শাহপরানে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম এক দিনেই তামিল করল পুলিশ
আড়াইশ দোকান উচ্ছেদ গ্রেফতার ২১
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) এর আওতাধীন থানাগুলো নড়েচড়ে বসেছে। ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানের পর থানাগুলো গা ছাড়া দিয়ে উঠে। এসএমপির কমিশনার থানার ওসিদের কাদে আল্টিমেটাম তুলে দিলে এ অবস্থা দেখা দেয়। গতকাল শনিবার এসএমপির ৬ থানার মধ্যে শাহপরান ও দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ পৃথক অভিযান করে। শাহ পরান থানা পুলিশ দুপুর ১ টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত অভিযানে উচ্ছেদ করে আড়াই শতাধিক দোকানপাট। অপরদিকে, দণি সুরমা থানা পুলিশ গতকাল বিকাল ৪ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত টানা অভিযান দিয়ে ১০ জন আটক করে। এর আগে বৃহস্পতিবারে থানা এলাকার বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের স্পট থেকে ১৯ জন, শুক্রবার রাতে আরও ১১ জনকে আটক করা হয়।
সূত্রমতে, মে মাসে মেট্রোপলিটন পুলিশের ৬ টি থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত হয়। ওইসকল হাউস ডেতে বক্তব্য রাখেন থানা এলাকার বাসিন্ধারা। তাদের বক্তব্যে বেড়িয়ে আসে থানা পুলিশের কিছু কর্মকর্তার ব্যর্থতা আর বিভিন্ন অপকর্মের অস্থানা ও অপরাধীদের নাম। পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান থানার ওসিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনে কাউকে বেঁধেদেন ৩ দিন, ৭ দিন আর ১ মাসের আল্টিমেটাম। কমিশনার সর্বশেষ ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানে শাহপরান থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেনকে ৭ দিন আল্টিমেটাম বেঁধেদেন। কথা ছিল ৭ দিনের মধ্যে থানা এলাকার ফুটপাত দখল মুক্ত করতে হবে ওসিকে। এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম থাকলেও মাত্র এক দিনেই উচ্ছেদ হলো সিলেট শাহপরাণ (র.) থানা এলাকার ফুটপাতের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। গতকাল শনিবার সকাল ১ টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত অভিযানে উচ্ছেদ করা হয়েছে আড়াই শতাধিক দোকানপাট।
দণি সুরমা:
দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি মুরসালিন জানান, গতকাল বিকালে চান্দের বাড়ির রাবেয়া-রিমার কলোনী থেকে ১০ নারী-পুরুষকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া অভিযান করা হয়, রেলস্টেশনের সিনু মিয়ার কলোনী, রহিমের কলোনী, শুকুরের কলোনী, ডগেরপাড়, কদমতলীর সাইমুন বক্সের কলোনী, হোটেল সায়েমন, হোটেল গ্রীণ, হোটেল শাপলা, হোটেল বিসমিল্লাহ, হোটেল আনন্দ ও হোটেল আল সাফায়। অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
গতকাল রেল স্টেশন এলাকা থেকে আটককৃতরা হচ্ছে, শাওন, আব্দুস শহিদ, আব্দুল মালেক পকাশ কাবুল, আব্দুল খালিক, রনি হিজরা, ময়না হিজরা, চাদনী হিজরা, মজিদ, তারেক ও মহিদা বেগম। এসময় ৩০ পুরিয়া হেরোইন ও ১০৩ পুরিয়া গাজা ও ২২ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। এর আগে শুক্রবার রাতে আটককৃতরা হলো, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার দেওয়র গাছ গ্রামের আকবর আলীর ছেলে সুরুত আলী, একই এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে আব্দুল মান্নান, একই জেলার বাহুবল তানার আলাপুর গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে ফয়ছল মিয়া, সুনামগঞ্জ জেলার নুরুজপুর গ্রামের বর্তমান বালুচরের মুছব্বির চেয়ারম্যানের বাড়ির মো.হজরত আলীর ছেলে আকবর আলী, শাহপরান থানার উত্তর বালুচর এলাকার মৃত জাবেদ আলীর ছেলে নায়েব আলী,,গোয়াইনঘাট উপজেলার উপরসাতাইন গ্রামের মৃত হুসেন মিয়ার ছেলে হেলাল উদ্দিন, দণি সুরমা উপজেলার লতিফুর গ্রামের ইব্রাহীম আলীর ছেলে আব্দুল আহাদ, বরিশাল জেলার সরুপকাঠি গ্রামের বর্তমানে লাউয়াই জিলামিয়র কলোনীর বাসিন্দা স্বপন দাশের ছেলে বিশ্বজিৎ দাশ, বিশ্বনাথ উপজেলার আলাপুর কালিগঞ্জ গ্রামের সফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান, সিলেট সদর উপজেলার সাহেববাজারের মুনো মিয়ার ছেলে সজিব আহমদ, একই এলাকার মৃত রহিম উদ্দিন মাষ্টারের ছেলে সাদিকুর রহমান।
শাহপরান থানা:
ওসি মো.শাখাওয়াত হোসেন জানান, গতকাল শনিবার নগরীর টিলাগড় থেকে সুরমা গেট পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে উচ্ছেদ করা হয় প্রায় আড়াই শতাধিক দোকানপাট। সাতটি দলে প্রায় ৭০ জন পুলিশ ফুটপাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেন। শাখাওয়াত হোসেন জানান, অভিযান অব্যাহত থাককে। থানা এলাকায় অপরাধীদের আটক করতে পুলিশী তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।