সিলেটে দু’দিনব্যাপি মণিপুরী হস্তশিল্প প্রদর্শনী শুরু
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মণিপুরী হস্তশিল্প পণ্যের তার অতীত ঐতিহ্যে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে সিলেট শহরের রিকাবিবাজারস্থ মোহম্মদ আলী জিমনেসিয়াম হলে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গাাইজেশন (একডো) এর উদ্যোগে এবং আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা অক্সফাম’র সহযোগিতায় দু’দিনব্যাপি এক মণিপুরী হস্তশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করে। আজ বৃহস্পতিবার দু’দিনব্যাপি আয়োজিত এ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক, সিলেট এর মহাব্যবস্থাপক জনাব মোহাম্মদ মোবারক হোসেন। এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, আঞ্চলিক কার্যালয় সিলেট (পশ্চিমাঞ্চল) এর সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও অঞ্চল প্রধান জনাব নীলচাঁদ সিংহ, দেশের খ্যাতিমান ফ্যাশন ডিজাইনার ও মণিপুরী হ্যান্ডলুম প্রজেক্ট অব একডো এর কনসালটেন্ট জনাব চন্দ্রশেখর সাহা, অক্সফাম এর প্রজেক্ট কোর্ডিনেটর জনাব সৈকত বিশ্বাস, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমেদ সেলিম ও মণিপুরী তাঁতশিল্পী ও প্রকল্পের স্থানীয় রিসোর্স পার্সন রাধাবতী দেবী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একডো’র নির্বাহী পরিচালক জনাব লক্ষ্মীকান্ত সিংহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোবারক হোসেন মণিপুরী হস্তশিল্প নিয়ে অক্সফাম এবং একডো’র এই উদ্যোগের স্বাগত জানিয়ে তিনি এর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এটি নিশ্চয়ই মণিপুরী হস্তশিল্পকে তার পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা করবে। কোন প্রকার আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন হলে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করার আশ্বাস দেন। বিশেষ অতিথি জনাব নীলচাঁদ সিংহ মণিপুরী বয়নশিল্পের উন্নয়ন ও প্রসারের লক্ষ্যে তিনি তার আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকেও সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। অক্সফাম’র প্রতিনিধি জনাব সৈকত বিশ্বাস বাংলাদেশে অক্সফামের কার্যক্রম শুরু করার উপর একটি সংক্ষিপ্ত প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে মণিপুরী তাঁত শিল্পের উন্নয়নে বর্তমান কার্যক্রমের বিবরণ দিয়ে আগামীতে মণিপুরীদের এ খাতটির উন্নয়নে আরো সহযোগিতা প্রদান করার আশ্বাস প্রদান করেন।
সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক জনাব মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিম তার বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে মণিপুরী পণ্যের নামে অনেক অমণিপুরী পণ্য বিক্রি হচ্ছে। যার ফলে ক্রেতা সাধারনের মধ্যে আসল মণিপুরী পণ্য সম্পর্কে একটি বিভ্রান্তি তৈরী হচ্ছে। একডো এবং অক্সফামের এই উদ্যোগ মণিপুরী পণ্যের ক্রেতা সাধারনের এ বিভ্রান্তি দূর করতে সহযোগিতা করবে। প্রকল্পের কনসালটেন্ট জনাব চন্দ্রশেখর সাহা বলেন, মণিপুরী হস্তশিল্পের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল; এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তাই তিনি এ প্রকল্পের বর্তমান কার্যক্রমের ধারাকে অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন। বিশিষ্ট মণিপুরী তাঁতশিল্পী ও স্থানীয় রির্সোস পারসন রাধাবতী দেবী বলেন, অক্সফামের সহযোগিতায় একডো’র এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে মণিপুরী তাঁত শিল্প তার অতীত ঐতিহ্যে ফিরিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাই তিনি একডো ও অক্সফামের নিকট মণিপুরী তাঁত শিল্পের উন্নয়নে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথিগণ মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে দু’দিনব্যাপি এ প্রদর্শনীর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। সভাপতি বক্তব্যে একডো’র নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, একডো এ প্রকল্পের অর্জনগুলোকে স্থায়িত্ব প্রদান করার জন্য ‘মোইরাং’ নামে একডো’র উদ্যোগে সিলেটে সকল মণিপুরী তাঁত শিল্পীদের পক্ষে মণিপুরীদের নিজস্ব একটি আউটলেট করে সেখানে শুধুমাত্র মণিপুরী হস্তশিল্পজাত পণ্য বিক্রি করা হবে বলে জানান। উল্লেখ্য যে, আয়োজকদের পক্ষ থেকে অক্সফাম এর উজ্জ্বল আজিম স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।-বিজ্ঞপ্তি