কমলগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে নির্মাণাধীন ঘর ভাঙচুর : আহত ৫
কমলগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের ভরতপুর গ্রামের তোতা মিয়ার বাড়িতে সোমবার ভোর রাতে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রায় অর্ধ শতাধিক মুখোশধারী লোক প্রবাসি বাড়ির লোকদের বেঁধে মারধোর করে নগদ টাকা সহ মালামাল লুট করেছে। নির্মাণাধীন পাকা ঘরে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ঘরের ইটের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। ডাকাতদের হামলায় মহিলা সহ ৫জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বসতভিটের ২ শতক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তোতা মিয়ার সাথে পাশের ভিটার মালিক মশু মিয়ার বিরোধ চলছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনা ঘটেছে। তোতা মিয়ার প্রবাসী ছেলে মোশাইদ মিয়ার স্ত্রী আম্বিয়া বেগম বলেন, রাত অনুমান ৩ টার দিকে পাশের ভিটার মালিক মশু মিয়ার সাথে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জনের মুখোশধারী ডাকাতরা লম্বা দা, লোহার রড, হাতুড়ি নিয়ে তাদের বসতঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময়ে তাঁর শাশুড়ি আমিনা বেগম (৬০), বেড়াতে আসা ননদের জামাই আশিক মিয়া (৩৬), দুই ভাই আমজদ মিয়া (১৮), রাহেল মিয়া (২০) কে হাত পা বেঁধে উঠানে ফেলে মারধোর করে। কেউ কিছু বলতে গেলে গলায় দা ধরে খুন করার হুমকি দেয়। পরে তাকেও হাত বেঁধে কিল লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। পাকা ঘরের টিন ও মালামাল ক্রয় করার জন্য ব্যাংক থেকে তোলে আনা নগদ ১ লাখ টাকা, ৬টি মোবাইল ফোন, ৪টি বিদেশি কমল, ২টি চার্জার লাইট, স্বর্নের ১টি চেইন, কানের দু’টি স্বর্নের দুল ও আলমিরা থেকে মূল্যবান কাপড় চোপড় সহ প্রায় ৩ লাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায়। আম্বিয়া বেগম আরও বলেন, ডাকাতরা ৫ থেকে ৬ জনের গ্র“প হয়ে চতুর্দিকে একসাথে হামলা শুরু করে। তাদের বেঁধে ফেলে জমির দলিল খুঁজতে থাকে ও হাতুড়ি, খন্তি দিয়ে নির্মাণাধীন পাকা ঘরের ইটের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যায়। তোতা মিয়া জানান, পাশের ভিটের মালিক মশু মিয়া ২ শতক ভূমি দাবি করে আসছিল। আর এখন ঘর তৈরি করতে যাওয়ায়ই সে ভাড়াটিয়া লোকজন এনে জঘন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই রাতে তিনি আত্মীয় বাড়িতে ছিলেন। তার দুই ছেলে দুবাই চাকুরী করে পাকা ঘর তৈরির জন্য টাকা পাঠিয়েছিল। এ বিষয়ে তার স্ত্রী আমিনা বেগম থানা পুলিশকে জানিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অভিযোগ বিষয়ে মশু মিয়াকে না পেয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন (০১৭৪০৯৯৪৫৩১) কল করে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মশু মিয়ার শ্বশুর বাড়ির আত্মিয় জানান, জমিজমা নিয়ে অনেক বৈঠক হলেও তোতা মিয়া মানতে রাজি না হওয়ায় মশু মিয়ার ভাই ভাতিঝারা পাকা ঘর ভাংচুর করেছে বলে তাদেরকে জানিয়েছে।
এ ঘটনায় শমশেরনগর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হাতুড়ি, লোহার রড, খন্তি ও হাত পা বাঁধার কাজে ব্যবহৃত কিছু সুতলি জব্দ করেছেন।
কমলগঞ্জ থানার ওসি এনামুল হক বলেন, তিনি মহিলার মৌখিক অভিযোগ পেয়েছেন। জমি সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।