শাবি শিক্ষকদের ছুটির হিড়িক-ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
শাবি প্রতিনিধি :: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কর্মরত এক পঞ্চমাংশ শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে ছুটিতে থাকায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় অচল। ফলে সেশনজটও বাড়ছে। আর ভোগান্তিতে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ২৬টি বিভাগে শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ৪৮৭ জন। কিন্তু এদের মধ্যে ১০৭ শিক্ষক শিক্ষা ছুটিসহ অন্যান্য ছুটিতে রয়েছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষকের এক-পঞ্চমাংশ। এ বিপুল সংখ্যক শিক্ষক ছুটিতে থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগই সেশনজটের কবলে পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান, বায়োক্যামেস্ট্রি অ্যান্ড মলিক্যুলার বায়োলজি, নৃবিজ্ঞান বিভাগে দুইজন করে, রসায়ন এবং পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে তিনজন করে, গণিত, ইংরেজী, ব্যবসায় প্রশাসন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম বিভাগে চারজন করে, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি, সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পাঁচজন করে, পরিসংখ্যান, আর্কিটেকচার, সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, লোক প্রশাসন বিভাগে ছয়জন করে, ,ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সাতজন, অর্থনীতি বিভাগে ১০ জন, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ১১ জন করে, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগে ১৫ জন শিক্ষক ছুটিতে আছেন।
এর মধ্যে ১১টি বিভাগের ২১ শিক্ষক পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে ছুটিতে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। এ শিক্ষকদের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নমনীয় মনোভাবের কারণে অনেক শিক্ষক নির্ধারিত ছুটি শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে না ফিরলেও এ শিক্ষকদের পেছনে প্রতিবছর বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাবদ কোটি কোটি টাকা খরচ করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অন্যদিকে, শিক্ষকদের এমন উদাসিনতার কারণে বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের উদাসিনতায় লেখাপড়ায় বিরূপ প্রভাব পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন জানান, একজন শিক্ষক নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ পাঁচ বছর স্ব-বেতনে শিক্ষা ছুটি নিতে পারেন। কিন্তু যারা এই সময় অতিক্রম করে তাদের প্রশাসন দুই দফা চিঠি দেয়। এরপর মামলা করা হয়। এ পর্যন্ত ১৫ জনের শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জন শিক্ষক টাকা ফেরত দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।