যেকোনো মুহূর্তে ‘বিএনপির’ দুই মেয়র গ্রেফতার!
কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশিটে অভিযুক্ত
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ যেকোনো মুহূর্তে গ্রেফতার হতে পারেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলহাজ জিকে গউছ। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় তাদের অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর বিএনপির এই দুই জনপ্রতিনিধি গ্রেফতারে আইনগত কোনো বাঁধা নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আইন বিশেষজ্ঞরা।
ফলে আদালতে আলোচিত এ চার্জশিট গৃহীত হওয়ার আগেই তাদের গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যদিও আগামী ৩ ডিসেম্বর আদালতে এই মামলার চার্জশিটের শুনানির দিন নির্ধারিত রয়েছে ।
এদিকে আলোচিত এ হত্যা মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর থেকে সিলেট ফেরননি সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি ঢাকায় ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে তার পরিবার সূত্র জানিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দেশ-বিদেশে আলোচিত কিবরিয়া হত্যা মামলায় সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তৃতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সিলেট জোনের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মেহেরুন্নেসা পারুল।
ঘটনার ৯ বছর ৯ মাস ১৬ দিন পর দাখিলকৃত সম্পূরক চার্জশিটে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আলহাজ জিকে গউছ, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিছ চৌধুরীসহ ৩৫জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
সম্পূরক চার্জশিটে নতুন করে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার তৎকালীন ও বর্তমান মেয়র জিকে গউছসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
অপর আসামিরা হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, মুফতি সফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, তাজউদ্দিন, মোহাম্মদ আলী, বদরুল, মহিবুর রহমান, কাজল ও হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া।
এছাড়া পূর্বের চার্জশিটভূক্ত আসামি ইউসুফ বিন শরীফ, আবু বকর আবদুল করিম ও আহসান উল্লাহকে অব্যাহতি দিতে আদালতে আবেদন জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আলোচিত এ মামলায় চার্জশিটে ‘অভিযুক্ত’ দুই জনপ্রতিনিধি গ্রেফতার হওয়া প্রসঙ্গে সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি শামসুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগপত্র আদালতে দাখিলের পরপরই আসামি গ্রেফতারে কোনো বাধা থাকে না। আদালত কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই অভিযুক্ত বা আসামিকে গ্রেফতার করতে পারে পুলিশ।’
তবে, চার্জশিট গৃহীত আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেট রেঞ্জ পুলিশের পদস্থ এক কর্মকর্তা বলেন, যে কোন মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয়া মানে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া। তাই অভিযোগপত্র দেয়ার পর সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা বা তদন্ত সংস্থা যে কোন সময় অভিযুক্ত ব্যাক্তিদের গ্রেফতার করতে পারে। এক্ষেত্রে কারও অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে ঈদ-পরবর্তী জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলার শিকার হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এ গ্রেনেড হামলায় কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী আবদুর রহিম, সিদ্দিক আলী ও আবুল হোসেন নিহত হন এবং বর্তমান এমপি আবু জাহিরসহ প্রায় ৭০ জন আহত হন।
এ ঘটনায় হবিগঞ্জ-১ আসনের বতর্মান সাংসদ অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান বাদি হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করেন।