জকিগঞ্জের বাবুর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ১৬ দোকান ভস্মিভূত, কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

zakigonj-30.04.2014জকিগঞ্জ প্রতিনিধি: জকিগঞ্জের বাবুর বাজারে মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১৬ টি দোকান পুড়ে ভস্মিভূত হয়েছে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থরা জানান। স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটায় জকিগঞ্জের বাবুর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়েছে। আগুনে ১৬টি দোকান পুড়ে ভস্মিভূত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে প্রায় কোটি টাকা নির্ধারণ করেছেন বাজার ব্যবসায়ী কমিটি। আগুনের লেলিহান শিখায় মাসুক আহমদ, আব্দুল ওয়াহিদ মেম্বার ও জালাল উদ্দিনের ৩টি চাউলের আড়ৎ, ফারুক ভেরাইটিজ স্টোর, জলিল কসমেটিক্স স্টোর, ফজলুর রহমান স্টোর, শহীদ ষ্টেশনারী, হান্নান স্টোর, ইকবাল লাইব্রেরী, আব্দুর রাজ্জাক ভূষিমালের দোকান, ছালেহ আহমদ সাবু হোটেল, কবির ইলেক্ট্রিক, ধনিয়া সু মেকার, ময়নুল ইসলামের ঠেলাসহ বাজারের চাউলের শেড পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান- বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল ভেরাইটিজ স্টোরের বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়। সাথে সাথে খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই প্রায় সবকটি দোকান পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। সরেজমিনে দেখা যায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা সর্বস্ব হারিয়ে চরম নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। ভোর রাত ৪টায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টার পর ভোর ৬টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বাজারের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন- আগুন লাগার সাথে সাথে জকিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত অফিসে বেশ কয়েকবার ফোন দেয়ার পরও কেউ ফোন রিসিভ করেননি। প্রায় এক ঘন্টা পর তারা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করেন। বাবুর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন খান, সেক্রেটারি আব্দুস ছালাম, সহ-সেক্রেটারি মাসুম আহমদ জানান- মাসুক আহমদের চাউলের আড়তের ক্ষতির পরিমাণ ২০ লাখ টাকা, আব্দুল ওয়াহিদ মেম্বারের চাউলের আড়ৎ ৬ লাখ টাকা, জালাল উদ্দিনের চাউলের আড়ৎ ২ লাখ টাকা, ফারুক ভেরাইটিজ ষ্টোর ১০ লাখ টাকা, জলিল কসমেটিকস্ স্টোর ৫ লাখ টাকা, ফজলু স্টোর ৪ লাখ টাকা, শহীদ ষ্টেশনারী ৩ লাখ টাকা, হান্নান স্টোর ৪ লাখ টাকা, ইকবাল লাইব্রেরী ২ লাখ টাকা, আব্দুর রাজ্জাক ভেরাইটিজ স্টোর ৫ লাখ টাকা, ছালেহ আহমদ সাবু হোটেল ২ লাখ টাকা, কবির ইলেক্ট্রিক সাড়ে ৬ লাখ টাকা, ধনিয়া সু মেকার ৫ হাজার টাকা, ময়নুল ইসলামের ঠেলা গাড়ী সহ তিনটি ঠেলা গাড়ী প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আগুন লাগার সংবাদ শুনে সকাল ১১টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার টিটন খীসা, জকিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমদ, সুলতানপুর ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বাইস, উপজেলা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বদরুল হক খসরু, উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক এমএজি বাবর, আব্দুল আহাদ, জকিগঞ্জ বাজার বনিক সমিতির সেক্রেটারি আব্দুল জব্বার জবাই মিয়া, পরিচালক এনামুল হক মুন্না, সাংবাদিক শ্রীকান্ত পাল, আহমদুল হক চৌধুরী বেলাল, আল হাছিব তাপাদার, ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান কালন, আজির উদ্দিন লুকন, জেলা ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজ আহমদ প্রমূখ। সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও উপজেলা জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমদ লস্কর ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।