মাঠেই উপেক্ষার জবাব দিলেন অলক কাপালি
স্পোর্টস ডেস্কঃ অলকের ব্যাটে ভর করেই তৃতীয়বারের মতো শিরোপা ওঠলো মাশরাফির হাতে। কঠিন হয়ে যাওয়া ম্যাচকে দূর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বের করে আনলেন অলক। জাতীয় দলের এককালের এই তারকার সঠিক সময়ে জ্বলে ওঠায় বিপিএলের এবারের আসরের চ্যাম্পিয়ান কুমিল্লা।
অথচ এই অলক কাপালিকেই প্লেয়ার্স বাই চয়েজ-এ নিতে চায় নি কোনো দল। কেউ আগ্রহ দেখায় নি তার প্রতি। সেই উপক্ষের জবাব মাঠেই দিলেন অলক কাপালি। ব্যাটের ঝলকানির মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন এখনো ফুরিয়ে যান নি তিনি।
প্লেয়ার্স বাই চয়েজ-এ দল না পেয়ে আহত হয়েছিলেন অলক। নিজের ক্ষোভ আড়াল করতে পারেন ন সেসময়। সিলেটটুডেকে বলেছিলেন, ’আমার লবিং নেই তাই দল পাই নি, আমার থেকে বাজে পারফরম করা অনেকেও দল পেয়েছে। কিন্তু আমাকে ডাকা হয়নি।’
সিলেট বিভাগীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক অলক কাপালী বিপিএলের প্রথম আসরে ছিলেন আইকন ক্রিকেটার, শুরুর দিকে করেছিলেন সিলেট রয়্যালসের অধিনায়কত্ব। পরের আসরে বরিশাল বার্নাসের হয়েও বলার মত পারফরম্যান্স ছিল তাঁর। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট লীগের নিয়মিত পারফর্মার এই তারকা গত জাতীয় লীগ এবং বিসিএল এ শীর্ষ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সেরা পাঁচে ছিলেন।
এই অলকই শেষ পর্যন্ত ফাইনালে জেতালেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে! ২৮ বলে অপরাজিত ৩৯ রানের অসাধারণ এক ইনিংসের বিপিএলের ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে জয় এনে দিয়েছেন অলক। রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে কুমিল্লা ৩ উইকেটে হারিয়েছে বরিশাল বুলসকে।
এক পর্যায়ে শেষ ৯ বলে ২৩ রান দরকার ছিল কুমিল্লার। হাত থেকে ছিটকে যাচ্ছিল ম্যাচ। বেশ অনেকক্ষণ উইকেটে থেকেও তখনও ডানা মেলতে পারেননি অলক। ২১ বলে রান ছিল ১৮।
সেখান থেকে হঠাৎ করেই ঝড় তুললো অলকের ব্যাট। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার সেরা সময়কে মনে করিয়ে দেওয়া দারুণ সব শটে অসাধারণ এক জয় এনে দিলেন কুমিল্লা।
বেশিরভাগ ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পান নি, এক ম্যাচে ৩২ রানে অপরাজিত থেকে কিছুটা দাবি মেটালেও অলকের নামের তুলনায় তা বলার মত কিছু ছিল না। নিষিদ্ধ আইসিএলে গিয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন, ভারতীয় বোর্ডের নিষিদ্ধাদেশের কারণে ওই টুর্নামেন্টের কোন রেকর্ড এখন আর টি-টুয়েন্টির তকমা পায় না নাহলে যেকোনো পর্যায়ের টি-টুয়েন্টিতে প্রথম কোন বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনিই। নান্দনিক ব্যাটিংয়ের জন্য একসময় দেশি বিদেশি ক্রিকেট বিশ্লেষকদের কাছ থেকে পেয়েছিলেন অনেক প্রশংসা। পরবর্তীতে অলকের নামটা আক্ষেপেরই সমার্থক হয়ে ছিল।
ফাইনালের বরিশাল বুলসের দেয়া ১৫৭ টার্গেটে মাশরাফি তাঁকে চার নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানোয় দেশি ধারাভাষ্যকার শামিম আশরাফ সমালোচনা করলেন, বিদেশি প্যাট সিমকক্স অবশ্য দ্বিমত করলেন শামিমের সাথে। ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরনি পরিচালনা করে সেই শামিমকেই ম্যাচ সেরার জন্য অলকের নাম ঘোষণা করতে হল।
অথচ মাশরাফি মালিকপক্ষকে অনুরোধ না করলে কুমিল্লার হয়ে খেলাই হয় না তাঁর! পরে অলকের প্রতি আগ্রহী ছিল রংপুর রাইডার্স্। টানাপোড়েন শেষে কুমিল্লায় খেলে ফাইনালের নায়কই হলেন তিনি।