তাহিরপুরে বৃদ্ধাকে পিঠিয়ে দোকানঘর দখলের অভিযোগ : মামলা
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দিন দুপুরে প্রকাশ্যে শতশত লোকের সামনে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারে এক ৮৫ বছরের বয়োবৃদ্ধাকে পিঠিয়ে ১২ লাখ টাকা মুল্যের দোকান কোটা জবরদখলের ঘটনায় আহত ঐ বৃদ্ধা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে নিজেই বাদী হয়ে তার দু’সন্তান সহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হল ,উপজেলার বড়দল উওর ইউনিয়নের হোসেন আলীর ছেলে তারা মিয়া, সহোদর চাঁন মিয়া, মৃত শুকুর আলীর ছেলে ভগ্নিপতি সাহাজ উদ্দিন, পিতা অজ্ঞাত হোসেন আলী, ফয়জুর রহমানের ছেলে রমজান আলী, বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের বৃদ্ধার দু’পুত্র সাদত আলী ও জমির আলী।
বয়োবৃদ্ধা ডালিমুন্নেছার লিখিক অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ২১ শনিবার ফেব্রুয়ারী তারই দু’বিপথগামী ছেলের সহযোগীতায় ভুমিখেকো ও মামলাবাজ তারা মিয়া তার একদল লাঠিয়াল দুবৃক্তদের সাথে নিয়ে বে-আইনি ও জাল দলিল মুলে দোকানঘর দখল করতে গিয়ে বয়োবৃদ্ধাকে মাটিতে ফেলে মারধোর করে টেনে হিচরে নিয়ে যায়। এ দোকানঘরের জায়গা নিয়ে আদালতে বিচারাদীন মামলা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশ রয়েছে মামলা নিষ্পক্তি না হওয়া পর্য্যন্ত দোকানঘর না খুলতে। কিন্তু তারা মিয়া বেশ কিছু গ্রাম্য সালিশীদের প্রভাবিত ও ম্যানেজ করে লাঠির জোরে ঐ দিন দোকানঘরের তালা ভেঙ্গে দোকানঘর দখলে নিয়ে জনমনে ত্রাস ও ভিিতর সৃষ্টি করে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী, ব্যবসায়ী মহল জানান যায়, উপজেলার বাদাঘাট বাজারের মৃত আফছর উদ্দিনের ছেলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী হোসেনের মুল মালিকের দলিল মুলে রেকর্ডকৃত দোকান কোটার ১২ লাখ টাকা মুল্যের জায়গা তারই সহোদর সাদত আলী ও জমির আলী নিজের মাকে চিকিৎসার কথা বলে প্রতারণামুলক ভাবে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়ে গিয়ে জাল দলিল মুলে দানপত্র করিয়ে মামলাবাজ ও ভুমিখোকো তারা মিয়ার প্ররোচনায় তারই নামে ফের দানপত্র মুলে রেজিষ্ট্রি করিয়ে নেয়। এরপর এনিয়ে আলী হোসেন বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করলে সাদত আলীর দলিল জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণ সাপেক্ষে দলিল বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে বিবাদী তারা মিয়া গংদের ঐ ভুমিতে না যাওয়ার জন্য আদালত স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। এরপর থেকেই তারা মিয়া গত কয়েক মাস ধরে ঐ দোকান কোটা দখলে নিতে জমির আলীকে কৌশলে ঐ ভিটার পেছনের অংশে ভাড়াটিয়া সাজিয়ে বসবাসের সুযোগ করে দিয়ে শিক্ষকের স্ত্রী প.প স্বাস্থ্য কর্মী তাদের অপর মেয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও ৫ম শ্রেণীতে পড়–য়া নাতনী এমনকি বয়োবৃদ্ধা মা ডালিমুন্নেছাকে ভয়ভীতি ও নানা হয়রানী এমনকি প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জিম্মি করে ফেলেন। এমনকি সরকারি চাকুরিজীবী ঐ পরিবারের সদস্যরা নিজ বাড়ির নিজ রাস্তা ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না তারা মিয়া ও তার লাঠিয়াল বাহিনীর সদস্যরা। নিরুপায় হয়ে আলী হোসেন গত ৮ ফেব্রুয়ারী এ ব্যাপারে থানায় একটি সাধারন ডায়রী করেন। ইতিপুর্বে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশংকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ঐ দোকানকোটায় আদালতের পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্য্যন্ত তালাবদ্ধ করেন। সুকৌশলী ও মামলাবাজ তারা মিয়া সরজমিনে উপস্থিত থেকে গতকাল শনিবার সকালে ভাষা দিবসে প্রশাসন কর্মব্যব্যস্ত থাকার সুবাধে নিজের মুক্তিযোদ্ধা পিতা চাঁন মিয়াকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে তার পরিবারের লোকজন, আালী হোসেনের বিপথগামী দু’সহোদর ও একদল লাঠিয়াল দুবৃক্ত সহ ১২ থেকে ১৫ জনের একটি গ্রুপ নিয়ে আদালত ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নিষেধাজ্ঞা উপক্ষো করে নিজের পেশী শক্তির জানান দিতে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে ভয়ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে ঐ দোকান কোটার তালা ভেঙ্গে তার পিতাকে পান সিগারেট ও মুদি মাল দিয়ে দোকানদার সাজিয়ে বসিয়ে দেয়। বর্তমানে প্রতিরাতেই তারা মিয়ার দখল নেয়া ঐ দোকানকোটায় বেশ কিছু চিহ্নিত মাতাল, অজ্ঞাত ব্যাক্তি ও মহিলাদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। এদের কেউ কেউ রাত্রিতে ঐ দোকানেও থাকছে ফলে আশে পাশের দোকানমালিক ও আবাসিক এলাকায় এক ভীতি কর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে যে কোন সময় চুরি ডাকাতি সহ অন্যান্য যে কোন ধরণের অপরাধমুলক কর্মকান্ড ঘটিয়ে তারা মিয়া ঐ সরকারি চাকুরিজীবী পরিবারটিকে মিথ্যা মামলা ও হয়রানীতে ফেলে দিতে পারে এই আশংকায় প্রধান শিখ্ষক আলী হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট পৃথক এক আবেদন করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মূকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।