বিআরটি আইনের অনুমোদন দিলো সরকার
ডেস্ক রিপোর্ট :: গাজীপুর থেকে ঢাকায় যাতায়াত দ্রুত ও নির্বিঘ্ন করতে পৃথক দুই লেনে বাস চলাচলের জন্য একটি আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গাজীপুর থেকে ঢাকায় দ্রুত সময়ে যাতায়াতের জন্য পৃথক দুটি লেনে বাস রেপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নামে আলাদা বাস যাওয়া আসা করবে। এতে গাজীপুর থেকে ঢাকার বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ মিনিটে যাওয়া আসা সম্ভব হবে।
সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘রেপিড ট্রানজিট (বিআরটি) আইন, ২০১৬ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর সঙ্গে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের জনসাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন, দ্রুত ও আরামদায়ক করাই উদ্দেশ্য। গাজীপুর থেকে ২০ মিনিটে বিআরটি বাস চলে আসবে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত। ছয় লেনের রাস্তায় দুইটি লেন দিয়ে শুধু বিআরটি বাস চলবে, অন্য কোনো যানবাহন চলবে না। দুই পাশে দুইটি লেন থাকবে।
খসড়ায় ৫৩টি ধারা ও ১০টি অধ্যায় রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব বলেন, নবম অধ্যায়ে বিভিন্ন অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। একটি ধারায় মোবাইল কোর্টের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে।
আইনের খসড়ায় জেল-জরিমানা এবং দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ছাড়াও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিধান রাখা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া বিআরটি নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড।
অনুমোদন ব্যতিরেকে লাইসেন্স হস্তান্তর করলে ১০ বছর জেল বা ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে খসড়ায়।
অনুমোদনহীন বিআরটি বাস টিকিট বিক্রয় বা পাস বিক্রি বা জাল করলে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়। আর কর্মচারী কর্তৃক করলে দুই বছরের কারাদণ্ড ও অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা হবে।
বিআরটি পরিচালনাকালে দুর্ঘটনার ফলে কোনো ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা গেলে ক্ষেত্রমতে তার পরিবারকে বিধি-ধারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
বিআরটি পরিচালনাকালে দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত হলে আহত ব্যক্তি বা কর্মচারীকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিতসহ নিকটস্থ হাসপাতালে প্রেরণের ব্যবস্থাও করতে হবে। আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির চিকিৎসা প্রদান, যদি নিজ উদ্যোগে চিকিৎসা গ্রহণ করে তাহলে লাইসেন্স গ্রহীতাকে খরচ প্রদান করতে হবে।
আর কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে লাইসেন্স গ্রহীতার কাছে ক্ষতিপূরণ দাবির ৯০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সচিব জানান, ভাড়া নির্ধারণের সময় সরকার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেবেন এবং সরকার তা অনুমোদন দেবেন। নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে ভাড়া নির্ধারণের জন্য সাত সদস্যের কমিটি গঠনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, কমিটি ভাড়া যাচাই-বাছাই করবে।
এ ছাড়া মন্ত্রিসভায় কারিগরি সহায়তাসংক্রান্ত একটি বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরের জন্য একটি খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ খসড়া অনুযায়ী, ভারতের কাছ থেকে পরমাণু নিউক্লিয়ার এনার্জি বিষয়ে কারিগরি সহায়তা বিশেষ করে জ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নেওয়া যাবে।