কয়েক লক্ষ পর্যটকের অপেক্ষায় সিলেট বিভাগের পর্যটন স্পট ও রেষ্টহাউজ গুলো
মধু চৌবে,শ্রীমঙ্গল থেকেঃ প্রবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুঠিকে সামনে রেখে পর্যটন জেলা মৌলভীবাজার অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে কয়েক হাজার দর্শনার্থীকে তার রুপ রসের স্বাধ উপভোগ করানোর জন্য। আর মৌলভীবাজার তথা শ্রীমঙ্গলের প্রকৃতির এ রুপ যৌবনের সান্নিধে আসতে পর্যটকরাও রয়েছেন ব্যাকুল। ইতিমধ্যেই তারা ভ্রমনকে সামনে রেখে বুকিং করেছেন থাকার হোটেল, রেষ্ট হাউজ, কটেজ। আর যাতায়াতের জন্য কেউ কেটেছেন ট্রেনের টিকিটি কেউ করেছেন বাসের টিকিটি, কেউবা নিজেদের প্রাইভেট গাড়ীর মেন্টেইনেন্স শেষ করেছেন। পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারের মধ্যবর্র্তী উপজেলা শ্রীমঙ্গল ও শ্রীমঙ্গলে এ জেলার সর্বাধীক পর্যটন স্পট থাকায় অধিকাংশ পর্যটকেরা তাদের রাত্রীযাপনের জন্য শ্রীমঙ্গলকেই বাছাই করেন। আর এই পর্যটকদের জন্য শ্রীমঙ্গলের আবাসিক হোটেল ও রেষ্ট হাউজ গুলো সাজছে নান্দনিক সাজে। পর্যটকদের জন্য শ্রীমঙ্গল শহরের বাহিরে বে-সরকারী ভাবে প্রথম নান্দনিক ছন-বাঁশের কটেজ তৈরী করে নিসর্গ প্রকল্প। যার নাম দেয়া হয় নিসর্গ ইকো কটেজ। আর এর পরিচালনার ভার নিয়ে ছিলেন ট্যুর গাইড সামছুল ইসলাম। নিসর্গ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এর পূর্নাঙ্গ দ্বায়িত্ব নেন সামছুল। তিনি এর পরিধি বৃদ্ধি করে তৈরী করে আরো কয়েকটি কটেজ। যা পর্যটকদের ভ্রমনে এনে দেয় অন্যরকম এক অনুভুতি। এর কিছু দিন পরে সামছুল ইসলাম পাশবর্তী লিচু বাগানে তৈরী করেন কাঠ দিয়ে পাহারের গায়ে ঝুলন্ত কটেজ। যা দেশের পাশা পাশি বিদেশী পর্যটকদের খুব বেশি আকৃষ্ট করে।
এছাড়াও এই ঈদের ছুঠিকে সামনে রেখে শ্রীমঙ্গলের বড় বড় হোটেল ও রির্সোট গুলো ইতি মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগই বুকিং হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল হিল ভিউ রেষ্ট হাউজের স্বত্তাধিকারী এ প্রতিবেদককে জানান, বিগত এক মাস রমজান থাকায় তারা কোন বুকিং দেন নি। তবে এই রমজান মাসের লোকসান পুশিয়ে নিতে ইতিমধ্যে তার রেষ্ট হাউজের ৮০ ভাগ রোমই বুকিং হয়েগেছে। শ্রীমঙ্গল গ্রান্ড সুলতান রিসোর্ট এন্ড গলফ এর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানাযায়, ঈদের ছুঠিতে তাদের প্রায় ৭০ ভাগ রোম বুকিং হয়ে গেছে। এ ছাড়াও টি রিসোর্ট ৯০ ভাগই বুকিং হয়েছে, নির্সগ ইকো কটেজের পরিচালক সামছুল ইসলাম জানান, তার দুটি কটেজের ৮০ ভাগ রোমই বরাদ্ধ হয়েগেছে। শ্রীমঙ্গল লেমন গার্ডেন রির্সোট এর মালিক সেলিম মিয়া জানান, ঈদের ছুঠিতে তার অধিকাংশ বাংলাই বুক হয়েছে। এ ছাড়াও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন সরকারী ও অধা সরকারী অফিসের রেষ্টহাউজ গুলোর পুরোপুরিই বুকিং হয়েগেছে। অন্য দিকে শ্রীমঙ্গল টি টাউন রেষ্ট হাউজের ম্যানেজার জন্মজয় সরকার জানান, ঈদ উপলক্ষে তাদের ভালো ভালো রুম গুলো বুক হয়ে গেছে। শ্রীমঙ্গল ষ্টেশন মাষ্টার অমৃত লাল সরকার জানান, টিকিট খোলা মাত্রই কয়েক ঘন্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যাচ্ছে তাদের বরাদ্ধকৃত টিকিটি। বাস কাউন্টারে রয়েছে আগাম ফেরার টিকিটি কাটার ভির।
মৌলভীবাজার জেলায় দেখা কি কি আছে
শ্রীমঙ্গলের পাশবর্তী এলাকা কমলগঞ্জের মাধপুর লেক, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, ধলই সীমান্ত স্মৃতি সৌধ, বৃহত্তম রান ওয়ের সমশের নগর বিমান বন্ধর, মাগুরছড়া খাসি পুঞ্জি, ভেষজ রোড, ভেষজ গার্ডেন, কুরমা বনে হামহাম জলপ্রপাত, ছাতলা পুরে রিভার ভিউসহ আরো বেশ কিছু নান্দনিক জায়গা।
মৌলভীবাজার সদরে আছে, বর্ষিজোড়া ইকো পার্ক, হযরত শাহ মোস্তফার মাজার, মনু ব্যারেজ, শতবছরের আগের খোজার মসজিদ, জেলা প্রশাসক শিশু পার্ক।
রাজনগর উপজেলায় রয়েছে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রথম নারী ছাত্রী ও বিপ্লবী নেত্রী লীলা নাগের বাড়ি, কমলা রাণীর দীঘি, কাউয়া দিঘির হাওর, মাথিউড়া লেক, তারা পাশা বিষ্ণু মন্দীর, পাঁচ গায়ে মুক্তিযোদ্ধে শহীদদের গণ কবর, ফেঞ্চুগঞ্জ সার প্রাকৃতিক সার খারখানা।
কুলাউড়ায় রয়েছে, পৃথিম পাশা জমিদার বাড়ী, লাল টিলা, মুরাইছড়া পুঞ্জিভাটেরা গ্যাস প্রসেসিং ষ্টেশন।
বড়লেখার মাধব কুন্ড জলপ্রপাত, আগর বাগান, হাকালুকি হাওর।
জুড়িতে রয়েছে সাড়ি সাড়ি কমলার বাগান আর লাল মাটির উচুঁ নিচু পাহার।
আর শ্রীমঙ্গলে রয়েছে লাউড়াছড়ার একাংশ, বিলাশ ছড়া লেক, ভাড়াউড়া লেক, রাজঘাট লেক, হরিণ ছড়া লেক, সাতগাও লেক, সিতেশ বাবুর বন্য প্রাণী সেবাশ্রম, চা যাদু ঘর, আনারস বাগান, লেবু বাগান, যজ্ঞ কুন্ডের ধারা, বিটিআর আই, বধ্য ভুমি একাত্তর, মুনিপুরি পল্লী, ত্রিপুরা পল্লী, রাবার বাগান, বাইক্কা বিল, রাজা মিয়ার ফিসারীতে হাজার হাজার পাখির বাসা, বিলাশ ছড়া রাবার ডেমসহ আরো প্রায় অর্ধশত স্পট। এই স্পট ছাড়াও শ্রীমঙ্গলে অবস্থান করে সিলেটের জাফলং, হযরত শাহ জালাল (র.)ও শাহ ফরান (র.) এর মাজার, বিয়ানীবাজারে দুইশত জাতের ফলজ সম্ভার লোদী গার্ডেন, জৈন্তায় লালা খালও বেড়ানো যেতে পারে। এর জন্য শ্রীমঙ্গলে রয়েছে অর্ধশতাধিক ট্যুর গাইড। যাদের অনেকের খোজ পাওয়া যাবে শহরের হবিগঞ্জ রোর্ডের শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারে আর লাউয়া ছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ দ্বারে। এদিকে এই ঈকে সামনে রেখে শ্রীমঙ্গলের খাবার হোটেল গুলোও নিয়ে রেখেছে বেশ প্রস্তুতি। আর এই পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য শ্রীমঙ্গল থানা প্রশাসন, র্যাব নিয়েছে অতিরিক্ত নজরদারীর ব্যবস্থা।