বাসিয়া নদী খননে দূর্নীতি বিশ্বনাথে কৃষকের মানববন্ধন
তজম্মুল আলী রাজু, বিশ্বনাথঃ বিশ্বনাথে বাসিয়া নদীর সীমানা নির্ধারণ পূর্বক সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক নদী খননের দাবীতে উপজেলার ৩ উপজেলার কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুঁসে উঠেছে। কৃষকরা বাসিয়া নদী সুষ্ট খনন ও অনিয়ম দূর্নীতির প্রতিবাদে গতকাল বুধবার বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে বাসিয়া সেতুর ওপরে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। কর্মসূচীতে সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা ও বিশ্বনাথ উপজেলার কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ যোগদান করে। মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ কয়েক যুগ পর সরকার এ অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন ও কৃষক বাচাঁনোর লক্ষ্যে প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে বাসিয়া নদী খননের প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। কিন্তু খনন কাজে নিয়োজিত ৪টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে নদীর তীরের ঘাস পরিষ্কার করে খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক নদী খনন করা হচ্ছেনা। এমনকি নদীর দৈর্ঘ, প্রস্ত বা সীমানা নির্ধারণ কিংবা খননকৃত মাটি কোথায় কিভাবে রাখা হবে তার কোন সুরাহা করা হচ্ছেনা। এতে যে পরিমান মাটি নদীর তীরে রাখা হচ্ছে বৃষ্টি হলে তা আবার নদী গর্ভে চলে যাবে। লালাবাজার থেকে বিশ্বনাথ রাজনগর অংশে শুধু মাটি ও ঘাষ পরিষ্কার করা হচ্ছে। সীমানা নির্ধারণ না থাকায় এই অঞ্চলের কৃষকরা বাঁধা প্রদান করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। বক্তারা বলেন কৃষক বাচাঁও বাসিয়া বাচাঁও আন্দোলন আরও কঠিন করে আমাদের দাবী আদায় করে নিব। তারা সুষ্টভাবে নদী খনন ও দূর্নীবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বিশ্বনাথের কৃষক প্রতিনিধি বেলাল আহমদ ইমরানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আব্দুল ওদুদ বিএসসি, খাজাঞ্চি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজামউদ্দিন সিদ্দিকী, বিশ্বনাথ উপজেলা সুজন সম্পাদক মো. মধু মিয়া, কাজী মাওলানা আব্দুল ওয়াদুুদ, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তজম্মুল আলী রাজু, মামুনুর রশীদ মামুন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল জালাল, সমাজকর্মী সাইদুর রহমান রাজু, সিলেট সদর উপজেলার কৃষক প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী, দক্ষিণ সুরমার কৃষক প্রতিনিধি সৈয়দুর রহমান, বাবুল মিয়া। মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন সাংবাদিক স্বপন দাশ, জাহাঙ্গীর আলম খায়ের, এমদাদুর রহমান মিলাদ, মোহাম্মদ আলী শিপন, সাইফুল ইসলাম বেগ, নূরউদ্দিন, জামাল মিয়া, আবুল কাশেম, লোকমান হোসেন, কবি এনামুল হক মামুন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সিরাজ খান, বিশিষ্ট মুরব্বি বসারত আলী বাছা, সাবেক ইউপি সদস্য ওয়াহাব আলী, সংগঠক জয়নাল মিয়া, নবীন সোহেল প্রমূখ। মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, জলবায়ু ট্রাষ্ট ফান্ডের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট শহরতলীর টুকেরবাজারের দক্ষিণে সুরমা নদী মুখ থেকে বিশ্বনাথ উপজেলা সদর পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার নদী খননের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪টি ঠিকাদারী প্রতিষ্টান খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অত্যান্ত দু:খের বিষয় নদীর সীমানা নির্ধারন না করে সংশি¬ষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজসে টেন্ডারের শিডিউল মোতাবেক কাজ না করে নদী তীরের ঘাস (আগাছা) পরিস্কার করে নদী খননের নামে সিংহভাগ টাকা আতœসাতের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। ইহাতে একদিকে যেমন সরকারের বিপুল পরিমান টাকা অযথা অপচয় হচ্ছে। অপরদিকে নদী খননের উপকারে কোন সম্ভাবনা নেই। তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে অতিসত্তর নদী খননের কাজ সুষ্টভাবে সম্পাদনের দাবী জানান।