সোনিয়া-মোদি বাকযুদ্ধ!
সুরমা টাইমস ইন্টারন্যাশনালঃ আক্রমণটা সোনিয়ার পক্ষ থেকেই আগে আসল। মোদিও কী কম যান! একহাত নিলেন তিনিও। শুরু হয়ে গেল কথার লড়াই!
ঘটনার সূত্রপাত গতকাল। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী আসামের জনসভায় বিজেপির কড়া সমালোচনা করেছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অরুণাচল প্রদেশ ও আসামের চারটি জনসভায় সোনিয়াকে পাল্টা আক্রমণ করেন নরেন্দ্র মোদি। বিজেপির ‘দেশপ্রেম’ নিয়ে সোনিয়ার কটাক্ষের জবাবে মোদি জানিয়ে দিলেন, তাদের কারও, কোনও শংসা পত্রের প্রয়োজন নেই।
আজ উত্তর-পূর্বে মোদির প্রথম সভাটি ছিল ইটানগরে। মাথায় ধনেশের ঠোঁট-শোভিত স্থানীয় তাজ। হাতে উপজাতি তরবারি। প্রথম থেকেই যুদ্ধংদেহী মেজাজে মোদি উত্থাপন করেন দিল্লিতে উত্তর-পূর্বের ছাত্রছাত্রীদের উপরে লাগাতার হেনস্থা ও নিদো টানিয়ার মৃত্যুর ঘটনা।
তার কথায়, ‘দেশের রাজধানী ধর্ষণ-নগরীতে পরিণত হয়েছে। উত্তর-পূর্বের ছাত্রকে সেখানে হত্যা করা হচ্ছে। এখানকার মেয়েদের সেখানে ধর্ষণ করা হচ্ছে। অথচ সোনিয়াজি গত কাল উত্তর-পূর্বে এসে এ নিয়ে সামান্য সমবেদনাটুকুও জানাননি।’
অরুণাচলে বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে নামার আগেই কংগ্রেস বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১১টি আসনে জিতে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো বিজেপি প্রার্থীর সই নকল করে তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি।
সেই প্রসঙ্গ তুলে মোদি বলেন, ‘এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তো লড়তেই ভয় পান। ভোটের আগে বাহুবলে, অর্থবলে বিরোধীদের দমন করা হচ্ছে। অরুণাচলে সবজি বাজারের মতো বিধায়ক কেনাবেচার বাজার বসিয়েছে কংগ্রেস।’
এরপরেই রাজ্যের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকির উদ্দেশে মোদীর স্পষ্ট হুমকি, ‘১৬ মে-র পর দিল্লিতে আপনাকে কে বাঁচায় দেখব!’
সোনিয়া গত কাল বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘স্বাধীনতার সময় বিজেপির পাত্তা ছিল না। স্বাধীনতার পরে ওরা কেবল কংগ্রেসের সমালোচনা করেছে।’
তার মোকাবিলায় গুজরাটি নরেনভাই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে লন আর এক গুজরাটিকেই। তিনি বলেন, ‘গান্ধীজী কংগ্রেস নেতাদের সবচেয়ে ভাল বুঝতেন। তাই স্বাধীনতার পরে তিনি বলেছিলেন, এ বার কংগ্রেস ভেঙে দেওয়া হোক।’
মোদির কটাক্ষ, ‘কংগ্রেসের হাতে পড়ে দেশের কী অবস্থা হবে তা গান্ধীজী বুঝেছিলেন। আসুন, এ বার বাপুর স্বপ্ন সফল করি। কংগ্রেসকে টুকরো টুকরো করে ভেঙে দিই।’
সোনিয়া বিজেপি নেতাদের ‘অতি দেশভক্তি’ নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। অরুণাচল ও আসামের বিশ্বনাথ চারিয়ালি, গোগামুখ, শিবসাগরের সভায় মোদী ফের তুলে আনেন সেই বিদেশিনী-বিতর্ক। প্রশ্ন তোলেন, ‘ইতালিয় সোনিয়া গান্ধী কেরলার মৎস্যজীবীদের হত্যাকারী দুই ইতালিয় নৌসেনাকে দেশে পালাতে সাহায্য করেন। সুপ্রিম কোর্টের কঠোর মনোভাবই ওই খুনি ইতালিয় নৌসেনাদের ফের ভারতে ফিরতে বাধ্য করেছে। সুতরাং দেশভক্তি নিয়ে কারও শংসাপত্রের প্রয়োজন নেই।’
আসামে রাহুল গান্ধী, মনমোহন সিংহ, সোনিয়ার সভায় ভিড় এবার অনেকটাই পাতলা। উল্টো দিকে মোদীর সব ক’টি সভাতেই ছিল মানুষের ঢল। তিনি বলেন, ‘এত বড় জনসভা আমি দেখিনি। আমার আর কোনও সমীক্ষার প্রয়োজন নেই। ভোটের দিন ঘোষণার আগেই মানুষ রায় দিয়ে দিয়েছেন। আমি নিশ্চিন্ত।’