অধ্যক্ষের আর্থিক অনিয়ম প্রমাণিত : অনির্দিষ্ট কালের জন্য এমসি কলেজে কার্যক্রম বন্ধ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ এমসি কলেজে মাস্টার্স শেষ পর্বে আইসিটি বিভাগে ফরম পূরণ কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে বেতন-ফি প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত ১লা এপ্রিল মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আসছে। কলেজ সূত্রে জানা যায়, কলেজ কর্তৃপক্ষের ২৯ মার্চ ২০১৪ইং স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক আইসিটি সহ ফরম পূরণের দাবিকৃত টাকার পরিমাণ ধার্য্য করা হয়েছিল ৩০০০ টাকা। অবৈধ বেতন-ফি প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে কলেজ কর্তৃপক্ষ অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে জারীকৃত বিজ্ঞপ্তিটি চুপিসারে সরিয়ে ফেলে এবং ৫ই এপ্রিল তারিখে অনলাইন প্রসেসিং ফি বাবদ ৫০ টাকা এবং কলেজ নিয়ম বহির্ভূত ফি ১০০ টাকা বাদ দিয়ে আইসিটি সহ মোট ৮৫০ টাকার দাবি করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। শিক্ষার্থী থেকে অভিযোগ পাওয়া যায় যে, তারা যদি অবৈধ বেতন ও অনলাইন প্রসেসিং ফি এবং নিয়ম বহির্ভূত ফি এর প্রতিবাদ না করত তাহলে অনলাইন প্রসেসিংও নিয়ম বহির্ভূত ফি হিসাবে শুধু আইসিটি ইউনিটে ৭৫০ জন শিক্ষার্থী থেকেই প্রায় ১ লক্ষ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করত কলেজ কর্তৃপক্ষ। এটা দেখে শিক্ষার্থীরা মনে করে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কলেজে পরিশোধিত ছাড়াও কলেজ কর্তৃপক্ষের বেতন বাবদ দাবিকৃত ২৪০০ টাকার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ অবৈধ। এদিকে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান ধর্মঘট পালন করতে গেলে তারা কলেজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারীকৃত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারে যে, অনিবার্য কারনে গতকালের পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে। তবে সিলেট বিভাগের পরিবহন ধর্মঘট জনিত কারনে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়। শিক্ষার্থীরা জানায় পরীক্ষা স্থগিত দেখে তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে আন্দোলনকারী ছাত্র শাহীন পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষনা করেন যে, আমাদের দাবি না মানলে আজ রবিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজের এইচ.এস.সি. পরীক্ষা ব্যতীত যাবতীয় সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিল, সজীব চৌধুরী, মঈন উদ্দিন, রফিকুল আলম, রাজীব দাস, রুবেল আহমদ, শিব্বির আহমদ, শাহীন আহমদ, নুরুল আলম, আনোয়ার মিয়া, হৃদয় চক্রবর্তী, পপি, ফারমিতা দাস, শতাব্দী পাল, শ্রাবন্তী দাস, সুমনা চৌধুরী, রহিমা বেগম, শাহীনা বেগম, খালেদা আক্তার অনামিকা পলি প্রমুখ।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ধীরেশ চন্দ্র সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভুল বশতভাবে অনলাইন প্রসেসিং এর ফি ৫০ টাকা নেওয়া হয়েছে, অন্য বৎসরের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এভাবে নেওয়া হয়েছে বলে প্রশ্ন করলে তিনি প্রতিবেদককে অফিসে আসার জন্য আমন্ত্রণ যানান। এবং নিয়ম বহির্ভূত ১০০ টাকার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আইসিটি বিভাগের প্রধানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন।
আইসিটি বিভাগের আহ্বায়ক সহকারী অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিনের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ভুল বশতভাবে দেওয়া হয়েছে। ভুল বশত দেওয়ার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি তা জানতে চাইলে তিনি বলেন যে, সামান্য টাকার জন্য কী শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে?
প্রসঙ্গত এমসি কলেজের মাষ্টার্স শেষ পর্বের ফরম পূরণে কলেজ অধ্যক্ষ সম্পন্ন মনগড়া ভাবে আইসিটি ফরম পূরনে বেতন বাবদ ২৪০০ টাকা ও নিয়ম বহির্ভতভাবে ১০০ টাকা এবং অনলাইন প্রসেসিং ৫০ টাকা সহ মোট ২৫৫০ টাকা নির্ধারন করায় শিক্ষার্থীরা গত ১লা এপ্রিল মঙ্গলবার থেকে আন্দোলন করে আসছে।