমের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ নেয় জহিরুল।
পাওনা টাকা ফেরত দিতে চাপ দিলে জহিরুল গত ২২ এপ্রিল কাশেমকে ফোনে খবর দিয়ে সিলেট নিয়ে আসে। এরপর কাশেমকে আটকে রেখে ফোনে তার পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ২৩ এপ্রিল রাতে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে অজ্ঞান করে কাশেমকে জহিরুল ও তার স্ত্রী খুন করে বাড়ির সেফটি ট্যাংকে ফেলে পালিয়ে যায়।
২৭ এপ্রিল দক্ষিণ সুরমার রায়গ্রামের সমুজ মিয়ার বাড়ির সেফটি ট্যাংক থেকে কাশেমের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রসঙ্গত, জহিরুল ও তার স্ত্রী সমুজ মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটে হিসেবে থাকত। আটককৃতরা র‌্যাবের কাছে জানায়, সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী থানার চরসুলিয়াবাদ গ্রামের মৃত সেকান্দার আলীর পুত্র আবুল কাসেম একজন কাঠ ব্যাবসায়ী। তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ধার নেন তারই পূর্ব পরিচিত একই গ্রামের বর্তমানে দক্ষিন সুরমায় বসবাসকারী জহিরুল ইসলাম। এক লাখ টাকা ফেরত নেয়ার জন্য আবুল কাসেম গত ২১ এপ্রিল সিলেট আসেন। পরদিন ২২ এপ্রিল তার সাথে শেষ কথা হয় পরিবারের। ২৩ এপ্রিল জহিরুল ইসলাম আবুল কাসেমের পরিবারকে ফোন করে জানায়, ‘আবুল কাসেম তাদের কাছে জ্ঞানশুন্য অবস্থায় আছে। ৫০হাজার টাকা মুক্তিপন দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। এরপর তার পরিবার তাকে আর যোগাযোগ করে পায়নি।’ ২৭ এপ্রিল জহিরুল ইসলামের বাসার পানির সেফটি ট্যাংকের ভিতর থেকে আবুল কাসেমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনার পর তৎপর হয়ে উঠে র‌্যাব। গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাতক থেকে জহিরুলকে আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আটক করা হয় তার স্ত্রী রুজিনা বেগমকে। দুজনেই র‌্যাবের কাছে খুনের ঘটনা স্বীকার করে। তারা জানায় খুন করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দক্ষিন সুরমার বাসা ছেড়ে ছাতকে এসে লুকিয়ে থাকে।