আরিফ-হারিছ চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলার চার্জশিট আদালতে গ্রহণ
ডেস্ক রিপোর্টঃ ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারী হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিচারক জেলা ও দায়রা জজ আতাবুলাহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে দাখিলকৃত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ ফেব্র“য়ারি।
মঙ্গলবার সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কারাগারে থাকা হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ১১ আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমর্জশীট। এর পূর্বে ১ম চার্জশীটে ১০ জন এবং ২য় চার্জশীটে ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল করা হয়। ৩য় চার্জশীটে মোট ৩৫ জনকে ন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের নবনির্বাচিত মেয়র জিকে গউছকে অসুস্থ্যতার জন্য হাজির করা হয়নি। এছাড়া জামিনে থাকা ৮ আসামীও আদালতে হাজিরা দেন। এ মামলায় ১০ আসামী পলাতক রয়েছেন।
একই ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলাটি বর্তমানে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্বাক্ষী গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। বিস্ফোরক মামলাটি বিচারের জন্য হবিগঞ্জের দায়রা জজ আদালতে ১৩ নভেম্বর প্রেরণ করা হয়।
হবিগঞ্জের পিপি অ্যাডভোকেট আকবর হোসেন জিতু জানান, কিবিরিয়া হত্যাকান্ডে দায়েরকৃত বিস্পোরক মামলার চার্জশীট গ্রহণ শেষে পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে। গ্রেফতার না হলে মাল ক্রোক এবং পরবর্তিতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের পর মামলার বিচার কাজ শুরু হবে। বিস্ফোরক মামলার চার্জশীটে ৩২জনকে আসামী করা হয়। এর মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের মেয়র আলহাজ্জ জিকে গউছসহ ১৫জন কারাগারে, ৮ জন জামিনে, ৯জন পলাতক রয়েছেন।
বিস্ফোরক মামলায় এটি ৩য় চাআসামী করা হয়েছে। ১ম চার্জশীটের ১০ জনের মধ্যে ৮ জন জামিনে। দুই আসামী কাজল আহমেদ ও মহিবুর রহমান ২০০৫ সাল থেকেই পলাতক। তাদেরকে ১০ বছরেও গ্রেফতার করা যায়নি।
আদালত সূত্র জানায়, গত ১২ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেরুন্নেছা পারুল কিবরিয়া হত্যকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার কারাগারে থাকা আসামীদেরকে বিস্ফোরক মামলায় শ্যোন এ্যারেস্ট দেখানোর আবেদন করেন। এ প্রেক্ষিতে গত ১ জুন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, আরিফুল হক চৌধুরী ও আলহাজ্ব জি কে গউছসহ কারাগারে থাকা সকল আসামীকে শ্যোন এ্যারেস্ট দেখানোর আদেশ দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা সম্পূরক চার্জশীট তৈরি করে গত ১০ আগস্ট সবার অগোচরে তা দাখিল করেন। এর আগে কিবরিয়া হত্যাকান্ডের সম্পূরক চার্জশীটও তিনি সবার অগোচরে দাখিল করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা শেষে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া, তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ ৫ জন। এতে আহত হন বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপিসহ ৪৩ জন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল মজিদ খান এমপি বাদি হয়ে সদর থানায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন। হত্যা মামলার বিচারের কাজ সিলেটের দ্রুত বিচার আদালতে শুরু হয়েছে।