চুনারুঘাটে ঐতিহাসিক বদর দিবস পালিত ও ইফতার মাহফিল অনুষ্টিত

xxxxxxxxএম এস জিলানী আখনজী : চুনারুঘাট(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি ॥
চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গোছাপাড়া জামে মসজিদে গতকাল রবিবার ঐতিহাসিক বদর দিবস পালিত, মাহে রমজানের তাৎপর্য আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্টিত হয়। ঐদিন আসরের নামাজের বাদ পবিত্র কোরআনে কালাম থেকে তিলাওয়াত শুরু করে, ১৭ রমাযান ঐতিহাসিক বদর দিবসের আলোচনার এক পর্যায়ে ইমাম সাহেব। মাহে রমদ্বানের তাৎপর্য ও রমদ্বানের মহাত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, থাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সান্নিধ্য আছিল করতে পারে ও রমদ্বানুল মোবারকের বিষয়ে প্রিয় নবীজির বয়ান জানাইতে গিয়ে বলেন, “তোমাদের জন্য এমন এক মাস আসছে যে মাস অনেক বড় ও খুব বরকতময় তাথে শ্ববে কদর রয়েছে, কুরআন নাযিল হয়েছে, যে দিনটি হাজার মাসের চেয়েও ¯্রষ্টে” তাই নেক কর্মের দ্বারা জীবনের মূল ধারাকে অব্যাহত করুন।
মুজাহিদ দলের পতাকা দিলেন আলী (রা:) কে। আনসার দলের পতাকা দিলেন স্বাদ বিন মুআয xxxx(রা:) কে। ডানে, বামে এবং পশ্চাৎ ভাগেও দলপতি নিযুক্ত করলেন। আর তিনি নিজে মুজাহিদ বাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে নেতৃত্ব গ্রহন করলেন। ১৬ই রমাযান রাসূল (সা:) বদর প্রান্তরে পৌঁছে একটি জায়গায় শি-বির স্থাপন করলেন।
অপর দিকে যুদ্ধক্ষেত্রের যে অংশটি কুরাইশরা দখল করল, উপযোগিতার দিক দিয়ে তা ছিল খুবই উত্তম। তাদের জমিন ছিল অত্যন্ত মজবুত। আশেপাশে পানির ভাল ব্যবস্থা ছিল।
যুদ্ধ শুরু হিজরীর ১৭ই রমাযান, শুক্রবার রাত, সবাই রোজা রেখে কান্ত। ঐ রাতে বৃষ্টি হল প্রচুর। মুসলিম বাহিনী কান্ত দেহে রাতে ঘুমে বিভোর আছন্ন। আর রাসূল (সা:) সারারাত নফল নামাজ পরলেন, আল্লাহর সাহায্য চাইলেন। শুক্রবার সকাল বেলা যুদ্ধের ময়দানে আল্লাহর অভয় বাণী আসল : “তোমরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ো না এবং চিন্তিতও হয়ো না! তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমাদের অন্তরে ইমানের তেজ থাকে”। (আল-ইমরান ১৩৯)। আল্লাহপাক আরো বললেন : “আল্লাহর ইচ্ছা এটা যে, তিনি নিজ নির্দেশ দ্বারা সত্যকে সত্যরূপে প্রকাশ করবেন এবং কাফিরদেও মূল কেটে ফেলবেন”। (আনফাল ৭ শেষাংশ)।
প্রতি বছর ১৭ রমজান মুসলিম উম্মাহকে গৌরবময় সে বিজয়টি স্মরণ করিয়ে দেয়। খোদায়ী কুদরতের অসীমতার প্রতি নতুন করে তাদের বিশ্বাস জোগায়। নিজের সব কামনা-বাসনা মহান আল্লাহর কুদরতের সামনে বিলীন করে দেয়। এতে ইমানের যে গভীরতা ও দৃঢ়তা অর্জিত হয়, সেই শক্তিতে উজ্জীবিত হয়ে জীবন ও পরিবেশের সব পর্যায়ে খোদায়ী বিধানকে প্রাধান্য দেয়ার মধ্যেই নিহিত রয়েছে সিয়াম পালনের সার্থকতা। রিদয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখেরাতে সাফল্যের প্রবল বাসনা থাকলেই আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় নিজেকে পুরোপুরী উৎসর্গ করা যায় এবং যে কোন কঠিন পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হওয়া যায়।
কিন্তু কুরআনে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদেরকে বলে দিলেন : “তাদেরকে তোমরা হত্যা করোনি, বরং তাদের হত্যা করেছেন আল্লাহ” এমন কি, তিনি নবী (সা:) কে পর্যন্ত বলে দিলেন যে, “(বালু) তুমি ছুঁড়োনি, বরং ছুড়েছেন আল্লাহ এবং মুমিনদেরকে একটি উত্তম পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উর্ত্তীণ করার জন্যেই এসব কিছু করা হয়েছে”। (আনফাল ১৮) এভাবে মুসলমানদেরকে বলে দেয়া হল যে, প্রকৃতপক্ষে সমস্ত কাজের চাবিকাঠি রয়েছে আল্লাহর হাতে এবং যা কিছু ঘটে তাঁর নির্দেশ ও ইচ্ছানুসারেই ঘটে থাকে। মুমিনদের কাজ হচ্ছে আল্লাহ তা’য়ালার ওপর পুরোপুরী নির্ভর করা এবং সর্বাবস্থায় আল্লাহ ও রাসূলের পূর্ণ আনুগত্য করা। এরই ভিতরে নিহিত রয়েছে তাদের জন্য সাফল্য।
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও জাক জমক ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইফতার মাহফিল। প্ররিশেষে ইমাম সাহেব দেশ, জাতির ও বিশ্বমুসলিম উম্মার জন্য আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে ইফতার মাহফিল সমাপ্তি করা হয়।