তাহিরপুরে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বেকায়দায় বিএনপি আওয়ামীলীগ
কামাল হেসেন,তাহিরপুরঃ সুনামগঞ্জ জেলার হাওর অধ্যষিত তাহিরপুরে জমে উঠেছে উপজেলা নির্বাচন প্রচরি প্রচারণা। প্রার্থীরা তফসিল ঘোষনার আগে থেকে শুররু করেছে প্রচার-প্রচারনা। বর্তমানে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন দুই দলের দলীয় প্রার্থীরা। সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যে তাহিরপুর হচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। কোন ব্যক্তি রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে এক বার ক্ষমতায় যেতে পারলেই হয়ে যায় আঙ্গল ফুলে কলাগাছ। তাই এই উপজেলার উপর শকুনের মতো দৃষ্টি থাকে সকলেরই। এখানে রয়েছে শুল্ক ষ্টেশন,বড় বড় জলমহাল,ফাজিলপুর বালি-পাথর কোয়ারীসহ চাঁদাবাজির জন্য যাদুকাটা ও পাটলাই’র মতো সীমান্ত নদী। এগুলো হল অর্থের খনি। এসব স্থান দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ-বিএনপির মধ্যে চলে বিরাট প্রতিযোগীতা। হয়েছে গুলাগুলি ও সংঘর্ষ। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেষ কাটতে না কাটতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা পর এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী ও বৃত্তশালীরা নিজেদের দক্ষতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে চিন্তা না করেই ক্ষমতার লোভে প্রার্থী হয়ে মাঠে নেমেছেন। অনেক প্রার্থী রয়েছেন যারা রাজনৈতিক দলের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তারা আজ দিচ্ছেন দলের পরিচয়। এনিয়ে তারা জড়িয়ে পড়েছেন রীতিমতো গৃহযুদ্ধে। উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে জোর করে অন্যের জায়গা ও বসতবাড়ি দখলসহ টেকেরঘাটে অবস্থিত বিসিআইসির পাহাড়ী টিলা কেটে কয়লার ডিপো নির্মাণ করা ও বাসাবাড়ি দখলের অভিযোগে মামলা রয়েছে। এছাড়াও সরকারী জায়গা দখল করে বাজার নির্মাণ করে কোটি টাকার বাণিজ্য করাসহ এসব প্রার্থীদের সম্পত্তির হিসেব ঠিকমতো না দিলে নির্বাচন অফিস তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি।এর পরও প্রার্থীরা ভোটারদের বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্র“তিসহ হাওড় রক্ষা বাধাঁ, রাস্তাঘাট ও উন্নয়ন, নদী-নালায় চাঁদাবাজি বন্ধ সহ বিভিন্ন অশ্বসা দিয়ে ভোটরদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন। এমন কি কাকডাক ভোর সকাল থেকে সারা রাত ভোটারদেও দারেদারে ঘুওে ভোট ভিক্ষাসহ এলাকার বিভিন্ন সমাজিক অনুষ্টানে উপস্থিত নগদ অর্থ দানেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি সাধারন ভোটাররা প্রার্থীরা বিগত দিনে কে কি করছে তার চুল ছেড়া বিশ্লেষন করছে। ৪র্থতম উপজেলা নির্বাচনে তাহিরপুর উপজেলায় এবার ১৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬জন,ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৪জন ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে ৭জন। চেয়ারম্যান পদে বিএনপির দলীয় প্রার্থী হলেন-সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি, তাহিরপুর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান আনিসুল হক (কাপ-পিরিচ)।- এছাড়া বিদ্রোর্হী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন-উত্তর বড়দল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাসেম (মোটর সাইকেল), যুক্তরাজ্য বিএনপির মুক্তি যোদ্ধা বিষক সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল (ঘোড়া)।- অন্যদিকে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী হলেন-উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খাঁ (হেলিকপ্টার)।- কিন্তু তার বিরুদ্ধে রয়েছে যুদ্ধাপরাধ ও বিসিআইসির সরকারী বাসা-বাড়ি ও জায়গা দখলের মামলাসহ পাটলাই নদীতে চাঁদাবাজি অভিযোগ। তাছাড়া এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে দূব্যবহার করাসহ এই প্রার্থীর আচার-আচরন নিয়ে রয়েছে বিরাট সমালোচনা। তাকে দলীয় প্রার্থী করার কারণে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন-বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান,উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন খন্দকার লিটন (আনারস),বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন (দোয়াত-কলম)। আর ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে হাজী লিয়াকত (উড়োজাহাজ),রতন মিয়া (তালা),ফেরদৌস আলম আখঞ্জী (চশমা), এডভোকেট প্রবীর রায় (টিউবওয়েল)।- ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে বর্তমান চেয়ারম্যান আসিয়া আফিন্দি (কলস),আসিয়া বেগম (ফুটবল),খালেদা বেগম (প্রজাপতি),শাহেদা বেগম (পদ্মফুল),সুলতানা বেগম (হাঁস),নাসিমা আক্তার (সেলাই মেশিন),হেনা আক্তার (পাখা)।- তাহিরপুর উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১লক্ষ ১৫হাজার ১শত ৮৭জন। তার মধ্যে পুরুষ ৫৮হাজার ১শ ৮৭জন ও মহিলা ৫৭হাজার। আগামী ৩১শে মার্চ অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের যোগ্যতা,দক্ষতা ও শিক্ষা নিয়ে হচ্ছে আলোচনার ঝড়। প্রার্থীদের অতীত-বর্তমান ও আচার-আচনরসহ তাদের কর্মকান্ড উপর বিবেচনা করেই ভোটাররা তাদের মূল্যবান ভোট প্রদান করবেন এমনটাই জানাগেছে তাহিরপুর নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের কাছ থেকে।