প্রতীক বরাদ্দ : জৈন্তা ও কানাইঘাটে ৯২ চেয়ারম্যান ও ৯১৫ সদস্য পদপ্রার্থীর প্রচারণা শুরু
ফখরুল ইসলাম :: জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ২৩ এপ্রিল তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল প্রতীক বরাদ্দের দিন। গতকাল প্রতীক বরাদ্দ উপলক্ষ্যে সকাল থেকে উপজেলা দুটির রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে প্রার্থীরা তাদের সমর্থকদের নিয়ে উপস্থিত হন। একসময় লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে উপজেলা প্রশাসন চত্ত্বর। শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে দুই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। দুটি উপজেলায় ৯২ চেয়ারম্যান, ৬৭২ সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ২৪৩ মহিলা প্রার্থী প্রচারণা শুরু করেছেন।
জৈন্তাপুর প্রতিনিধি সাব্বির আহমদ জানান, জৈন্তাপুরে ৬টি ইউনিয়নে সকল পদে মনোনয়ন বাতিল ও প্রত্যাহার শেষে চেয়ারম্যান পদে ৩০জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৮১, সংরক্ষিত মহিলা পদে ৫৪ জন প্রার্থীর মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করেন।
তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ৬জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ৪ জন, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ৬, বিএনপির বিদ্রোহী ২, জাতীয় পার্টির ২ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৯ জন।
নিজপাট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মঞ্জুর এলাহী সম্রাট (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইন্তাজ আলী (ধানের শিষ), বিএনপির বিদ্রোহী আব্দুল মালিক মানিক আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী কবির আহমদ (ঘোড়া), মো. আব্দুল্লাহ (মোটরসাইকেল), মো. জসিম উদ্দিন (টেলিফোন), নুরুল ইসলাম (চশমা) প্রতীক পেয়েছেন।
জৈন্তাপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এখলাছুর রহমান (নৌকা), বিএনপি মনোনিত প্রার্থী মো. আলমগীর হোসেন (ধানের শিষ) এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ল্যান্স নায়েক (অব.) আব্দুন নুর (লাঙল) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র¿ প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম (ঘোড়া), হোসাইন আহমদ (আনারস) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন ।
চারিকাটা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আইয়ুব আলী (নৌকা), আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী মো. আব্দুল হক (টেলিফোন), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. হেলাল উদ্দিন (ধানের শিষ) এবং জাসদ মনোনীত প্রার্থী লাল মোহন দেব (মশাল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়বেন। বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল (আনারস) এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সুলতান করিম (ঘোড়া) প্রতীক পেয়েছেন।
দরবস্ত ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কামাল আহমদ (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বাহারুল আলম বাহার (ধানের শিষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুজ্জামান (চশমা), আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাম্মদ ছয়ফুল আলম (আনারস) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
ফতেহপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. রফিক আহমদ (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. আব্দুর রশিদ (ধানের শিষ) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হানিফ মোহাম্মদ (আনারস) প্রতীক পেয়েছেন।
চিকনাগুল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রাথী মো. আলী আহমদ (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এবিএম জাকারিয়া (ধানের শিষ), স্বতন্ত্র আমিনুর রশিদ (আনারস) এবং জাতীয় পাটি মনোনীত মো. সিদ্দিক আহমেদ (লাঙল) প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন।
কানাইঘাট প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম জানান, কানাইঘাট উপজেলায়ও শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর পরিবেশে ৯টি ইউনিয়নের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৯টি ইউনিয়নের নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র ৬২জন চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৯১, মহিলা সদস্যা পদে ১৮৯ জন প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল উপজেলা সদরে গিয়ে দেখা যায়, প্রার্থী ও সমর্থকরা তাদের পছন্দের প্রতীক পেয়ে আনন্দ উল্লাস করছেন। এছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দের পূর্বেই ব্যনার ও পোস্টার তৈরি করে রেখেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করার পরপরই বিভিন্ন স্থানে পোস্টার ও ব্যানারে সয়লাব হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন কর্মিবাহিনী।
নির্বাচনকে ঘিরে চেয়াম্যান ও মেম্বার পদপ্রার্থীরা ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছেন। কর্মী-সমর্থকরাও ব্যস্ত নিজ নিজ প্রার্থীর সপক্ষে প্রচারণায়। উপজেলা সদর থেকে শুরু করে প্রতিটি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আলোচনার প্রধান বিষয়, তৃতীয় দফায় দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। মুদি দোকান থেকে চা-দোকান সর্বত্র চলছে প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে কর্মী-সমর্থকদের আলোচনা-সমালোচনা।