এতীম ও প্রতিবন্ধী কোটায় চাকুরী দয়া বা ভিক্ষা নয়, সাংবিধানিক অধিকার
সোহেল আহমদ রানাঃ পৃথিবীতে মানুষ সমাজের মধ্যেই বসবাস করে। মানুষ পৃথিবীর নিয়ম মেনে চলে। মানুষ তার দেশের নিয়ম মেনে চলে। মানুষ তার সমাজের নিয়ম মেনে চলে। পৃথিবীর সব মানুষ শান্তিতে বাঁচতে চায় । কিন্তু অনেক মানুষ জন্মগত ভাবে বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গ বিহীন প্রতিবন্ধী হিসেবে পৃথিবীতে জন্ম গ্রহন করে। মহান আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে এই ভাবে সৃষ্টি করেছেন।
পৃথিবীর বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী আশ্রয় কেন্দ্র ও নিজ উদোগে তারা শত প্রতিকুলতা মধ্য দিয়ে সমাজে বড় হয়েছে। লেখাপড়া করেছে। একটি শিশু ছোট রেখে যখন তার বাবা মারা যান। তখন ওই পরিবার ও এতীম শিশুটি খুবই অসহায় পড়ে। এতীম শিশু বলতে আঠারো বছরের নীচ পর্যন্ত এতীম বলা হয়। তখন সে লেখাপড়া করার জন্য কোন আশ্রয় স্থলে খোঁজতে থাকে।
পৃথিবীর অনেক সরকারী বেসরকারী রেজিকৃত এতীমখানা রয়েছে। এতীম শিশু যে এতীমখানায় পড়বে সেখান থেকে এতীম শিশু সনদ পাওয়া তাদের মৌলিক অধিকার। কিন্তু অনেক এতীমখানা তাদের সে অধিকার দিচ্ছে না। সেখান থেকে এতীম শিশুরা সমাজের বিত্তশালীদের সাহায্য ও সরকারী অর্থায়ানের অনেক কষ্টের বিনিময়ে লেখাপড়া করে আসছে। যাহোক মাধব প্রজাতির বাগানে এতীম ও প্রতিবন্ধী শিশুরা কুসুম কলি।
যারা মনে করে মানব ভবিষ্যতের আগামী দিন বর্তমানের এতীম ও প্রতিবন্ধী শিশুরা। তাদের উচিত এসব এতীম ও প্রতিবন্ধী শিশু নামক কলিকে ফুটে উঠতে দেওয়া। এতীম ও প্রতিবন্ধীরা জীবনের অনেক ঝুঁকি নিয়ে লেখাপড়া করেছে। এতীমখানায় অবস্থান করে এতীম শিশুরা এসএসসি ও এইচএসসি পরিক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাশ করেছে। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ও তাদের এতীম কোটায় চাকুরী হয় না ।
এতীম ও প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগে চাকুরী দেয়া ভিক্ষা নয়। কারো কাছে দয়া নয়। এতীম ও প্রতিবন্ধী কোটায় চাকুরী দেয়া এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। প্রতিটি নিয়োগে পরিক্ষায় উল্লেখ থাকে সরকারী বিধি মোতাবেক কোটা প্রযোজ্য। মুক্তিযোদ্ধা, এতীম, প্রতিবন্ধী, উপজাতি, পোষ্য. আনসার ভিডিপি সদস্য, কোটা দেওয়া থাকে। প্রতিটি দেশের সংবিধানে উল্লেখ আছে এতীম/প্রতিবন্ধীর কোটার কথা।
পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রের কিছু অসাধু ব্যক্তির জন্য আজ এতীম/প্রতিবন্ধীরা তাদের অধিকার ফিরে পাচ্ছে না। নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এতীম/প্রতিবন্ধীদের কে তাদের অধিকার দিচ্ছেন না।
কিন্তু বাস্তবে এতীম ও প্রতিবন্ধী কোটায় চাকুরী হয় না। বাস্তবতার কাছেই পৃথিবীতে এতীম ও প্রতিবন্ধী খুবই অসহায়। এম পি ও মন্ত্রীর ডিও লেটার আর মোটা অঙ্কের টাকা এতীম/প্রতিবন্ধীরা দিতে পারে না। তাই তাদের কোটায় তাদের চাকুরী হয় না।
তাই আমি সারা পৃথিবীর সভ্য সমাজ ও জাগ্রত বিবেক বলবে আসুন। আমরা হাতে হাত রাখি। আমরা একসাথে সাথে সারা পৃথিবীতে এতীম ও প্রতিবন্ধীর অধিকারে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি।
আপনারা পৃথিবী ও সমাজের সভ্য মানুষ আপনারা একটু দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করলে পৃথিবীর সকল এতীম ও প্রতিবন্ধীরা ফিরে পারে তার অধিকার। আপনি যদি হঠাং মারা যান তাহলে হয়ত আপনার এতীম” শিশুটি কোন এতীমখানা/নিবাসে র্ভতি হবে।
একটি এতীম/প্রতিবন্ধী শিশু পৃথিবীতে কোন নির্যাতনের কারনে মারা গেলে টেকনাফ থেকে তেতুলী আর সুরমা নদী থেকে বঙ্গপোসাগর পর্যন্ত তার অধিকারে জন্য প্রতিবাদের ঝড় উঠে। কিন্তু পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ এতীম/ প্রতিবন্ধী জীবিত থাকা অবস্থায় সভ্য সমাজ তার অধিকার কোন কথা বলতে রাজি নয়।
আপনারা কিভাবে সভ্য সমাজ দাবি করেন? আপনারা পাশে একটি এতীম/প্রতিবন্ধী না খেয়ে আছে। আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো খাবার খাচ্ছেন। আপনারা আপনাদের ছেলের ঈদে ভালো কাপড় কিনছেন। আর আপনাদের প্রতিবেশী এতীম/প্রতিবন্ধী ছেড়া কাপড় ঈদের দিনে পড়ছে। আপনার কাছেই এটাই কি মানবতা। আপনি পৃথিবী সভ্য মানুষ আপনি কখনো একটি এতীম/প্রতিবন্দী নিবাসে কখনো একটু গিয়ে দেখেছেন। ওরা কত কষ্টে জীবন যাপন করতেছে। তাদের বুক ভরা আশা ও স্বপ্ন নিয়ে নিবাসী থাকে। আপনাদের কাছে যদি এতীম/প্রতিবন্ধী তার অধিকার না তাহলে পৃথিবীর কোথায় গিয়ে পাবে। আপনি সভ্য মানুষ দাবি করেন।
আপনাদের একটি শিশু হয়ত প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম গ্রহন করতে পারে। আসুন এতীম ও প্রতিবন্ধীর অধিকারে সোচ্চার হই। পৃথিবীর এতীম/প্রতিবন্ধী সাহায্য করতে বিত্তের প্রয়োজন নেই দরকার চিত্তের।
আমার লেখা একটি কবিতা লিখলাম ।
{”আমি মরে গেলে তোমরা”}
আমি মরে গেলে তোমরা
আমার এই আন্দোলন চালাবে ।
এই পৃথিবীর সভ্য সমাজ রাষ্ট্রের কাছেই
এতীম অনাথ প্রতিবন্ধী দুঃখীদের অধিকারে লড়বে।
অগ্নিসেতুর মতো লোক হতে লোকান্তরে
রুদ্র রোধিরে আয়োধন চিত্তে এগিয়ে চলবে।
আর স্নিগ্ধ কন্ঠে গান গাইতে গাইতে বলি
মানুষ মানুষের জন্য
জীবন জীবনের জন্য
একটু সহানুভূতি কী
মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু।