সিলেট জেলা ছাত্রলীগের শনির দশা
ডেস্ক রিপোর্ট :: তৃতীয়বারের মতো অঘটন ঘটেছে জেলা ছাত্রলীগে ,জেলা ছাত্রলীগে টিলাগড় কেন্দ্রীক এই তিন নেতার মেয়াদকাল সুখকর হয়নি মোটেও। পংকজ হয়েছিলেন বহিষ্কার, নিপুর পুরো কমিটি বাতিল এবং রায়হান চৌধুরীর কমিটি এখন স্থগিত।
সিলেট এমসি কলেজে প্রতিপক্ষের ওপর গুলি, মোটরসাইকেল ভাঙচুর, অস্ত্রের মহড়া, এর আগের মাসে এমসি কলেজের উন্নয়ন কাজে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদফতরের সহকারি প্রকৌশলী নজরুল হাকিমকে প্রকাশ্যে হুমকি এবং বিভিন্ন সময় শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ডের প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি পংকজ পুরকায়স্থকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। টিলাগড় কেন্দ্রীক এই ছাত্রলীগ নেতার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারই এতে নষ্ট হয়ে যায়। জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে পুরো মেয়াদে থাকতে না পারা পংকজ বর্তমানে কোথাও আলোচনায় নেই।রাহুর গ্রাস কিংবা শনির দশা, যেটাই বলা হোক না কেন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগ এই গ্রাস কিংবা দশায় যেন জড়িয়ে গেছে আষ্ঠেপৃষ্ঠে। সেই পংকজ পুরকায়স্থ থেকে শুরু করে, মধ্যখানে হিরণ মাহমুদ নিপু, সর্বশেষ এম রায়হান চৌধুরী।
পংকজ পুরকায়স্থের বহিষ্কারের পর হিরণ মাহমুদ নিপুকে দেয়া হয় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পদ। কিন্তু যেই-সেই! নিপুর আমলে শনির দশা কাটাতে পারেনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগ।
পংকজের মতোই বেপরোয়া ছিলেন হিরণ মাহমুদ নিপু। একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে তার উপর ক্ষুব্দ ছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে সিপিবি-বাসদের সমাবেশে বিনা কারণে হামলা, ভাঙচুর এবং সেই হামলায় সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আহত হওয়ার ঘটনায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করে চরম ক্ষুব্দ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। পুরো মেয়াদে কমিটিতে থাকা নিপুর ভাগ্যেও জুটেনি। নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনেন তিনি।
পংকজের পর গেলেন নিপুও। কিন্তু রাহুর গ্রাস থেকে মুক্ত হতে পারেনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগ! ওই দুজনের পর সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আসেন টিলাগড় কেন্দ্রীয় আরেক নেতা, এম রায়হান চৌধুরী। ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর শাহরিয়ার আলম সামাদকে সভাপতি ও রায়হান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রলীগের ১০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি দেয়া হয়। পরে গতবছর ৪ ডিসেম্বর সেই কমিটি পূর্ণতা পায়। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার ৪ মাস পূর্ণ না হতেই কমিটি স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
এ দফায় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পাওয়া সহ-সভাপতি আলী হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুবেল খান, সমাজসেবা সম্পাদক জাকারিয়া মাহমুদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মওদুদ আহমদ আকাশসহ কতিপয় নেতার একের পর এক কুকর্মের দায়ভার এসে রায়হানের উপরও ভর্তায়। তিনি নিজেও দলীয় কোন্দলে হামলার শিকার হয়েছেন। সর্বশেষ এমসি কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ভয়াবহ গোলাগুলির ঘটনায় বর্তমান কমিটির উপর বেজায় নাখোশ হয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরই মাঝে গত শুক্রবার টিলাগড়ে ফের ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এর পরপরই ক্ষুব্দ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সিলেট জেলা কমিটি স্থগিত ঘোষণা করে।
পংকজ পুরকায়স্থকে দিয়ে যে রাহুর গ্রাসে পতিত হয়েছিল সিলেট জেলা ছাত্রলীগ, সেই রাহুর গ্রাস থেকে যেন কিছুতেই মুক্তি মিলছে না!