শাবিতে সংকটের মূল ঘটনা জানালেন ছাত্রলীগ নেতা সবুজ!
পীর হাবিবুর রহমান সত্য কথাই বলেছেন । ‘জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী মিলে বিশ্ববিদ্যালয় টা শেষ করে দিচ্ছেন !’
ইজাজ আহমেদ মিলনঃ সোমবার রাতে ‘ ধুর ! ছাত্রলীগ… । শ্রীপুরের সবুজও বহিষ্কার ‘ শিরোনামে আমি একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। লেখাটা পড়ে শ্রীপুরের মেধাবী ছাত্র সাজিদুল ইসলাম সবুজ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (বহিষ্কৃত) আমাকে ফোন করেছিল। সবুজ আমার খুব স্নেহের । খুব ছোট বেলা থেকেই সবুজকে আমি চিনি এবং জানি।
তার দ্বারা অন্তত এমন ঘটনা ঘটতে পারে না বলে আমারও বিশ্বাস ছিল। সবুজও ফোন করে জানালো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) ঘটে যাওয়ার মূল ঘটনা। সবুজ বললো পীর হাবিবুর রহমান সত্য কথাই বলেছেন । ‘জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী মিলে বিশ্ববিদ্যালয় টা শেষ করে দিচ্ছেন !’ বিষয়টির নেপথ্য কথা জানিয়ে আমার ধারণা ভেঙ্গে দিয়েছে সবুজ। তাকে বহিষ্কার করা হয়নি দাবি করে সবুজ বললো অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সে দিনের সে ঘটনার বর্ণনা শুনি সবুজের জবানী থেকেই – ‘আন্দোলনের শুরুটা হয়েছিল স্পেস কমিটি নিয়ে, যার সভাপতি ছিলেন আমার প্রিয় শিক্ষক প্রফেসর ড. জাফর ইকবাল স্যারের স্ত্রী পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ইয়াসমিন হক । উনাকে সরিয়ে স্পেস কমিটির সভাপতি করা হয় প্রফেসর জহির বিন আলমকে।
এর কিছু দিন পর একাডেমিক বিল্ডিং এ তে একটি রুম বরাদ্ধ নিয়ে পদার্থ বিজ্ঞান ও জিওগ্রাফি বিভাগের প্রধানের সাথে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান জহির বিন আলমের বাক বিতন্ডা হয়, এর সমাধানের জন্য প্রফেসর ইয়াসমিন হক ও বদিউজ্জামান ফারুক স্যারের নেতৃতে শিক্ষকরা উপাচার্যের সাথে দেখা করতে যান। তখন উপাচার্য স্যারের স্ত্রী অসুস্থ থাকায় উনাদের ৫ মিনিট সময় দিয়ে ভিসি বাংলো তে চলে যান ।
আর এই অল্প সময় দেয়ার কারণেই শিক্ষকদের অভিযোগ উপাচার্য তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করেছেন ।দুইদিন পদার্থ বিজ্ঞান ও জিওগ্রাফি বিভাগের ক্লাস পরিক্ষা বন্ধ থাকে,যারা উপাচার্যের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমুলক আচরনের অভিযোগ করেছিলেন তাদের কাছে তিনি ক্ষমা চেয়ে ক্লাস পরীক্ষায় ফিরিয়ে নেন।।
তার দুইদিন পর থেকে স্বার্থান্বেষী কিছু শিক্ষক এই ইস্যুতে আন্দোলনে নামেন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ধুদ শিক্ষকদের একাংশ । তখন আন্দোলনকারী শিক্ষকদের কয়েকজন প্রতিনিধি আমাদের সাথে বসেন এবং সহযোগিতা চান তখন আমরা বলি জননেত্রী শেখ হাসিনা যতদিন এই ভিসি স্যারকে রাখবেন ততদিন আমরা উনাকে সহযোগিতা করব এবং এটাও বলি শিক্ষক রাজনীতির সাথে ছাত্রলীগের রাজনীতির সম্পৃক্ততা নেই ।
আপনারা জানেন দীর্ঘ ৪ মাস যাবৎ চলছে এই আন্দোলন এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রনালয় আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সাথে, শিক্ষক সমিতির সাথে ও সরকার সমর্থক আরো দুটি শিক্ষক গ্রুপের সাথে আলোচনায় বসেন এবং সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন ।
সবদিক বিবেচনা করে ২৪ আগষ্ট ২০১৫ তারিখে শিক্ষামন্ত্রনালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে যেখানে উল্লেখিত কিছু নিম্নে তোলে ধরা হল:
সকল আন্দোলন বন্ধ রেখে নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা সচল রাখা , ভিসি আপাতত শিক্ষক নিয়োগ ব্যতিত বাকি সব কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য
উপাচার্যকে নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবংশিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলা হয় দায়িত্বশীলতার সাথে নিয়মিত শিক্ষাজীবন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সচেতন থাকবেন ।
১৪ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষ্যে সকল শিক্ষককে প্রসাশনিক কাজে সহযোগিতা করার আহবান জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে। গত ৩০ আগষ্ট একাডেমিক কাউন্সিল ডাকা হয় ভর্তি পরিক্ষার জন্য কমিটি করা সহ অন্যান গুরুত্বপুর্ন কাজ নিয়ে। আন্দোলন কারী শিক্ষকরা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধকে উপেক্ষা করে এই একাডেমিক কাউন্সিল রুখতে এবং ভর্তি পরীক্ষা বানচাল করার লক্ষে্য উপাচার্য ভবন তালা লাগিয়ে সামনে অবস্থান কর্মসুচী ঘোষনা করেন ।
অপরদিকে সাধারন শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কাউন্সিল করা ও ভর্তি পরীক্ষা যথা সময়ে নেওয়ার দাবিতে অবস্থান নেন। আন্দোলনকারী শিক্ষকরা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দকে ডাকেন আমরা সেখানে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলি, যে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কোন প্রোগ্রাম নেই বলে আমরা চলে আসি। এর কিছুক্ষন পর উপাচার্য অফিসে আসলে আন্দোলন কারী শিক্ষকরা তাকে বাধা দেন এবং ঘিরে ফেলেন ।
এক পর্যায় ভিসি স্যারকে টানাহেঁচড়া করে এবং ধাক্কা দেয় ।এইসময় শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের গোলযোগ বাধে এবং প্রক্টরিয়াল বডি ভিসি কে কার্যালয়ে নিয়ে যান । ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে যদি ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ববস্থা নেয়া হবে ।কিন্তু কিছু মিডিয়ায় ছাত্রলীগকে জড়িয়ে যেভাবে বক্তব্য এসেছে ।