মেয়র আরিফের দুঃসময়ে পাশে নেই কেউ
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীর দুঃসময়ে তার পাশে দাঁড়াননি দলের নেতা ও সিটি কাউন্সিলররা। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে সিলেট থেকে ঢাকায় যাওয়ার সময় তাকে বিদায় দিতে যাননি দলীয় নেতা ও সিটি কাউন্সিলররা। অথচ আরিফ সুস্থ থাকাবস্থায় জেলা ও মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ার আশায় দলীয় নেতারা তার বাসা ও অফিসে নিয়মিত ধর্না দিতেন। কাউন্সিলররাও কাজ বাগিয়ে নিতে আরিফের তোষামোদী করতে পিছপা হতেন না।
জানা যায়- শুক্রবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে ভর্তি করা হয় নগরীর নয়াসড়কস্থ মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষন কেন্দ্রে (সিসিইউ) রেখে চিকিৎসা সেবা দেন। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী শনিবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে সিলেট জেলা স্টেডিয়াম থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে মেয়র আরিফকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে। ওই সময় আরিফকে বিদায় দিতে স্টেডিয়ামে তার শুভাকাঙ্খি অনেকেই উপস্থিত হন। আরিফকে বিদায় দিতে গিয়ে অনেকে কান্নায়ও ভেঙে পড়েন।
তবে আরিফের ঢাকা যাত্রাকালে দলের জেলা ও মহানগর শাখার শীর্ষ কোন নেতাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। একইভাবে সিটি করপোরেশনে পুরুষ ও মহিলা ৩৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৩৪ জনই ছিলেন অনুপস্থিত। কাউন্সিলরদের মধ্যে কেবলমাত্র ৫নং ওয়ার্ডের রেজওয়ান আহমদ ও ১৮ নং ওয়ার্ডের এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বলই ছিলেন ব্যতিক্রম। রেজওয়ান আহমদ সিলেট স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে মেয়র আরিফকে বিদায় জানান এবং তার সুস্থতা কামনা করেন। আর কাউন্সিলর উজ্জ্বল আগের রাতেই চলে যান ঢাকায়। সেখানে বিমানবন্দর থেকে আরিফকে নিয়ে যান হাসপাতালে। উজ্জ্বল এখনো ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং মেয়র আরিফের চিকিৎসার খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
জানা যায়- সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি পুনর্গঠনে আরিফুল হক চৌধুরীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ওই সময় পদ-পদবী পেতে জেলা ও মহানগরের শীর্ষ অনেক নেতাই আরিফের কাছে ধর্না দেন। আরিফের মাধ্যমে কেন্দ্রকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বড় পদ বাগিয়ে নিতে তারা তদবির করেন। কিন্তু শনিবার অসুস্থ অবস্থায় সিলেট ছেড়ে যাওয়ার সময় তার পাশে ওইসব নেতাদের কেউই ছিলেন না।
একইভাবে মেয়র আরিফের সার্বক্ষনিক সঙ্গী সিটি কাউন্সিলরদেরও দেখা যায়নি বিদায়কালে। যারা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে মেয়রের সাথে নগরীতে ঘুরে বেড়াতেন সেইসব কাউন্সিলরদের কেউই উপস্থিত ছিলেন না মেয়রের দু:সময়ে। যদিও শুক্রবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মেয়র আরিফ মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর কাউন্সিলররা তাকে দেখতে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু সকালে তাকে বিদায় দিতে কেউ যাননি। সৌজন্যেঃ সিলেট ভিউ২৪