সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ পঞ্চগড় জেলা শহরের ইসলামবাগ এলাকায় আবারও মাত্র ১৫০০ টাকায় দুদিনের এক ছেলে সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন মিনা বেগম। পুত্র সন্তান জন্মের পর ঘরভাড়ার টাকা ও পরিবারের খরচ যোগাতে না পারায় রবিবার বাধ্য হয়ে তিনি সন্তান বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছেন। এলাকাবাসী জানায়, মিনা বেগম (৪০) নামের এই নারী ইসলামবাগ মহল্লার মাসুদের একটি ঘরে ভাড়াটে হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। গত শুক্রবার বিকেলে তিনি এক পুত্র সন্তান জন্ম দেন।
ঘরের মালিক গত শনিবার সকালে দুই মাসের এক হাজার টাকা ভাড়ার টাকা দিতে না পারায় পটলা পুটলিসহ তাকে বের করে দেয়। পরে এলাকার কয়েকজন যুবকের কাছে তার নবজাতককে চার হাজার টাকার বিনিময় বিাক্র করে দেন ওই মা। কয়েক ঘণ্টা পরে যুবকেরা শিশুটিকে নিতে রাজি না হওয়ায় মাকে ফেরত দেন। পরে শহরের রৌশনাবাগ এলাকার নিঃসন্তান রাশেদা বেগমের কাছে বিক্রি করেন নিজের সন্তানকে।
জানা গেছে, নবজাতকের পিতা দোলোয়ার হোসেন দিনাজপুর নিমনগড় বালুবাড়ী থেকে পঞ্চগড়ে এসে দীর্ঘদিন থেকে বিয়ে করে ফেরিওলা হিসেবে হাড়ি-পাতিলের বসবাস করছেন।
মিনা বেগম জানান, ছয় বছর আগে তার স্বামী দেলোয়ার পঞ্চগড় শহরের জালাসী এলাকায় আর একটি বিয়ে করে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর ভয়ে তার স্বামীর সঙ্গে গোপনে সম্পর্ক রেখেছেন তিনি। তিনি জানান, পঞ্চগড়ে তার স্বামী গোপনে যাতায়াত করতেন। কিন্তু ভরণ-পোষণ দিতেন না। তিনি হোটেলে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু প্রসূতি হওয়ায় কয়েক মাস ধরে কাজ করতে না পারায় দুই মাসের ঘর ভাড়া বাকি পড়ে।
মিনা বেগম বলেন, ভরণ-পোষণ করার সামর্থ্য না থাকায় নবজাতকে দত্তক দিয়েছেন। নবজাতকে কিনে নেয়ার কথা অস্বীকার করে রাশেদা বেগম বলেন, ঘরভাড়া পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই নবজাতকে দত্তক নিয়েছি।ঘরের মালিক মাসুদ বলেন, ছয় বছর ধরে ওই নারী স্বামী পরিত্যক্তা। এরপর আবারও তার সন্তান জন্ম হলে সামাজিকতার ভয়ে তার স্ত্রী তাকে বের করে দেন। স্থানীয়রা জানান, তিন বছর আগেও মিনা বেগম পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে আর একটি ছেলে সন্তান প্রসবের এক ঘণ্টা পরেই বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এর আগে মিনা বেগম সন্তান বিক্রি করার কথা স্বীকার করে জানান, চিকিৎসার জন্য ৫০০ টাকার বিনিময়ে তিনি ওই সন্তানকেও বিক্রি করেছিলেন। তবে কয়েকজন সাংবাদিক টাকা ও ঘর ভাড়া ফেরত দিয়ে সন্তান ফেরত নিতে বললেও তিনি সন্তানের ভরণ-পোষণ দিতে পারবে না বলে ফেরত নিতে রাজি হননি।