ভোট এলেই প্রতিশ্রতির জোয়ার, পরে হারিকেন জ্বালিয়েও দেখা মেলে না

11গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি :: গত মঙ্গলবার প্রর্তীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী এলাকায় প্রতিশ্রুতির জোয়ারে ভাসছে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন। প্রার্থীদের নানা রকম প্রতিশ্রুতিতে সাধারণ ভোটাররাও তাল-গোল পাকিয়ে ফেলছেন। কেউ বলছেন, ভোট এলে এইরকম প্রতিশ্রুতির জোয়ার আসে। তবে ভোট গেলে যা-তাই থাকে। উন্নয়ন তখন আর হারিকেন জ্বালিয়েও দেখা যায় না। অন্যদিকে কে হচ্ছেন এসব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনিয়ে চা ষ্টল মাঠ-ঘাট হাট-বাজার ও বিভিন্ন জনসমাবেশ স্থলে চলছে জল্পনা-কল্পনা।

কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচন্ড রোদ ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রার্থীরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতী দিয়ে বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট ও দোয়া প্রার্থনায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এবার নতুন কৌশল অবলম্বন করছেন চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ৫ থেকে ১০ জন করে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে তাদের কর্মী সমর্থকরা। অন্যদিকে অভিমানি নেতাকর্মী ও ভোটারদের কাছে প্রার্থীরা নিজে গিয়ে অভিমান ভেঙ্গে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের ভোট নিজের পক্ষে নেওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, গোলাপগঞ্জ উপজেলার গোলাপগঞ্জ সদর,বাঘা, ঢাকাদক্ষিণ,ভাদেশ্বর,ফুলবাড়ি,পশ্চিম আমুড়া,লক্ষণাবন্দ,লক্ষিপাশা,শরিফগঞ্জ,
বাদেপাশা, লক্ষ্মিপাশা,বুধবারী বাজার, ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনীয় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও গুঞ্জন। ছেয়ে গেছে ছবি ও প্রতীকযুক্ত বিভিন্ন পোষ্টার, ফেসটুন ও ব্যানারে।এমনকি গাছের ডালে, ঘরের দেয়ালে, রাস্তার ধারে এবং প্রতিটি ছোটবড় মানুষের হাতে বিভিন্ন পোষ্টার।দুপুর ২ টা হতেই শুরু হয় মাইকে প্রার্থীদের পক্ষে অনেক ছন্দ মিলিয়ে প্রচারণা।
‘ভোট চাই ভোটারের, দোয়া চাই
সকলের’। ‘ভোট দেবেন একবার, সেবা
পাবেন বারবার’। ‘৭ তারিখ ভোট দিন,
মার্কা …. জেনে নিন’। ‘এদিক-সেদিক
যেদিকে যাই,…..ভাইয়ের কোনো তুলনা
নাই’। ‘৭ তারিখ শুভ দিন, …. মার্কায়
ভোট দিন’। এই রকম আরও কত ছন্দ-
স্লোগান। প্রতিটি স্লোগানের সঙ্গে
উচ্চারিত হচ্ছে প্রতীক ও প্রার্থীর নাম।

গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রর্তীক পেয়ে উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে যারা নির্বাচন করছেন তারা হলেন,

বাঘা ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে স্যায়িদ আহমদ সুহেদ (নৌকা), মো. আহাদুর রহমান কামরান (ধানের শীষ), নুরুল আমিন (খেজুর গাছ), স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. কবির আহমদ (টেবিল ফ্যান), মো. আবুল হাসনাত (অটোরিক্সা), মো. ছানা মিয়া (আনারস), জয়নাল আহমদ (টেলিফোন), আতাউর রহমান মুকিত (চশমা), কামরান আহমদ (মোটর সাইকেল), আব্দুল কায়ুম পাখি (ঘোড়া), ও ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ৮জন ও সাধারণ সদস্য ৫০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ।

গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আবুল কাশেম সেবুল (নৌকা), আশফাক আহমদ চৌধুরী (ধানের শীষ), মো. রেজওয়ান উদ্দিন চৌধুরী (অটোরিক্সা), খন্দকার নজরুল ইসলাম (ঘোড়া) মোহাম্মদ আব্দুস সামাদ (আনারস) ও হোসেন আহমদ (মোটর সাইকেল)। একই ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ৫জন ও সাধারণ সদস্য ৩০জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ও ইউনিয়নে ১,২ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য দিলারা আক্তার একক প্রার্থী হওয়া বিনা প্রতিযোগীতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

৩নং ফুলবাড়ী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হানিফ খান (নৌকা), মো. মাহবুবুর রহমান ফয়ছল (ধানের শীষ), মুজিবুর রহমান (টেলিফোন), মো. আবুল কালাম আজাদ (আনারস) ও মো. শাহিনুর রহমান (মটর সাইকেল), ও ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ৮জন, সাধারণ সদস্য ৪২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ।

৪নং লক্ষ্মিপাশা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ আহমদ (নৌকা), আরিফ আহমদ মজনু (আনারস), আবুল কালাম আজাদ (টেবিল ফ্যান), কবির আহমদ সুমন (ঘোড়া), কয়েছ আহমদ (অটোরিক্সা), মো. আব্দুর রহিম (মোটরসাইকেল), ও আব্দুল মুমিন খান (চশমা) ও ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ৮জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ।

৫নং বুধবারী বাজার ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী মো. রফিক উদ্দিন (নৌকা), মো. হেলাল উদ্দিন (ধানের শীষ), মো. খলিলুর রহমান (খেজুর গাছ), মো. ছায়দুল আলম সোহেদ (আনারস), মো. শাহ সাইফুল আলম রাজা (মটর সাইকেল), দবিরুল হক চৌধুুরী (ঘোড়া), মো. মস্তাব উদ্দিন (চশমা), মো. বিলাল উদ্দিন (টেলিফোন), ও ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৬জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৬জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

৬নং ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল আহমদ (নৌকা), মো. মনিরুজ্জামান উজ্জল (ধানের শীষ), দেলোয়ার হোসাইন (লাঙ্গল), বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মজির উদ্দিন চাকলাদার (আনারস), শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রহিম (ঘোড়া), আব্দুল ছায়াদ (চশমা), মোঃ আব্দুল হান্নান (অটোরিক্সা), রফিক আহমদ খান (মটর সাইকেল), ও আফজাল হোসেইন (টেলিফোন) ও ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১০ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ।

৭নং লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. দেলওয়ার হোসেন দিলাল (নৌকা), বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নছিরুল হক শাহিন (ধানের শীষ), মো. খলকুর রহমান (লাঙ্গল), মো. কয়েছ আহমদ (মটর সাইকেল), মো. আশরাফুউজ্জামান (ঘোড়া), মো. খালেদুর রহমান (আনারস), মো. মুহিবুর রহমান দাইয়ান (অটোরিক্সা) ও ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৭ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ।

৮নং ভাদেশ্বর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস ছালিক (নৌকা), মো. জিলাল উদ্দিন (ধানের শীষ), বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আহমদ লালা (মটর সাইকেল) ও রুমেল সিরাজ (আনারস) ও ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৮ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ।

৯নং পশ্চিম আমুড়া ইউপি তে চেয়ারম্যান প্রার্থী মঈন উদ্দিন (নৌকা), ফখর উদ্দিন সফই (ধানের শীষ), বর্তমান চেয়ারম্যান আছদ্দর আলী জালালী (ঘোড়া), এমদাদ্দুদীন সালিম (খেজুর গাছ), রুহেল আহমদ (আনারস), মো. হারুন রশিদ (টেবিল ফ্যান), আব্দুল হাছিব বুলু (অটোরিক্সা) ও জাবেদ হোসেইন (টেলিফোন)। এ ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৮জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ।

১০নং বাদেপাশা ইউপি তে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মোস্তাক আহমদ (নৌকা), সাবেক চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান (আনারস) ও মো. কয়েছ আহমদ (মশাল) ও ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৬জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ।

১১নং শরীফগঞ্জ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী এম এ মুমিত হীরা (নৌকা), সোহরাব আলী (ধানের শীষ), মো. আতিকুর রহমান (মটর সাইকেল), আমিনুর রাজা শামিম (অটোরিক্সা), মো. দুলাল আহমদ (আনারস), ও এম কবির উদ্দিন (ঘোড়া) ও ইউপিতে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ৯ জন, সাধারণ সদস্য ৩২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ।