‘ছাত্রী পেটানোর অভিযোগ ধামাচাপা দিতে তৎপর শিক্ষিকা’
ডেস্ক রিপোর্টঃ ছাত্রী পেটানোর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওসমানীনগরের তাজপুরস্থ মো. নূর মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন সহকারী শিক্ষিকা কৃষ্ণা গোস্বামী। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, পরিচালনা কমিটি ও অভিভাবকবৃন্দ। ছাত্রী পেটানোর ঘটনায় শাস্তি প্রদান এবং ওই শিক্ষিকার অপপ্রচার ও রাহুগ্রাস থেকে মুক্তি পেতে তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য বলা হয়, কৃষ্ণা গোস্বামী গত ৯ মার্চ তার নির্ধারিত ক্লাসে যান এবং সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ফাহিমা বেগমকে অমানবিক শারীরিক নির্যাতন চালান। এতে ওই ছাত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ক্লাসের অন্য ছাত্রীদের কাছ থেকে জানা যায়, তিনি ফাহিমাকে তার চুলের মোটি ধরে টেনে হেচড়ে নিয়ে এসে টেবিলের সাথে মাথায় বার বার টেস দেন। এরপর নিলডাউন করে মেয়েটির পিঠে চড়ে বসেন। এতে মেয়েটি আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতি তার সহপাঠিরা তাকে নিয়ে অফিস কক্ষে চলে আসে। এক পর্যায়ে শিক্ষকরা মিলে ওই ছাত্রীকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তার অভিভাবকেরা মেয়েটিকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু এক পর্যায়ে মেয়েটির শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে গেলে তাকে ওসমানী হাসপতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকার লোকজন প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। ঘটনার দিনই ওসমানীনগর থানা পুলিশ বিদ্যালয়ে এসে সরেজমিন পরিদর্শন করে যান। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষিকা ঘটনার দিন বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে চলে আসেন। উদ্বুত পরিস্থিতে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি একাধিক সভা আহবান করলেও কৃষ্ণা গোস্বামী উপস্থিত হননি। উল্টো তিনি নির্যাতিত ছাত্রীর চিকিৎসার ফাইল চুরির চেষ্টা চালান। ওসমানী হাসপাতালে গিয়ে নার্স সেজে ফাইল চুরি করতে গেলে ছাত্রীর অভিভাবকরা ফাইলটি উদ্ধার করে। সুচতুর কৃষ্ণা গোস্বামী সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছেন।
এই কৃষ্ণা অতীতেও মৌলভীবাজার জেলায় শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে প্রতারণা করতে গিয়ে ফেসে যান। ১৯৯৯ সালের ১৯ জুন রাতে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম বাকউল এর কক্ষে প্রবেশ করে গোপনে তার কথা রেকর্ড করা শুরু করলে তিনি ধরা পড়েন। তার বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছিলেন এলাকাবাসী। তিনি বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন।
সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ফাহিমাকে নির্যাতনের পর এলাকাবাসীর রোষানল থেকে বাঁচতে এবং চাকুরি টিকিয়ে রাখতে তিনি নানা রকমের অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আতাউর রহমান। এ সময় প্রধান শিক্ষক হেলেন বেগম চৌধুরী ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।