নবীগঞ্জ ও বানিয়াচংয়ের ১০ গ্রামের লোকের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ আহত ২ শতাধিক
সিএনজির মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে বকেয়া ভাড়া পাওনার জের
উত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) থেকে॥ নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের ইমামবাড়ী বাজারে সিএনজি অঠোরিক্সার বকেয়া ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও মালিক সমিতির বিবাদমান বিরুধের জের ধরে গতকাল শুক্রবার দুপুরে নবীগঞ্জ ও পাশ্ববর্তী বানিয়াচং উপজেলার ১০ টি গ্রামের লোকদের মধ্যে ইমামবাড়ী বাজারে এক ভয়াবহ সংঘর্ষের গঠনা সংগঠিত হয়েছে। মুহুর্তের মধ্যেই কয়েক হাজার লোক বাজারে অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে ৩ পুলিশ সদস্যসহ উভয় পরে অন্তত ২ শতাধিক লোক আহত হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ১৭০ রাউন্ড রাবার বুলেট, ১৭ রাউন্ড টিয়াল সেল নিপে করে। সংঘর্ষ চলাকালে ইমামবাড়ী বাজার রণেেত্র পরিনত হয়। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষ ভয়ে দিকবেদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সংসদ সদস্য এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু, হবিগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে প্রানপন চেষ্টা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। সংর্ষষের পর বাজারে দাঙ্গা পুলিশ ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে বাজারে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আবারো যে কোন সময় সংঘর্ষের আশংকায় রয়েছেন সাধারন মানুষ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সংঘর্ষে আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল ও নবীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের কালিয়ারভাঙ্গা গ্রামের ফরহাদ মিয়ার একটি সিএনজি অঠোরিক্সা ভাড়ায় চালাতো পাশ্ববর্তী বানিয়াচং উপজেলার তাজপুর গ্রামের আহমদ মিয়া। গাড়ি চালানো অবস্থায় চালকের কাছে মালিকের ১ সপ্তাহের ভাড়া ভাবত প্রায় ৪ হাজার টাকা বকেয়া পড়ে। গত শনিবার এই বকেয়া ভাড়া চাইতে গিয়ে মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে মারামারির গঠনা সংগঠিত হয়। এতে মালিক ফরহাদ, চালক আহমদ ও রহমত নামে ৩ জন আহত হয়। আহতদের হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনার পর সিএনজি মালিক ও শ্রমিকরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এর পর উত্তপ্ত হয়ে উটে পরিস্থিতি প্রায় প্রতিদিনই উভয় প মারমুখি অবস্থান নেয়। উভয় প লাঠিসোটা নিয়ে বাজারে অস্ত্রের মহড়া শুরু করে। শুরু হয় এলাকা ভিত্তিক গ্রাম্য রাজনীতি, ঐক্যতা তৈরি করে এলাকার আদিপত্যতা বিস্তার করা। নবীগঞ্জের পে অবস্থান নেয় কালিয়ারভাঙ্গা, পাতাইড়া, ডেবড়া, চরগাঁও ও পুরানগাও গ্রাম ও বানিয়াচং উপজেলার পে অবস্থান নেয় শ্রিমতপুর, লহরজপুর, তাজপুর, হরিপুর ও উজিরপুর। এরই মধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ নবীগঞ্জ ও বানিয়াচংয়ের বিশিষ্ট সালিশ বিচারকগন বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেন। প্রাথমিক ভাবে আপোষ মানা হলে ও সালিশানগন সরে আসলেই আবারো তাদের মারমুখি অবস্থানে ফিরে যায়।
এ অবস্থায় গতকাল শুক্রবার দুপুর বেলায় হঠাৎ বানিয়াচং উপজেলার ৫টি গ্রামের কয়েক শত লোকজন দেশীয় অস্ত্র লাঠিসোটা, চুলপি, পিকল, ঠেঠা ইটপাটকেল নিয়ে বাজারে এসে হামলা চালায় এ সময় আর্তরার্থে নবীগঞ্জের ৫টি গ্রামের লোকজন খবর পেয়ে পাল্টা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় পরে মধ্যে চলে তুমুল সংঘর্ষ। সংঘর্ষে পুরো বাজার ও আশপাশ এলাকা রণেেত্র পরিনত হয়। সংঘর্ষে ৩ পুলিশ সদস্যসহ উভয় পরে অন্তত ২ শতাধিক লোক আহত হয়। সংঘর্ষে গুরুতর আহতরা হল, আবুল হোসেন, আলআ্মীন, আব্দুল হান্নান, সুহেল মিয়া, সাদেক মিয়া, আশরাফুল ইসলাম, মহাইমিনুল, আলী হোসেন, শফিকুল ইসলাম, মুজাহিদ, বুলবুল, মইনুল হক, শিপন, আব্দুল করিম, আমিন মিয়া, নুর মিয়া, আফিল উদ্দিন, ছাইম উদ্দিন, এলমান মিয়া, শমসের আলী। ঘটনার পর বাদ জুমআ স্থানীয় ইউপি কার্যালয়ে স্থানীয় এমপি এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান এডঃ আলমগীর চৌধুরী, ওসি মোঃ লিয়াকত আলী, স্থানীয় চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, সিএনজি মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বিয়ানদের নিয়ে একটি বৈঠক বসে এতে উভয় পরে আলোচনা ক্রমে সালিশে সম্মত প্রকাশ করেন উভয় প পরবর্তীতে তারিখ নির্ধারন করে বিষয়টি সালিশে নিষ্পত্তি হবে। এর আগ পর্যন্ত শান্তি শৃংঙ্খলা নিয়ন্ত্রন রাখতে উভয় পকে জাননো হয়।