মৌলভীবাজারে ‘কোদালী ছড়া দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করার দাবীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

kodali chora.3মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজারে ‘কোদালী ছড়া দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করার দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালণ ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে দূর্ণীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ যুব ফোরাম। দূর্ণীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ যুব ফোরামের জেলা সভাপতি সৈয়দ মাইনুল ইসলাম রবিনের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক এম এ সামাদের সঞ্চালনায় আজ ২৫ এপ্রিল সোমবার সকাল ১০টায় শহরের চৌমোহনা চত্বরে অনুষ্ঠিত ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- দূর্ণীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরামের জেলা সভাপতি মাহমুদুর রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটির জেলা সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শ. ই. সরকার জবলু, সহ-সভাপতি ও মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসকাব সদস্য সচিব সাংবাদিক মতিউর রহমান, সহ-সাধারন সম্পাদক ও মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসকাব আহবায়ক সাংবাদিক মশাহিদ আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক চিনু রঞ্জন তালুকদার, মৌলভীবাজার জেলা আদর্শ সমাজকল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এসএম মুত্তাকিন আলী, দূর্ণীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ যুব ফোরামের জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন পাবেল, সাধারন সম্পাদক এম এ সামাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাইযুম, নোমান আহমদ প্রমুখসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নানা বয়সী মানুষ এ মানবন্ধনে অংশ গ্রহন করেন। বক্তারা বলেন- মৌলভীবাজার শহরের পানি নিষ্কাষনের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে কোদালী ছড়া। উজান থেকে মৌলভীবাজার শহরের মধ্য দিয়ে গিয়ে এ ছড়াটি হাইল হাওরে পতিত হয়েছে। পৌরসভা কর্তৃক পৌর এলাকায় পাকা ড্রেন নির্মানের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে কোদালী ছড়াটি ছিল দূষণমুক্ত। সেসময় কোদালী ছড়ার পানি মানুষের প্রাত্যহিক নানা কাজে ব্যবহার উপযোগী ছিল। কিন্তু, পৌরসভা কর্তৃক পাকা ড্রেন নির্মানের পর থেকে কোদালী ছড়া দূষণ শুরু হয় এবং মাত্র বছরখানেকের মধ্যেই তা সম্পূর্ণ দূষিত হয়ে যায়। বর্তমানে কোদালী ছড়াটি বিষাক্ত এবং ময়লা, আবর্জনা ও মলমূত্রের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। কোদালী ছড়ার বিষাক্ত দূর্গন্ধে এর সংলগ্ন উভয় তীরবর্তী এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের জীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। বক্তারা আরো বলেন- পৌরসভার সভ্য নাগরিকরা তাদের লেট্রিনের সেফটি ট্যাংকের পানি নিষ্কাষন এমনকি কিছু কিছু সভ্য নাগরিক সরাসরি তাদের মলমুত্র নিষ্কাষণ করছেন পৌরসভার নির্মিত পাকা ড্রেনগুলোতে। অন্যান্য ময়লা, আবর্জনা তো আছেই। কোদালী ছড়ার এ ময়লা, আবর্জনা ও মলমূত্রসহ বিষাক্ত পানি পতিত হয়ে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে জেলার মৎস্যভান্ডারখ্যাত হাইল হাওর। এছাড়াও, গতিপথের বিভিন্ন এলাকায় কোদালী ছড়ার তীর এমনকি ছড়ার অংশও চলে গেছে ভূমিখেকো/নদীখেকোদের জবরদখলে। এমতাবস্থায়, অতি জরুরী ভিত্তিতে কোদালী ছড়াকে সংস্কার ও দূষণমুক্ত করা না হলে অচীরেই তা মৌলভীবাজারবাসীর বিশেষকরে পৌরবাসীর জন্য চরম অভিশাপ হিসাবে আবির্ভূত হবে। আর, সংস্কার ও দূষণমুক্ত করতে হলে, পৌরসভার পাকা ড্রেনে ময়লা, আবর্জনা, লেট্রিনের সেফটি ট্যাংকের পানি ও মলমুত্র নিষ্কাষণ করা থেকে পৌরসভার সভ্য নাগরিকদেরকে বিরত করতে হবে। প্রয়োজনে আইন করে হলেও তা করতে হবে। এরপর জবরদখলকারীদেরকে উচ্ছেদ এবং খননের মাধ্যমে সেটেলমেন্ট নক্সা অনুযায়ী গভীর, প্রশস্থ ও তীরের বাঁধকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে কোদালী ছড়াকে সংস্কার করতে হবে। কোদালী ছড়া দূষণমুক্ত ও দখলমুক্ত করার দাবীটি মৌলভীবাজারবাসীর অনেকদিনের পুরনো ও যৌক্তিক দাবী। এ দাবী নিয়ে ইতিপূর্বেও বিভিন্ন কর্মসূচী পালণ করা হয়েছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হয়েছে একাধিকবার। মৌলভীবাজার পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বার বার আশার বাণী শোনালেও, কোদালী ছড়া দূষণমুক্ত ও দখলমুক্ত করা হয়নি আজও। তাই, মৌলভীবাজার শহরবাসী/পৌরবাসীর ও ইউনিয়ন বাসীর পরিবেশগত অস্তিতের¡ স্বার্থে সর্বোচ্চ জরুরী ভিত্তিতে কোদালী ছড়া দূষণমুক্ত, দখলমুক্ত, সংস্কার, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সংরক্ষণের ব্যাপারে সর্বোচ্চ জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধন শেষে মিছিল সহকারে গিয়ে এ ব্যাপারে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।