জৈন্তাপুরে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা: লড়াই হবে ত্রিমুখী
জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি: আগামী ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে জৈন্তাপুর উপজেলার ৬ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। এদিন উপজেলার ৬টি ইউপিতে ১ লাখ ২৭০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
উপজেলার ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, কোন কোন ই্উনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে বিপাকে পড়তে পারেন নৌকা প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের। উপজেলার ৪টি ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
বুধবার জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ঘুরে দেখা গেছে, সকল প্রার্থীই ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা নিয়ে। দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হওয়া এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ২৯ জন প্রার্থী, সাধারণ সদস্য পদে ২৮১ জন ও সংরক্ষিত আসনে ৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চিকনাগুল ইউপি: ৬নং চিকনাগুল ইউপিতে মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৪’শ ৬৭।এ ইউনিয়নে মোট ৯টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ভোট। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের মো.আলী আহমদ (নৌকা), বিএনপির আবু জাকারিয়া মো.আব্দুল বারী ( ধান), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমিনুর রশীদ (আনারস) ও জাতীয় পার্টির মো.সিদ্দিক আহমদ ( লাঙ্গল)। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছাড়া বাকি ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যি এই ইউপিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। তবে মূল লড়াই হবে বর্তমান সরকারদলীয় আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো.আলী আহমদ (নৌকা) ও বিএনপির আবু জাকারিয়া মো.আব্দুল বারীর ( ধান) এর মধ্যে।
ফতেহপুর ইউপি: ৫নং ফতেহপুর ইউপিতে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ১৪ হাজার ১শ’ ২৬ ভোট। এ ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রে অনিুষ্ঠিত হবে ভোট। মোট ৩ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এই ইউপিতে ধানের শীষ প্রতীকে মো. আব্দুর রাজ্জাক ও আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মো.রফিক আহমদের মধে মুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানান ভোটাররা। এই ইউপির অপর প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনারস প্রতীক নিয়ে হানিফ মোহাম্মদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় কিছুটা বেকায়দায় পরতে পারেন আওয়ামী লীগের রফিক আহমদ এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা।
দরবস্ত ইউপি: জৈন্তাপুর উপজেলার ৪ নং দরবস্ত ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন ৪জন।এ ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ২৪ হাজার ৮’শ ৯৮ ভোটার রয়েছেন এই ইউনিয়নে। প্রতিদন্দি চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মো.কামাল আহমদ ও বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মো.বাহারুল আলম বাহার। আনারস প্রতীকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মো.ছয়ফুল আলম। এই ইউপিতে অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতীকে মোহাম্মদ নুরুজ্জামান।
চারিকাটা ইউপি: ৩নং চারিকাটা ইউপিতে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী। এই ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ১২ হাজার ৭’শ ২০ ভোট। এই ইউনিয়নে ৯টি কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠিত হবে তারা হলেন- আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো.আবদুল হক (টেলিফোন), মো. শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল ( আনারস) ও মো. সুলতান করিম (ঘোড়া)। এই ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে অপর প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মো.আয়ুব আলী, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মো. হেলাল উদ্দিন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের মশাল প্রতীকে লাল মোহন দেব।
জৈন্তাপুর ইউপি: ২ নং জৈন্তাপুর ইউপিতে ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ১৬ হাজার ৫’শ ৬৫ ভোট। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৫জন প্রার্থী। এদের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্ধিতায় থাকবেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মো.এখলাছুর রহমান ও লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির নায়েক (অব:) আব্দুল নুর। এছাড়াও এই ইউপিতে প্রার্থী রয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকে মো. আলমগীর হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম (ঘোড়া) ও হোসেইন আহমদ (আনারস)।
নিজপাট ইউপি: জৈন্তাপুর উপজেলার ১ নং নিজপাট ইউপিতে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ১৮হাজার ৪’শ ৩৪ ভোট। এই ইউনিয়নের মোট ভোট কেন্দ্র হচ্ছে ৯টি । চেয়ারম্যান পদে এই ইউনিয়নে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মঞ্জুর এলাহী সম্রাট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মো.ইন্তাজ আলী, এছাড়া সতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন আনারস প্রতীকে আব্দুল মানিক মানিক, মটর সাইকেল প্রতীকে মো.আবদুল্লাহ, ঘোড়া প্রতীকে কবির আহমদ, টেলিফোন প্রতীকে মো. জসিম উদ্দিন ও চশমা প্রতীকে নূরুল ইসলাম। এই ৭ জন প্রার্থীর মধে মুলত প্রতিদ্বন্ধিতা হবে আওয়ামী লীগের মঞ্জুর এলাহী সম্রাট ও বিএনপির প্রার্থী মো.ইন্তাজ আলীর মধ্যে।
মঞ্জুর এলাহীর বাবা মখলিছুর রহমান দৌলা ছিলেন একসময়ের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর মৃত্যু নিয়ে রহস্য রয়েছে উপজেলাজুড়ে। এতে করে ভোটারদের সহানুভূতি তার উপর রয়েছে বলে জানা গেছে স্থানীয়দের কাছ থেকে।