জামায়াত ও তাজুলের বিরুদ্ধে অবমাননা মামলা

tajulsm_30564সুরমা টাইমস ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল ডাকা ও রায় নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় সংগঠন হিসেবে জামায়াত, ৩ জামায়াত নেতা, দুই শিবির নেতা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারাধীন জামায়াত নেতাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন।
অভিযুক্তরা হলেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত নায়েবে আমির মহিবুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুর রহমান ও ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল জব্বার ও সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত মঙ্গলবার জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
এ রায়ের প্রতিবাদে বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুইদিনের হরতাল ডাকে জামায়াত। বিবৃতিতে এ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নানা বিরুপ কথা বলেন জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ পদে থাকা নেতারা।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আজহারের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন যে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়েছেন, সেটা গ্রহণ না করে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা হলেই সুবিচার হতো’।
বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে ওই সাতজনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত, জেয়াদ আল মালুম, সুলতান মাহমুদ সীমন, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, তাপস কান্তি বল, রেজিয়া সুলতানা চমন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় যে সাক্ষ্য – প্রমাণের ভিত্তিতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে তা এক ‘অষ্টম আশ্চর্যজনক ঘটনা’ বলেও মন্তব্য করেন তাজুল।
আজহারের এই আইনজীবী বলেন, একাত্তরের পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে ট্রেন থেকে আজহারকে নামতে দেখেছেন বলে যে তিনজন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাদের কেউ দেখেছেন ৬ কিলোমিটার দূর থেকে, কেউ ৩ কিলোমিটার, আবার কেউ দেখেছেন দেড় কিলোমিটার দূর থেকে। এসব সাক্ষ্যের মাধ্যমে ফাঁসি দেওয়া পৃথীবির ‘অষ্টম আশ্চর্যজনক ঘটনা’ বলে আমরা মনে করি।
প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজহারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন যে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়েছেন, সেটা গ্রহণ না করে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা হলেই সুবিচার হতো’ তাজুলের এমন বক্তব্যে আদালত অবমাননা হয়েছে।
তাজুল জামায়াত-শিবিরের প্রোপাগান্ডা মূখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন এবং ট্রাইব্যুনালের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অপবাদ ছড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বুধবার তাজুলের বক্তব্যের বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল-১ এর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। প্রসিকিউটর মালুম বলেন, জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের রায়ের পর আসামিপক্ষ থেকে তাজুল ইসলাম যে বক্তব্য, অঙ্গভঙ্গি ও শব্দচয়ন করেছেন তা মোটেই আইনজীবীসুলভ ছিল না।
এ অভিযোগ শুনে প্রসিকিউশনকে লিখিত অভিযোগ দাখিল করার পরামর্শ দেন ট্রাইব্যুনাল। সে মোতাবেক বুধবার তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়।