বিয়ানীবাজারে কলেজ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি : প্রতিবাদ করায় ভাই পুলিশ কাস্টডিতে!

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধিঃ বিয়ানীবাজারে এক কলেজ ছাত্রীকে পরিবহণ শ্রমিক কর্তৃক যৌন হয়রানির প্রতিবাদে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। হামলা-পাল্টা হামলা, সড়ক অবরোধ ও পরিবহণ শ্রমিকদের দফায় দফায় থানা ঘেরাও করে। এ নিয়ে শহরে পরিবহণ শ্রমিক এবং ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় পুলিশ কলেজ ছাত্রীর ভাইকে নিরাপত্তা না দিয়ে উল্টো কাস্টডিতে ঢুকিয়ে ফেলে।
জানা যায়, বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজের স্নাতক শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রী রবিবার ক্লাস শেষে বাড়ি (দুবাগ) যাওয়ার পথে কয়েকজন পরিবহণ শ্রমিক কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার হয়। এর প্রতিবাদে বোনের পক্ষ নিয়ে ছোট ভাই উজ্জল (২২) একাধিক পরিবহন শ্রমিককে মারধর করে। এক পর্যায়ে পরিবহণ শ্রমিকরা উল্টো ভাই ও বোনের ওপর চড়াও হলে প্রাণ রক্ষার্থে তারা থানা কম্পাউন্ডের ভিতরে আশ্রয় নেয়। সেখানেও হামলা চালাতে দফায় দফায় জড়ো হতে থাকে পরিবহন শ্রমিকরা। তারা সিলেট-বিয়ানীবাজার-বারইগ্রাম সড়ক ঘন্টাব্যাপী অবরোধ করে রাখে। পরিবহণ শ্রমিকদের শর্ত মোতাবেক পুলিশ কলেজ ছাত্রীর ভাই উজ্জলকে আটক করে থানা হাজতে রাখলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। যৌন হয়রানির শিকার মেয়েটিকে মহিলা পুলিশ দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখে। এতে ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে পড়া মেয়েটি আজ থেকে আর কলেজে যাবে না বলে এ প্রতিবেদককে জানায়। ছলছল চোখে মেয়েটি আরো বলে, ‘প্রায়ই সে এরকম যৌন হয়রানির শিকার হয়। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করে না। আজ (রবিবার) যখন সে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে তখন সমাজ এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অন্যায়কারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।’
হাজতে থাকা উজ্জল জানান, তার স্নাতক পড়ুয়া বোন বিয়ানীবাজার সরকারী কলেজের ক্লাস শেষ করে দুবাগের গ্রামের বাড়ীতে যাওয়ার পথে সিএনজি চালক জসিম এবং জাহেদ তাকে অশ্লীল কথাবার্তা বলে যৌন হয়রানি করে। বিষয়টি দ্রুত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার বোন তাকে জানালে তিনি এর প্রতিবাদ করতে সিএনজি স্ট্যান্ডে আসেন। তখন পরিবহণ শ্রমিকরা তাকেও গালিগালাজ করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে দু’একজনকে মারধর করেন।
এব্যাপারে পরিবহণ শ্রমিক নেতা ইসলাম উদ্দিন বলেন, মেয়েটি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে এটা ঠিক। তবে এর সাথে পরিবহণ শ্রমিকরা জড়িত নয়। তিনি দাবী করেন, মেয়ে পক্ষের লোকজনের হামলায় সিএনজি চালক জসিম এবং জাহেদ গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিয়ানীবাজার থানার সেকেন্ড অফিসার ফজলুল হক জানান, উভয়পক্ষের সাথে সমঝোতার কথাবার্তা চলছে। সমাধান না হলে দু’পক্ষ থেকেই মামলা নেয়া হবে।