ছাতকের ঘূর্ণিঝড়ের ছোবল থেকে যেভাবে ফিরে আসলো দুই শিশু
ডেস্ক রিপোর্টঃ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় বয়ে যাওয়া প্রলঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের ছোবল থেকে অলৌকিকভাবে রক্ষা পেয়েছে দুই শিশু। এরমধ্যে এক শিশুর বয়েস চার মাস, অন্যজন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এরমধ্যে একজন পুকুরে পরেও অক্ষত অবস্থায় বেঁচে গিয়েছে, অন্যজন প্রায় তিন কিলো উড়িয়ে এনে ফেললেও সামান্য আহত হয়েছে। এই দুটি ঘটনাকে স্থানীয়রা বলছেন, রাখে আল্লাহ মারে কে।
গত ২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ছাতকের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ও চরমহল্লা ইউনিয়নের হাতধলানি গ্রামের নাজমুল হোসেনের ৪ মাসের শিশুকন্যা জামিলা আক্তার ও উত্তর খুরমা ইউনিয়নের ছোট বিয়াই গ্রামের আবুল ফজলের ছেলে আমেরতল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র মোঃ নজরুল ইসলাম অলৌকিক ভাবে বেঁচে যায়।
নাজমুল হোসেন জানান, ওইদিনের ঘূর্ণিঝড়ে তাদের ঘরটি উড়িয়ে নিয়ে গেলে তার চারমাসের মেয়ে জামিলাকে কোলে নিয়ে বাঁশ ঝাড়ে আশ্রয় নেন। ঘূর্ণিঝড় মেয়েসহ তাকে (নাজমুল) বাড়ির পাশের হাতধলানি মসজিদের পুকুরে নিয়ে ফেলে। ঝড়ের আঘাতে তখন তিনি কিছু বুঝতে পারেনি। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে মেয়েকে হন্য হয়ে খুঁজতে থাকেন। এরপর পুকুরের পানিতে বুদ-বুদ ফোটা দেখতে পেয়ে সেখান থেকে মেয়েটিকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর প্রায় আধাঘণ্টার চেষ্টায় তার জ্ঞান ফিরে আসে। এক ঘণ্টার মাথায় মেয়েটি স্বাভাবিকভাবে বুকের দুধ পান করে। ঘরহীন নাজমুল পরিবার নিয়ে ওনদিন হাতধলানি জামে মসজিদে রাত যাপন করেন। তিনি জানিয়েছেন, কোন ধরণের ডাক্তারি চিকিৎসা ছাড়াই বর্তমানে মেয়েটি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ রয়েছে। মেয়েটির নামে যুক্ত হয়েছে ‘লাকী’।
এদিকে, উত্তর খুরমা ইউনিয়নের ছোট বিয়াই গ্রামের আমেরতল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র মো. নজরুল ইসলামের পরিবার জানায়, ঝড়ের সময় সে বাড়ির পাশে রাস্তায় ছিল। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় তাকে উড়িয়ে নিয়ে প্রায় ৩ কি:মি: দূরে নিয়ে নারকেল গাছের উপরে ফেলে। অজ্ঞান অবস্থায় হাতধলানি গ্রামের মানুষ নজরুল ইসলামকে একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। প্রায় ২ ঘন্টা পরে তার জ্ঞান ফিরলে একটি ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। নজরুল ইসলামের মাথায়, গলায় ও ডান হাতে আঘাত পেয়েছে। বর্তমানে নজরুল অসুস্থ অবস্থায় আমেরতল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণিতে ১ম সাময়িক পরীক্ষা দিচ্ছে। তার বাবা আবুল ফজল জানান, তার ছেলের মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে, কিন্তুু টাকা পয়সার অভাবে ভাল চিকিৎসা করাতে পারছেন না।