সুন্দরবনে ৪০ জলেকে অপহরণ : মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি
ডেস্ক রিপোর্টঃ পূর্ব সুন্দরবনে ৪০ জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বনদস্যু নয়ন বাহিনী শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের তিনটি পয়েন্টে হানা দিয়ে তাদেরকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃতরা সবাই কাঁকড়া আহরণকারী। ৫০ হাজার টাকা করে প্রত্যেক জেলের মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করেছে দস্যু বাহিনী। অপহৃত জেলেদের মহাজনরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অপহৃতদের মধ্যে ৬ জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামের তুহিন হাওলাদার (১৮), ইয়াছিন হাওলাদার (২০), আলতাফ হাওলাদার (৩৫), দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের নাঈম হোসেন (২২), আকাব্বর আলী (৩৮) ও আলামীন হাওলাদার (২৭)। তাৎক্ষণিকভাবে অন্য জেলেদের নাম জানাতে না পারলেও তাদের বাড়ি শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মহাজনরা।
ফিরে আসা জেলেদের বরাত দিয়ে মহাজনরা জানান, চার দিন আগে অর্ধশতাধিক নৌকা শরণখোলা স্টেশন ও চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন থেকে এক সপ্তাহের পাস (অনুমতি) নিয়ে বনে কাঁকড়া আহরণ করতে যান দুই শতাধিক জেলে।
ওই জেলেরা সোমবার বনের নিশানবাড়িয়া, পাকগুদি ও তাম্বলবুনিয়া খালে কাঁকড়া আহরণ করছিলেন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু করে রাত ১২টা পর্যন্ত নয়ন বাহিনীর ১০-১২ জন সশস্ত্র দস্যু একের পর এক ওই তিন পয়েন্টে হানা দিয়ে জেলেদের অপহরণ করে নিয়ে যায়। প্রত্যেকের মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা করে নির্ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের তানজের বয়াতী ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার ফুলহাতা এলাকার ছগির ভান্ডারী কিছু অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যৌথভাবে নয়ন বাহিনী নামে নতুন দস্যুদল গঠন করেন। এরা আগে দুধর্র্ষ বনদস্যু ফেরাউন বেল্লাল ও শীষ বাহিনীর সদস্য হিসেবে কাজ করতো। তারা নিহত হওয়ার পর এই নতুন বাহিনী গঠন করে তারা।
বাহিনীর পরিচালক ও গডফাদার হিসেবে রয়েছেন তানজের বয়াতীর ভাইপো রুস্তম বয়াতী ওরফে খোঁড়া রুস্তম। তিনি এলাকায় বসে টোকেন ও বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা কালেকশন ও অস্ত্র সরবরাহ করে থাকেন। সব সেক্টরে যোগাযোগও রক্ষা করেন তিনি।
সমপ্রতি ওই বাহিনী নিজেদেরকে জানান দেয়ার জন্য শরণখোলা রেঞ্জের দুধমুখী, শ্যালা ও চাঁদপাই রেঞ্জের তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় মহড়া দিয়ে জেলেদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে। তারা এই প্রথমবার ৪০ জেলেকে অপহরণ করল।
শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) একেএম ইউসুফ আলম ও ধানসাগর স্টেশনের ফরেস্টার মিজানুর রহমান জেলে অপহরণের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম মিয়া জানান, অপহরণের বিষয়টি মহাজনদের মাধ্যমে তিনি জেনেছেন। এব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।