বিধ্বংসী অর্থমন্ত্রী বদলানো জরুরী
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ অর্থমন্ত্রী আবুল আব্দুল মুহিতের সমালোচনা করে বিশিষ্ট কলাম লেখক সরদার আমিন বলেছেন, “এই বুড়োকে বদলানো জরুরী। তিনি থাকলে ব্যাংকের সুদ কখনো কমবে না।”
অর্থমন্ত্রী-পরিকল্পনামন্ত্রীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রুপ নেয়ার পর মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক প্রতিক্রিয়ায় সরদার আমিন এ কথা বলেন।
সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার (এডিপি) আকার নিয়ে দুই মাস ধরেই অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে মতবিরোধ চলছে। বিষয়টি এতোদিন কোনো মন্ত্রীর মুখ দিয়ে সরাসরি বের না হলেও সোমবার হাটে হাঁড়ি ভাঙেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল।
এদিন দুপুরে পরিকল্পনা কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তার কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় লোটাস কামাল অর্থমন্ত্রীর বয়স, সামর্থ্য ও দক্ষতা নিয়ে রীতিমতো তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। তিনি তার সহকর্মী, অধীনস্থ নন- এমন মন্তব্যও করেন লোটাস।
অর্থমন্ত্রী-পরিকল্পনামন্ত্রীর দ্বন্দ্বের প্রতিক্রিয়ায় সরদার আমিন বলেন, “যা-ই বলেন, এই বুড়োকে বদলানো জরুরী। আমি লোটাস কামালদের মত লুটেরাদের পক্ষে না, কিন্তু এই অর্থমন্ত্রী থাকলে ব্যাংকের সুদ কখনো কমবে না। তার সাথে সব রিলেটেড। ব্যবসা বাণিজ্য সব। এখন ভাল দেখছেন, কয় বছর পর দেখবেন এর প্রভাব কি খারাপ হয়েছে।”
সরকারের এই মন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি ফেসবুকে লেখেন, “একজন পুতুল অর্থমন্ত্রী থাকলেও কতগুলো ইন্ডিকেশন বাড়বেই বেসরকারি মানুষের কর্মের চাপে। কিন্তু কি হতে পারতো একজন দক্ষ অর্থমন্ত্রী থাকলে সেটা দেখা যাবে না। ভারতীয়রা আইএমএফএ বড় বড় পদে থেকে ব্যাংকের সুদ বাড়িয়ে রাখার পদ্ধতি করতে বাংলাদেশকে বাধ্য করে এর অগ্রগতি রোধ করছে। ভারত কখনো চায় না তার পাশের দেশ তার থেকে উন্নতি করুক। সেটা বিশ্বব্যাংকও প্রকৃতভাবে চায় না বলে এই অর্থমন্ত্রীকে দিয়ে কৌশলে তা রোধ করছে। তিনি বিধ্বংসীও। কারণ তিনি বলেন চার হাজার কোটি টাকা চুরি কিছু না। গতকাল এক সাধারণ লোক আমাকে বললো, যে দেশের অর্থমন্ত্রী এরকম কথা বললে সে দেশে বড় লুটেরারাই উৎসাহী হয়। কিবরিয়া সাহেবের ধারে কাছেও না উনি। আমাদের রিয়েল এস্টেট সেক্টর ও তার সাথে বিশাল এক পণ্য উৎপাদন ও ট্রেডিং সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছেন তিনি। ”
অর্থমন্ত্রীর কারণেই ব্যাংকগুলোতে লাভ কমে গেছে মন্তব্য করে সরদার আমিন বলেন, “ব্যাংকের তারল্য খাটাতে পারছে না, লাভ কমে গেছে, অনেক অনেক খেলাফি হচ্ছে। ছোট পুঁজির লোকেরা এসএমই যত লোন নিয়েছে, বেশিরভাগ খেলাফি। ব্যাংক এখন কেবল মামলায় জড়াচ্ছে। নতুন ঋণ দিতে ভয় পাচ্ছে। আমদানি কমে গেছে বলে রিজার্ভ বাড়ছে কেবল। আর উনি বগলদাবা করছেন। আমদানি কম মানে দেশে সম্পদ আসছে না। সম্পদ রিজার্ভ করে রাখা কোন গবেটের কাজ। গার্মেন্টের মত রপ্তানি আয়ে ও রেমিটেন্সে কেবল সরকার টিকে থাকে। তা অর্থনীতির ফ্লোতে এখন বিনিয়োগ হয় না, সরাসরি বাজারে খরচ হয় বলে লেবার শ্রেণির আয় বেড়েছে। বিনিয়োগ কমে গেলে শিল্প বাণিজ্য কমে যায়। সেটা কমেছে তার প্রমাণ হলো, কোথাও জমি বেচাকেনা হয় না। একেবারে কমে গেছে। মানুষ অর্থ চালাচালির বড় খাতটা অকার্যকর হয়েছে। বেকারত্ব প্রচন্ড বাড়ছে। সার্ভিস সেক্টর গুরুত্ব পায় শিল্প ও ট্রেডিংয়ে। ”
সরকার কৃষিখাতকে কাজে লাগাতে পারছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কৃষি খাত ভাল থাকলেও সেটা অর্থনীতিতে দেশের শিক্ষিত শ্রেণিকে তেমন কাজে লাগানো হচ্ছে না। পশ্চিম বঙ্গের বাম ফ্রন্ট সরকার সেটা করতে গিয়ে শেষে সার্ভিস সেক্টরে গুরুত্ব দিয়েও দেরি হয়ে যায় বলে টিকতে পারেনি। সভ্যতা মানে যেমন নগর সভ্যতা প্রধান, উন্নয়ন মানে নগরকেন্দ্রিক উন্নয়ন প্রধান। যেমন আমেরিকায় এখন কৃষিতে নিয়োজিত ৩ শতাংশ লোক। এদেশেও নগরবাসি বাড়ছে, সেভাবে সার্ভিস সেক্টর বাড়ছে না। বরং কমছে। পরিস্থিতি যে ভয়াবহ হচ্ছে তা কখন বুঝবে সরকার ও তার লোকরা? দামি রেস্টুরেন্ট এ ভিড় দেখলেই মনে করার কারণ নেই যে দেশের অর্থনীতি খুব ভাল আছে।”