শ্রমিকদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে শ্রমিকদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে
স-মিল শ্রমিক সংঘের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় মো: ইয়াছিন
কালাগুল বাগানের চা শ্রমিকদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে সকর শ্রমিকদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। শোষক মালিক শ্রেণী তার শ্রেণী স্বার্থে অন্যান্য খাতে ব্যয় বাড়ালে ও শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করতে চায়না। দৈনিক ৬৯ টাকা চা শ্রমিকদের মজুরি এটা অনেকেই বিশ্বাস করতে চায়না। এত কম মজুরি বাংলাদেশের কোন শ্রমিকের নেই। বাসা বাড়াীতে কাজের লোকদের খাওয়া দাওয়া সহ ১০০ টাকার উপরে মজুরি দেওয়া হয়। চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের দাবিতে চা শ্রমিকদেরকে আন্দোলন করতে হচ্ছে। মন্দির, মসজিদ নির্মানের দাবিতে আন্দোলন করলে শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানো সহ পুলিশি নির্যাতন করা হয়। রেশনের নামে সপ্তাহে তিন কেজী আটা দেওয়া হয় যা মানুষের খাওয়ার অনুপযোগি। এই আঠা খেয়ে অনেক সময় শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। চা শ্রমিকরা আজ পুষ্টিহিনতায় ভুগছেন। কালাগুল চা বাগানের শ্রমিকদেরকে ক্ষুধার্ত রেখে সরকারের উপজেলা পর্যায়ের একজন জনপ্রতিনিধি ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিল করার তৎপরতায় ব্যাস্ত রয়েছেন। ঐ নিরিহ চা শ্রমিকদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষতাসিন হলেও তারা শ্রমিক স্বার্থকে জলাঞ্জিলি দিয়ে মালিক স্বার্থ রক্ষা করে চলেছেন। কালাগুল বাগানের মালিক পক্ষ শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে সমাধান করার আগ্রহ প্রকাশ করলেও কোন এক অদৃশ্য শক্তি কারণে কালাগুল বাগানের চলমান সমস্যা নিরসন হচ্ছে না। কোন শিল্পে মালিক শ্রমিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য নির্ধারিত নিতিমালা থাকলেও শ্রম কর্মকর্তারা নিরব ভূমিকা পালন করছেন। সরকারী দলের রাজনৈতিক নেতার হস্তক্ষেপের কারণে বিষয়টি মিমাংশা না হয়ে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। শ্রমিক মালিকের বিরোধে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। কালাগুল শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সকল শ্রমিকদেরকে এগিয়ে আসা দরকার। শ্রমিকরা কারোও প্রতিপক্ষ নয়। শ্রমিকরা উৎপাদনের চালিকা শক্তি। শ্রমিকদের শ্রমঘামে গড়ে উঠেছে আজকের সভ্যতা। স-মিল শ্রমিক সংঘ কর্তৃক আয়োজিত সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মোঃ ইয়াছিন, প্রধান অতিথির বক্তবে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন। কালাগুল বাগানে চা শ্রমিকদের দাবি পূরণ করে বাগান চালু ও মেজরটিলা চামেলিবাগ এলাকায় দিনমজুর মিরাজ আলীর পরিবারকে নির্যাতন করে ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখা কর্তৃক গৃহিত মাস ব্যাপি কর্মসূচির অংশ হিসাবে গতকাল ২২ আগষ্ট শুক্রবার সকাল ১১ ঘটিকার সময় স-মিল শ্রমিক সংঘের এক বিভাগীয় প্রতিনিদি সভা সিলেট জেলা কার্যালয়ে অনুষ্টিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আইয়ূবুর রহমান। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মোঃ ইয়াছিন। সভায় বক্তব্য রাখেন ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, প্রেস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এ.কে আজাদ সরকার, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ছাদেক মিয়া, স-মিল শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, সহ সভাপতি সুরুজ আলি, মৌলভি বাজার জেলা সভাপতি আরজান আলী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক, উসমানি নগর উপজেলা সভাপতি এনাম মিয়া, বালাগঞ্জ সভাপতি আব্দুন নূর, নবীগঞ্জ উপজেলা সভাপতি শফিক মিয়া, উসমানিনগর উপজেলা সহ সভাপতি সেলিম মিয়া, জুড়ি উপজেলা কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুল্লাহ, বড়লেখা উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আহমদ, কমলগঞ্জ উপজেলা কমিটির সাধারণ ম্পাদক সস্তাক মিয়া, সিলেট আম্বরখানা শাখা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হজর আলী। সভায় আগামী ৫ সেপ্টেম্বর সিলেট সুরমা পয়েন্টে এক শ্রমিক সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সভা থেকে কালাগুল চা বাগানে শ্রমিকদের দাবী পূরণ করে বাগান চালু ও দিন মজুর মিরাজ আলীর উপর সন্ত্রাসী হামলা কারীদের গ্রপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি