সিলেটে মুখোমুখি মিসবাহ-সুরঞ্জিত
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পছন্দের চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে এখন মুখোমুখি আওয়ামী লীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতা। একজন হলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এমপি। অপরজন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ । তাদের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আল আমীন চৌধুরী ও বর্তমান চেয়ারম্যান অবনী মোহন দাস। এদের মধ্যে আল আমীন চৌধুরীর পক্ষে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি আর বর্তমান চেয়ারম্যান অবনী মোহন দাস’র প্রতি সমর্থন রয়েছে অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের।
ফলে দলের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে ভোটের আগেই বিভক্ত আওয়ামী লীগ পরিবার। দলের স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বিপাকে, বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। যদিও উপজেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী আমীন চৌধুরীর পক্ষেই প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রার্থীতা নিয়ে আওয়ামী লীগের কোন্দল সুবিধাজনক অবস্থান তৈরী করে দিয়ে বিএনপির একক প্রার্থী গনেন্দ্র সরকারকে। দলীয় নেতাকর্মীরা তার বিজয় নিশ্চিত করতে বিরামহীনভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপির এই চেয়ারম্যান প্রার্থী ১১ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। আগামী ২৩ মার্চ এ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সুখলাইন গ্রামের আওয়ামী লীগকর্মী ভানুরঞ্জন দাস বলেন, ‘আমাদের দলের দুই প্রার্থীই বলছেন, তাঁরা দলীয় সমর্থিত। এখন আমরা বিপাকে আছি। ভোট ভাগ হয়ে গেলে নিশ্চিত বিজয় হাতছাড়া হতে পারে।’
শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিন চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরা তৃণমূলের মতামত নিয়ে চেয়ারম্যান পদে আল আমীন চৌধুরীকে সমর্থন জানানোর পর স্থানীয় সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও সমর্থন দিয়েছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অবনী মোহনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে তাঁকে সমর্থন দেওয়া হয়নি। তাঁর সঙ্গে প্রচারণায় দলের কেউ নেই। দলের বিপক্ষে গিয়ে প্রার্থী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।’
অবনী মোহন দাসের সমর্থক ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফয়জুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে আমাদের প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। আমরা এখন তাঁর পক্ষেই কাজ করছি।’
জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত নির্লজ্জভাবে আচরণবিধি ভঙ্গ করে ভোটারদের অনুদানের ঘোষণা দিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছি। তিনি বলেন, ‘আমাদের আশঙ্কা ভোটের দিন সুরঞ্জিত সেনের নির্দেশে ভোটকেন্দ্র দখল করে তাঁর পক্ষের প্রার্থীকে বিজয়ী করার চেষ্টা করবেন।’
আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর ব্যাপারে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, তৃণমূল থেকে আল-আমীন চৌধুরীকে সমর্থন জানিয়েছে তাই আমিও দলীয়ভাবে তাঁকে সমর্থন দিয়েছি। তৃণমূলের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা তাদের পলিটিক্যাল স্ট্যান্ট। জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে অংশ না নিলেও তারা এখন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, বিজয়ী হচ্ছে।