শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সিলেট মহানগরীর শ্রমিক দিবস পালন
শ্রম অধিকার বাস্তবায়ন কেবল মে দিবসে সীমাবদ্ধ নয়
———-হাফিজ নজমুল ইসলাম
অবৈধ সরকারের পতন ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের
মাধ্যমে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে
———হাফিজ আব্দুল হাই হারুন
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সিলেট জেলা ও মহানগরের উপদেষ্টা এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজ নজমুল ইসলাম বলেছেন, প্রতি বছর মহান মে দিবস আসে আবার চলে যায়। সে দিবসে সবাই শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়ে উঠেন। আপাত দৃষ্টিতে দেখলে মনে হয় যেনো শ্রমিক আর মালিকের মাঝে কোনো ভেদ নেই। কিন্তু মে দিবস চলে গেলে সবাই তা ভুলে যায়।
কেবল মে দিবস এলেই শ্রমিক জনতার অধিকার আদায়ে সোচ্চার হওয়া শ্রমজীবিদের সাথে ধোকার সামিল। আর তাই শ্রমিকদের অধিকার আদায় কেবল দিবসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। শুধু মে দিবস নয়, বছরের প্রতিটি দিন হবে শ্রম অধিকার বাস্তবায়নের দিন। আর তাহলেই এদেশে শ্রমিক মালিকের সমন্বয়ে একটি সুখি সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। একটি ইসলামী শ্রমনীতিই পারে এভাবে শ্রমিকদের অধিকার বাস্তবায়নের পথকে সুগম করতে। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সেই শ্রমনীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই শ্রমিক জনতাকে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি ১লা মে সকাল ১০ টায় আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সিলেট মহানগর কর্তৃক আয়োজিত সুরমা পয়েন্টে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
পরে সুরমা পয়েন্ট থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। র্যালী পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাফিজ আব্দুল হাই হারুন। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকারের শাসনামলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছে শ্রমিক জনতারা। কল-কারখানা, গার্মেন্টস, মিল-ফ্যাক্টরী, দোকানপাট সহ সকল ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধের উপক্রম। শ্রমিকরা এসব জায়গায় শ্রমের বিনিময়ে দুবেলা খেয়ে বেঁচে থাকে। তাদের সেই বেঁচে থাকার পথ আজ বন্ধ। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যারা শ্রমিকদের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছে তারা আজ শ্রমিকদেরকে ভুলে গিয়ে তাদের পেটেই লাথি মারছে। যারা ঘরে ঘরে চাকুরীর দেয়ার লোভ দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তারা আজ হাজার হাজার শ্রমিকদেরকে বেকার করে তাদের পরিবারকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। রানা প্লাজা সহ বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনায় কবলিত শ্রমিকদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। সরকার প্রতিনিয়ত শ্রমজীবি মানুষ সহ গোটা দেশের মানুষের সাথে ধোকাবাজী করছে। ধোকাবাজ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে কখনো সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। আর তাই এই অবৈধ সরকারকে হঠিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় নিজেদের স্বার্থের জন্যে হলেও সবার পাশাপাশি শ্রমিক জনতাকেও এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে এটি সরকার হঠানোর আন্দোলন নয়, আমাদের বাঁচা-মরার আন্দোলন।
শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফারুকুরুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জামিল আহমদ রাজুর পরিচালনায় উভয় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক মো: আতিকুর রহমান, কফিল উদ্দিন আলমগীর, কোষাধ্যক্ষ আক্কাছ আলী, প্রচার সম্পাদক বদরুজ্জামান, শ্রমিক নেতা এটিএম খছরুজ্জামান, হাজী আব্দুল মতিন, আব্দুল বাছেত মিলন, আফজালুর রহমান, আব্দুল জলিল, ইকবাল আহমদ, মনসুর আলম চৌধুরী, এইচ কে এম নেছার আহমদ, কাউছার হোসেন কয়েছ, হাসন আলী, সোয়েব আহমদ, ইয়াছিন খান, দিলশাদ মিয়া, শওকত হোসেন জিম্মাদার, আব্দুল আলীম, হোসাইন আহমদ, আতিকুর রহমান, আব্দুস ছাত্তার, কামাল আহমদ মজুমদার, শাহ মিজানুর রহমান, আবুল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন আঙ্কেল, ইউনুছ আহমদ, আছলম আলী প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি