ভুল থেকেও শেখা যায়-আলোর পথে আসতে চায় তারা

DSC_0500 অহী আলম রেজা:: ‘ভুল সবই ভুল জীবনের পাতায় পাতায়’ জীবনের শুরুতে ভুল পথে পা বাড়ালেও নিজেদের শোধরে নিতে চায় তারা। সামান্য অসাবধানতায় লৌহ প্রকোষ্টে দিনানিপাত করলেও এবার তারা আলোর পথে আসতে চায়। পঁচা অতীত আর মনে রাখতে চায় না তারা।
অমিত, রনি, সায়মন, হোসেন এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। সহপাঠী-বন্ধুরা নিজ নিজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিলেও অমিতরা পরীক্ষা দিচ্ছে অন্যভাবে। ভিন্ন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি তারা। তাদের অবস্থান আজ কারা প্রকোষ্ঠে। কারাগারে বসেই দিতে হচ্ছে সবক’টি পরীক্ষা। কতইবা বয়স তাদের। কেউই আঠারোর কোঠা অতিক্রম করেনি। এর মধ্যে খারাপ বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে।
নগরীর পনিটুলার ফারুক মিয়ার ছেলে অমিত, নোয়াপাড়ার ফজলুর রহমানের ছেলে রনি, হাওলাদার পাড়ার মনজু মিয়ার ছেলে সায়মন, হাওলাদার পাড়ার মুসাহিদ আহমদের ছেলে হোসেন।
অমিত ও রনি সিলেট সরকারি কলেজের ছাত্র। সায়মন ও হোসেনের সিলেট বর্ডার গার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু অপরাধ কর্মের সাথে জড়িত হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ১৪৩/ ৩৩২/৩৩৫/৩০৭/ ৩৭৯/৫০৮ ধারায় মামলা হয়। একসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। অভিভাকরা আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে পরীক্ষার জন্য তাদের জামিন চাইলে আদালত কারাগারের মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
দেশব্যাপী রোববার থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলে তারা সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে। কারা কতৃপক্ষ তাদের পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করেছে।
অমিত, রনি, সায়মন, হোসেন নিজেদের ভুলের কথা স্বীকার করে বলেন, কীভাবে যে কি হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে শুধু পরীক্ষায় পাস নয় জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে চাই।
মদনমোহন কলেজ কেন্দ্রের সচিব সহকারী অধ্যাপক আবদুল হামিদ বলেন, আদালতের নির্দেশেই তাদের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। কারা কতৃপক্ষই সব ধরনের ব্যবস্থা করে রেখেছে। আমাদের শিক্ষকেরা প্রতিদিন একই সময়ে পরীক্ষা নিয়ে সিলগালা করে খাতা নিয়ে আসছে।
সিনিয়র জেলসুপার মো. ছগির মিয়া জানান, পরীক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে কারাগারেই তাদের পরীক্ষার ব্যস্থা করা হয়েছে। কেন্দ্রের শিক্ষকবৃন্দ পরীক্ষা গ্রহণ করছেন। তিনি বলেন, আমরা অপরাধীদের সংশোধন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। শুধু পরীক্ষার্থীই নয়; যারা লেখাপড়া করতে চায় তাদেরও সুযোগ করে দেয়া হয়।