হাকালুকি হাওরের অতিথি পাখি রক্ষায় পাখি শিকার মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ কমিটি হচ্ছে
বিশ্বজিৎ রায়, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : এশিয়ার বৃহত্তম হাওর ও দেশের সর্ববৃহৎ অতিথি পাখির সমাগমস্থ হাকালুকিতে এবার এখনও অতিথি পাখিদের আনগুনো দেখা যায়নি। প্রাকৃতিক বৈরিতার কারণে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী ও শীত বিলম্বিত হওয়ার কারণেই মুলত অতিথি পাখির পদচারণা ঘটেনি। তবে এবার পাখির অতিথি পাখিদের আবাসস্থল নিরাপদ করতে পাখি শিকার মনিটরিং এবং নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠনের প্রস্তাবনা এসেছে। দেশের বৃহত্তম এই পাখির আবাসস্থলে প্রতি বছর লাখ লাখ পাখি বিচরণ করে এই হাওরে। পাখি শুমারি ও হাওরে উন্নয়ন কাজে কর্মরত বেসরকারি সংস্থার তথ্যমতে হাকালুকি হাওরে ৪১৭ প্রজাতির পাখি বিচরণ করে। মুলত হাওরে সেপ্টেম্বর মাস থেকে আসতে শুরু করে শীতের অতিথি পাখিরা। চলতি বছর বর্ষাকাল দীর্ঘ হাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে হাওরে। এখনও বন্যার পানি রয়েছে হাওরে। তাছাড়া ভাদ্র মাসে শীতের জন্ম। আশ্বিন ও কার্তিক মাসে শীত তীব্র আকার ধারণ করে। কিন্তু এবার শীত আসতে বিলম্বিত হচ্ছে। কার্তিক মাসের শেষলগ্নে এসে হালকা শীত অনুভুত হচ্ছে। ফলে শীত বিলম্বিত হওয়ায় এখনও পাখিদের আগমন পরিলক্ষিত হয়নি। গত ফেব্রুয়ারি মাসের পাখি শুমারির তথ্যঅনুসারে ৫৬ প্রজাতির প্রায় ২২ হাজার পাখি জরিপে অংশ নেয়া বার্ড কাবের সদস্যরা গণনা করেন।
প্রতি বছরই রাতের আধাঁরে বিষটোপে অতিথি নিধন কর কিছু অসাধু লোক। বিষটোপে পাখি নিধন বন্ধ করতে হাওরে উন্নয়নকাজে কর্মরত ইউএসএআইডি’র ক্রেল প্রকল্প পাখি শিকার মনিটরিং এবং নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে একটি প্রাথমিক প্রস্তাবনা গ্রহণ করেছে। হাকালুকি হাওরের ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। যদিও এব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়নি। তবে পাখি শিকার মনিটরিং এবং নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠন করা হলে শীতকালে হাওরে আসা অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ করবে। ফলে প্রতি বছর হাওরে আসা অতিথি পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। পাখি যত বেশি বিচরণ করবে, মাছের খাদ্য তত বেশি হবে। মাছের উৎপাদনও বাড়বে। মাছের উৎপাদন বাড়লে হাওরের উপর নির্ভরশীল জেলে তথা মানুষের জীবনমানেও আসবে পরিবর্তণ। এক কথায় হাওরের ইকো সিষ্টেম রক্ষা পাবে।
এ ব্যাপারে ইউএসএআইডি’র ক্রেল প্রকল্পের মাঠ কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদুর রহমান জানান, প্রস্তাবিত এই কমিটি গঠন করা হলে হাওরে আসা অতিথি পাখি নিধন কমবে। এই কমিটি উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন হলে পাখি নিধনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে। হাওর তীরের ৫টি উপজেলায় কমিটির পাশাপাশি জেলা পর্যায়েও মনিটরিং কমিটি থাকলে উপজেলা কমিটিকে তদারকি করতে পারবে। খুব দ্রুত কমিটি বাস্তবায়নে কাজ চলছে।