সেই সাজানো চাঁদাবাজির মামলায় কিশোরী ও তার মা সহ ৫ জনের জামিন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের শিল্প নগরী ও প্রবাসী অধ্যুষিত ছাতকে লন্ডন প্রবাসী পরিবারের সাজানো সেই চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলায় অতি উৎসাহি ওসির ইঙ্গিতে গ্রেফতার হয়ে দ্বীর্ঘ ৯ দিন জেলা কারাগারে কারাভোগের পর অবশেষে কিশোরী ও তার মা-বাবা সহ একই পরিবারের ৫ সদস্য গতকাল রবিবার আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. ইমাম হোসেন গতকাল দুপুরে আসামী পক্ষের আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী আদালত থেকে জামিনের কাগজপত্র জেলা কারাগারে পৌছলে বিকেলেই ঐ পরিবারের সদস্যরা কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে নিজ বাড়িতে ফিরে যান।
উল্ল্যেখ যে, বসত বাড়ি নিয়ে আদালতে পক্ষে বিপক্ষে বিচারাধীন মামলা থাকার পরও এক লন্ডন প্রবাসী পরিবার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে একই গ্রামের মনোয়ারা বিবির সাজানো মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলায় অবৈধ ভাবে বসতবাড়ির দখল পাইয়ে দিতে কোন রকম প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই গত ৩১ অক্টোবর শুক্রবার পুলিশ দুপুরে উপজেলার জাউয়া বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে দিয়ে দেবেরগাঁও গ্রামের একই পরিবারের মৃত মনা উল্লাহর ছেলে ঈমান আলী (৫০), তার স্ত্রী মেহেরুন বেগম (৪৩) , ছেলে আলী হোসেন (২৫) আক্তার হোসেন (২০) ও একমাত্র কিশোরী কন্যা পপি বেগম (১৬) কে গ্রেফতার করিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয় একই সাথে বসত বাড়িতে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। থানায় মামলা রেকর্ডের পুর্বেই জাউয়া বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সহ একদল পুলিশকে দিয়ে ঐ পরিবারের ৫ জনকে গ্রেফতার করিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়। গ্রেফতারের পর বিকেলে মামলা রেকর্ড করা হয়। যা ছাতক থানার মামলা নং ২৮/তাং ৩১.১০.১৪ ইং ধারা ১৪৩/৩৮৫/৪২৭/৫০৭ দ.বি. জি আর ২৭১/১৪ (ছাতক) ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (উপ-পরিদর্শক) আব্দুর রশীদ সরকার নিজেও মামলার বিষয়টি জানতেন না। পরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণণের জন্য ফরোয়ারর্ডিং এ শুধু মাত্র তার স্বাক্ষর নেন ওসি। পরদিন চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজালাল মুন্সীর ঘুষ দুর্নীতি গ্রেফতার বাণিজ্য ও নানা মুখী হয়রানী মুলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল স্থানীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে গ্রেফতার বাণিজ্যের শিকার ঐ দরিদ্র অসহায় পরিবারের সদস্যদের পাশে দাড়ান। এ ঘটনায় ওসির বিতর্কিত ভুমিকা নিয়ে সুশীল সমাজ, জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী ,গণমাধ্যম, খোদ পুলিশ প্রশাসনেও এমনকি গোটা জেলা জুরে নানা সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে। এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদপত্রে একাধিক প্রতিদেন প্রকাশিত হলে পুলিশ সুপার, ডিআইজি এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে তদন্তে নামেন পুলিশের উধ্বর্তন কতৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাতকের বিভিন্ন এলাকার একাধিক ব্যাক্তি গতকাল জানান, ওসি শাহজালাল মুন্সী এখনও ছাতক থানায় বহাল তবিয়্যতে থাকায় ভোক্তভোগী সাধারন মানুষ এখনও তার অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না। থানায় কর্তব্যরত একাধিক পুলিশের কাছেও রয়েছে তার অপকর্মের ফিরিস্থি । ব্যাপারটা অনেকটা এরকই যে, জলে বাস করে অহেতুক কেউই কুমিরের সাথে লড়াইয়ে নামতে চাইছেন না। তার ঘুষ দুর্নীতি গ্রেফতার বাণিজ্যের বিরুদ্ধে মুখ খুললে ফের নতুন করে মামলা আতংকে রয়েছেন সাধারন মানুষ। এতসব অপকর্মের পরও শাহজালাল মুন্সীকে ছাতক থানায় ধরে রাখাটা রাজনৈতিক ব্যাক্তি বিশেষের কাছে অনেকটা প্রেষ্ট্রিস ইস্যু এমনকি ইমেজ ক্ষুণ্য হওয়ার বিষয়ে পরিণত হয়েছে বলেই সাধারন মানুষের ধারণা। যাদের আর্শীবাদ ও তদবীরে পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পরপর দু’দুবার ছাতক থানায় বদলী হয়ে মধু আহরণে আসেন বিতর্কিত ওসি শাহজালাল মুন্সী তাদের কাছেই বদলী ঠেকাতে, তদন্তকাজ ধামাচাপা দিতে এমনকি তার বিরুদ্ধে কেউ যাতে মুখ না খোলে সেজন্যই এখন রাতদিন ধরণা দিচ্ছেন পুলিশের ঐ গুণধর ওসি।