হবিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অপহৃতা ছাত্রী কোম্পানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার
ডেস্ক রিপোর্টঃ হবিগঞ্জ শহরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে অপহরণের ২০ দিন পর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশ অপহরণকারী আব্দুল করিমকে গ্রেফতার করে। বুধবার সন্ধ্যায় উদ্ধার হওয়া ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করার পাশাপাশি ২২ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্র ও মামলার বিবরণে জানা যায়, লাখাই উপজেলার কাটিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা, বর্তমানে হবিগঞ্জ শহরের রাজনগর এলাকায় বসবাসকারী আবু তাহের চৌধুরীর কন্যা হবিগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণীতে অধ্যয়ন করছে। ১৬ ডিসেম্বর সকালে মেয়েটি বাসা থেকে বের হয়ে স্কুলে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যায়। সন্ধ্যার পরও মেয়েটি বাসায় না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন মেয়েটির বান্ধবীদের কাছ থেকে জানতে পারেন হবিগঞ্জ শহরের কামারপট্টি (চিড়াকান্দি-রাধানগর) এলাকার মকসুদ আলীর ছেলে আব্দুল করিম ও তার সহযোগীরা মেয়েটিকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় ১৮ ডিসেম্বর মেয়েটির পিতা হবিগঞ্জ সদর থানায় অপরহণ মামলা দায়ের করেন। এতে সদর থানা পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে পুলিশ জানতে পারে আব্দুল করিম মেয়েটিকে নিয়ে চট্টগ্রামে তার এক বন্ধুর বাসায় কিছুদিন থাকার পর সিলেট কোম্পানীগঞ্জ থানার লাছুখাল গ্রামের মজিবুর রহমান মিয়ার বাড়িতে অবস্থান করছে।
বুধবার ভোরে হবিগঞ্জ সদর থানার এসআই ওমর ফারুক ও এসআই পার্থ রঞ্জন দাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় সেখানে অভিযান পরিচালনা করে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ অপহরণকারী আব্দুল করিমকে আটক করে।
আটকের পর পুলিশের কাছে মেয়েটি জানায়, আব্দুল করিম একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করতো। দেড় বছর পূর্বে করিমের সাথে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ প্রেমের মর্যাদা দিতে আমি স্বেচ্ছায় তার সাথে পালিয়ে যাই।
এ সময় পুলিশের কাছে আব্দুল করিমও জানায়, প্রেমের টানেই আমি তাকে নিয়ে পালিয়ে এসেছি। আমি তাকে অপহরণ করিনি।
এদিকে পুলিশ জানায়, আদালতে ২২ ধারায় স্বীকারোক্তিতে মেয়েটি বলেছে- তাকে আব্দুল করিম জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই ওমর ফারুক জানান, অপহৃতা মেয়েটিকে উদ্ধার করতে মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও বিভিন্ন টেকনোলজি ব্যবহার করে অপহরণকারীর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে উদ্ধার করি। অপহৃতা মেয়েটির ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। অপহরণকারী আব্দুল করিমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।