জগন্নাথপুরে শিলাবৃষ্টিতে ১০ হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষতি
জগন্নাথপুর প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে প্রচন্ড শিলাবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর বোরো ফসলহানির ঘটনায় হাওরপারে এখন কৃষকরা কাদছেন। গত বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে হঠাৎ করে কালবৈশাখী ঝড়, শিলা বৃষ্টি ও গত কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতে ফসলি মাঠে জলাবদ্ধতার কারনে হাজার হাজার বোরো ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়া ও মইয়ার হাওর ঘুরে সরজমিনে কৃষকরা সাথে আলাপ করে জানা যায়, নলুয়ার হাওরের হালেয়ার পূর্ব থেকে সমধল নদীর উত্তর পাড় পর্যন্ত অপরদিকে ভূরাখালি, চারকালা, নলুয়া, উদুমারা, পুলিমুর, সেফটি মইয়ার হাওরের চাতল থেকে চিলাউড়া অংশ, পিংলার হাওর এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে ও জলাবদ্ধতায় ১০ হাজার হেক্টরের পাকা ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে। হাওরপারে কৃষকদের কান্না আর হাহাকার চলছে।
চিলাউড়া গ্রামের আবদুল গফুর বলেন, ‘‘তিনি নলুয়ার হাওরে ১০ হাল জমিনে আবাদ করেন। এর মধ্যে ৩ হাল জমিনের ধান কাটা হয়েছে। বাকী ৭ হাল জমিনের পাকা ধান শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে’’।
কৃষক আবদুল খালিদ বলেন, ‘‘তিনি ওই হাওরে ১০ কেদারা জমিতে চাষাবাদ করেছেন। শিলাবৃষ্টিতে জমিনের সব ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে। দরিদ্র এ কৃষক কান্না জড়িত কষ্টে বলেন, কষ্টের ফলায়িত সোনালী ফসল গোলায় তুলতে পারলাম না। আল্লাহ পাকই জানেন সংসারের যোগান কী ভাবে করব”।
ভুরাখালি গ্রামের কৃষক জীবন হোসেন , ‘‘তার ১ হাল বোরো ফসল শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব জমিতে কাচি চালানো যাবে না। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, জমিগুলোর ধান পাকতে শুরু করেছিল। দুই এক দিনের মধ্যে এসব ধান গোলায় তুলা যেত’’।
কৃষক বাবু মিয়া বলেন, ‘‘মইয়ার হাওরে তার ১ হাল পাকা সোনালী ফসল নষ্ট হয়েছে। এ সব ফসল গোলায় আর তোলা যাবেনা’’।
চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া বলেন, ‘‘আমার ইউনিয়নটি পুরোপুরি নলুয়ার হাওর ব্যাষ্টিত। একমাত্র বোরো ফসলের ওপর আমার ইউনিয়নবাসী নির্ভরশীল। তাই রাত থেকে কৃষকদের খোঁজ খবর নিচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরী করা হবে’’।
এদিকে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হাওর বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আকমল হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা ও ইউএনও মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পরিদর্শন করেছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আকমল হোসেন হাওর পরিদর্শনকালে এ প্রতিবেদক কে বলেন, ‘‘শিলাবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় নলুয়া ও মইয়ার হাওরের প্রায় ১২ হাজার হেক্টও ফসলের ক্ষতক্ষতি হয়েছে। প্রাকৃতিক বির্পযয়ে কারো কিছু করার নেই। তবু আমরা হাওরের ফসল তুলতে কৃষকদের পাশে সার্বক্ষনিক রয়েছি’’।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘‘শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার নলুয়া ও মইয়ার হাওরের ক্ষতিক্ষতি এখনও নির্নয় করা হয়নি’’।