নিলয় হত্যা : প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজা সাদ ও মাসুদ আট দিনের রিমান্ডে
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ব্লগার নিলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় নিলয় (নিলয় নীল) হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে আটক শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর ভাতিজা সাদ আল নাহিয়ান ও মাসুদ রানার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মোল্লা সাইফুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
দুই আসামিকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (পূর্ব) পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের জন্য আট দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
এদিকে, সাদ আল নাহিয়ান ও মাসুদ রানার দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বাকি হত্যাকারিদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডে চারজন জড়িত থাকার বিষয়টি বিভিন্নভাবে প্রকাশ হলেও এ মামলায় এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার হয়েছেন দু’জন।
গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দেওয়া তথ্যানুযায়ী তারা দু’জন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য এবং ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি। কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশ তাদের নজরদারিতে রেখেছিল। বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় নাহিয়ানকে উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টর থেকে ও মাসুদ রানাকে মিরপুরের কালশী এলাকা থেকে আটক করা হয়েছিল।
ডিবি পুলিশ এরইমধ্যে ওই দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০দিন করে রিমান্ড আবেদন করে। পরে আদালত প্রত্যেকের ৮দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড ও মামলার অগ্রগতির বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পূর্ব বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাহবুব আলম বলেন, আমরা তাদের কাছে প্রাথমিকভাবে অনেকগুলো তথ্য পেয়েছি। এখন ওদের রিমান্ডে নিয়ে সব তথ্যের সত্যতার যাচাই করবো।
তিনি আরও বলেন, নাহিয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র ছিলেন। ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতারের পর তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। তবে মাসুদ রানা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রকৃত হত্যাকারীদের ধরতে গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতার বিষয়টি ইঙ্গিত করে ডিসি মাহবুব আলম বলেন, ওদের নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এরা অলরেডি অনেক তথ্য দিয়েছে। অভিযানের বিষয়টি আবারো উল্লেখ করে ডিবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মাহবুব আলম বলেন, এদের নিয়ে শুক্রবার (১৪ আগস্ট) থেকেই অভিযান শুরু হবে।
৭ আগস্ট (শুক্রবার) দুপুরে জুমার নামাজের আযানের কিছুক্ষণ পর খিলগাঁওয়ের পূর্ব গোড়ানে ১৬৭ নম্বর বাসার ৫ম তলার বাম পাশের ফ্ল্যাটে ঢুকে নিলয় নীলকে হত্যা করা হয়েছিলো। খুনীরা নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার বলে চাপাতি দিয়ে কুপি মৃত্যু নিশ্চিত করার পর সে স্থান ত্যাগ করে বলে জানিয়েছিলেন নিলয় নীলের স্ত্রী আশা মনি।
ঘটনার পর ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিলয়ের স্ত্রী আশা মনি অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে থানা পুলিশ থেকে ঘটনার দুই দিন পর মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।