বিশ্বনাথে প্রবাসীর দেড়কোটি টাকায় ‘ফুলেছা সেতু নির্মাণ

আন্তরিকভাবে কাজ করে নিজ এলাকাকে এগিয়ে নিতে হবে …মো. শহিদুল ইসলাম

photoবিশ্বনাথ প্রতিনিধিঃ বিশ্বনাথে যুক্তরাজ্য প্রবাসী মুজিবুর রহমানের অর্থায়নে কোনারাই-কাহিরঘাট সংলগ্ন বাসিয়া নদীর উপর ফুলেছা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।এতে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। সেতু নির্মাণের ফলে বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরসহ তিন উপজেলাবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। সেতু নির্মাণে এলাকার মানুষের মধ্যে বইছে আনন্দ। গতকাল বৃহস্পতিবার সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হয়েছে এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রবাসী মুজিবুর রহমান কে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
সেতুর উদ্বোধন ও সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক ও সদ্য পদোন্নতী লাভ করা যুগ্ন-সচিব মো. শহিদুল ইসলাম বলেছেন, মহান দাতা যুক্তরাজ্য প্রবাসী মুজিবুর রহমান। অনেকের অনেক টাকা আছে কিন্তু মুজিবুর রহমানের মত মানুষ খুব কম পাওয়া যায়। তিনি বলেন, সেতু নির্মাণে ওই এলাকা এগিয়ে গেল। যারা বৃত্তশালী তাদেরকে এলাকার উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করে নিজ এলাকা এগিয়ে নিতে হবে। শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রবাসীরা দেশের প্রতিটি কাজে অংশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাদের ধারা ব্যাপক উন্নয়ন photo2হচ্ছে দেশে। তাই দেশ কে ভালবেসে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, দান করলে কোন সময় কমে না বাড়ে। সিলেটের মানুষ আন্তরিক। ফলে সব সময় তাদের পাশে থেকে কাজ করতে চাই।
প্রসাবী মুজিবুর রহমান এর পিতা মো. আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে ও শিক্ষক আকবর আলী ও ইউপি সদস্য খায়রুল আমিন আজাদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাইদুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী বলেছেন, প্রবাসে কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে মানব কল্যাণে যেসব প্রবাসী কাজ করে যাচ্ছে তাদেরকে তিনি স্যালুট জানান।
বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদাল মিয়া বলেছেন, এলাকার প্রতি দরদী হয়ে সেতু নির্মাণ করেছেন মুজিবুর রহমান। যার ফলে উপকৃত হয়েছেন তিনটি উপজেলার হাজার হাজার মানুষ। তিনি প্রবাসীদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুল হক বলেছেন, এ ধরনের সেতু নির্মাণ করতে উপজেলা পরিষদের ৪ বছর সময় লাগবে। যে কাজটি একজন প্রবাসী করেছেন। সত্যিই মুজিবুর রহমান প্রসংসার দাবিদার।
বিশেষ অতিথিদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক মিয়া, দেওকলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তাহিদ মিয়া, অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী, শিক্ষক খছরুজামান, ইউপি সদস্য আবদাল মিয়া, সমাজসেবক সিরাজ খান, আব্দুল কাইয়ুম, বিশ্বনাথ প্রেসকাবের সহ-সভাপতি তজম্মুল আলী রাজু।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের সিলেটের সহকারী কমিশনার জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী, বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. রফিকুল হোসেন, সেতু দাতা, প্রবাসী মুজিবুর রহমান, সমাজসেবক মাহবুব উজ জামান চৌধুরী, নুরুল ইসলাম খান, জাপা নেতা এম. এ. রব, ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আফসর আলী, সমাজসেবক মফিজুল ইসলাম, মবশ্বির আলী, গোলাম জবদানী, প্রবাসী হারুনুর রশীদ, সংগঠক খালেদ আহমদ, সেতুর কনট্রাক্টর আব্দুল হাসিম, শিক্ষক আব্দুস সালাম, অপিকুর রহমান, এ.এস.এম. লুৎফুর রহমানসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিপুল সংখ্যক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
জানাগেছে, দীর্ঘদিন ধরে কোনারাই-কাইঘাট বাজারে পাশে বাসিয়া নদীর ওপর একটি সেতু নির্মানের জন্য এলাকাবাসী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে আহবান জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু অনেক জনপ্রতিনিধি আশ্বাস দিলেও সেতু নির্মাণ করা হয়নি। ফলে এলাকাবাসীর যাতায়াতে স্বার্থে প্রবাসী মুজিবুর রহমান নিজ ইচ্ছায় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অবশেষে সেতু নির্মিত করা হয়।